ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ‘নীলসাগর’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে নীলফামারীর ‘নীলসাগর’। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ছুটি আসছেন নানা বয়সের দর্শনার্থী। প্রকৃতির শ্বাসত অপরূপ-সৌন্দর্যের এই বিনোদন কেন্দ্রটিকে পর্যটন বিভাগের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

নীলফামারী শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩ দশমিক ৬০ একর জমির ওপর অবস্থিত নীলসাগর। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা এ দীঘিকে ঘিরে রয়েছে বহু উপাখ্যান ও রূপকথা। কথিত আছে তৎকালীন বিরাট রাজা নামে এক রাজার বসবাস ছিল এখানে। তার বিপুলসংখ্যক গবাদি পশু ছিল। এ গবাদি পশুগুলোকে গোসল ও পানি খাওয়ানোর জন্য একটি দীঘি খনন করেন। রাজার নামানুসারের দীঘির নামকরণ করা হয় বিরাট দীঘি। কালের বিবর্তনে বিরাট দীঘি বিন্নাদীঘি নাম ধারণ করে। ১৯৯৮ সালে এ দীঘির নামকরণ নীলফামারীর নামানুসারে নীলসাগর রাখা হয়।

শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে নীলসাগরে। এ সময় পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে নীলসাগর। পাখির কিচিরমিচির আর পানিতে ডানা ঝাপটানোর শব্দ নীরব নিথর গ্রামের নির্জনতা ভেঙে দেয়। সবুজ বৃক্ষরাজিতে চারদিক শোভিত এই নীলসাগরে অতিথি পাখির নৈসর্গিক সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগমন ঘটে অনেক দর্শনাথীর।

পাখি প্রেমিক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পরিযায়ীরা এসেছে। তারা চলমান ডিসেম্বর থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে। অতিথি পাখিদের মধ্যে অন্তত ৬৫টি প্রজাতির কয়েক হাজার পরিযায়ী রয়েছে। এই চার মাস অতিথি পাখিদের নিরাপদে রাখতে হবে। তারা যানবাহনের বিকট শব্দ, পিকনিকের হইহুল্লোড় আর লাউড স্পিকারে গান সহ্য করতে পারে না। সেদিক সহ পাখি শিকারীদের দিকে নজরদারি রাখতে হবে। সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম জানান, নীলসাগরে এখন প্রচুর অতিথি পাখি এসেছে। অতিথি পাখিদের জলকেলি আর কিচিরমিচির শব্দ শুনতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন ছুটে আসছেন অনেক পাখি প্রেমিক।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জানান, শীতের শুরু থেকে নীলসাগরসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অতিথি পাখিরা এসে ভিড় করেছে। অতিথি পাখিদের যাতে কেউ শিকার করতে না পারে এ জন্য প্রশাসনের পক্ষে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ‘নীলসাগর’

আপডেট টাইম : ০৯:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে নীলফামারীর ‘নীলসাগর’। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ছুটি আসছেন নানা বয়সের দর্শনার্থী। প্রকৃতির শ্বাসত অপরূপ-সৌন্দর্যের এই বিনোদন কেন্দ্রটিকে পর্যটন বিভাগের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

নীলফামারী শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩ দশমিক ৬০ একর জমির ওপর অবস্থিত নীলসাগর। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা এ দীঘিকে ঘিরে রয়েছে বহু উপাখ্যান ও রূপকথা। কথিত আছে তৎকালীন বিরাট রাজা নামে এক রাজার বসবাস ছিল এখানে। তার বিপুলসংখ্যক গবাদি পশু ছিল। এ গবাদি পশুগুলোকে গোসল ও পানি খাওয়ানোর জন্য একটি দীঘি খনন করেন। রাজার নামানুসারের দীঘির নামকরণ করা হয় বিরাট দীঘি। কালের বিবর্তনে বিরাট দীঘি বিন্নাদীঘি নাম ধারণ করে। ১৯৯৮ সালে এ দীঘির নামকরণ নীলফামারীর নামানুসারে নীলসাগর রাখা হয়।

শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে নীলসাগরে। এ সময় পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে নীলসাগর। পাখির কিচিরমিচির আর পানিতে ডানা ঝাপটানোর শব্দ নীরব নিথর গ্রামের নির্জনতা ভেঙে দেয়। সবুজ বৃক্ষরাজিতে চারদিক শোভিত এই নীলসাগরে অতিথি পাখির নৈসর্গিক সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগমন ঘটে অনেক দর্শনাথীর।

পাখি প্রেমিক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পরিযায়ীরা এসেছে। তারা চলমান ডিসেম্বর থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে। অতিথি পাখিদের মধ্যে অন্তত ৬৫টি প্রজাতির কয়েক হাজার পরিযায়ী রয়েছে। এই চার মাস অতিথি পাখিদের নিরাপদে রাখতে হবে। তারা যানবাহনের বিকট শব্দ, পিকনিকের হইহুল্লোড় আর লাউড স্পিকারে গান সহ্য করতে পারে না। সেদিক সহ পাখি শিকারীদের দিকে নজরদারি রাখতে হবে। সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম জানান, নীলসাগরে এখন প্রচুর অতিথি পাখি এসেছে। অতিথি পাখিদের জলকেলি আর কিচিরমিচির শব্দ শুনতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন ছুটে আসছেন অনেক পাখি প্রেমিক।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জানান, শীতের শুরু থেকে নীলসাগরসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অতিথি পাখিরা এসে ভিড় করেছে। অতিথি পাখিদের যাতে কেউ শিকার করতে না পারে এ জন্য প্রশাসনের পক্ষে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।