হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে জেলায় ৯ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা সম্পন্ন হয়েছে, যা গত মৌসুম থেকে ৩০০ হেক্টর বেশি। ফলে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রায় চেয়ে বেশি জমিতে ধান আবাদের সম্ভাবনা দেখছেন সংশিষ্টরা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বোরো ধান রোপণের আর বেশি বাকি নেই। জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলার বীজতলা তৈরি শেষ। সরকারিভাবে ধানের দাম বৃদ্ধি করায় এবার কৃষকরা আরো বেশি উজ্জীবিত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৫২০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাত ও ৯ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে, যা দিয়ে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা যাবে। এবার বোরো ধানের আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক।
কৃষকরা জানান, তারা অনেকেই ধান আবাদ করে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতির শিকার হন। কিন্তু এবার বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় পতিত ও আম বাগানের জমিতেও তারা ধানের আবাদ করছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা গেল বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন।
সাপাহার সদর ইউনিয়নের কুচিন্দা গ্রামের কৃষক খায়রুল আলম জানান, তিনি পাঁচ কাঠা জমিতে ১৮ কেজি বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই জমিতে এগুলো রোপণ করা হবে।
সদর উপজেলার রামরায়পুর গ্রামের কৃষক আজিজুল হক জানান, প্রতিবছর তিনি ৬০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। গত কয়েক বছর ধানের দাম কম থাকায় তার প্রচুর লোকসান হয়। গত বছর অসময়ের বৃষ্টিপাতে ফসলের ক্ষতি হয়। এবার তিনি ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আড়াই বিঘা জমিতে সাড়ে চার মণ ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন।
মহাদেবপুর উপজেলার চকরাজা গ্রামের কৃষক লোকমান আলী জানান, এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবেন। এজন্য বীজতলা তৈরির কাজও শেষ।
সদর উপজেলার চুনিয়াগাড়ী গ্রামের কৃষক নকিম উদ্দীন জানান, সব মিলিয়ে বোরো আবাদে প্রতি বিঘায় প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ২০ মণ ধান উৎপাদন হবে। প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে পারলেও প্রতি বিঘায় ৬ হাজার টাকা লাভ হবে।