ঢাকা ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একই বাগানে আগাম টকবরই ও মাল্টা চাষ করে তাক লাগিয়েছেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩৩৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগাম টক বরই গাছের বাগান পরিচর্যা করছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার মোসলেম উদ্দিন। সাড়ে ৪ একর উঁচু জমি। ওই জমিতে বছর দুয়েক আগে ৮৫০টি টক বরই এবং ৮৫০টি মাল্টার কলমের চারা লাগিয়েছেন চাষি মোসলেম উদ্দিন। প্রতি সারিতে একটি করে টক বরই আর একটি করে মাল্টাগাছ লাগানো হয়েছে। মাল্টার ফলনের সময় ফুরিয়েছে মাস তিনেক আগেই। এবার ওই বাগানের ১০টি মাল্টাগাছে প্রথম ফল ধরেছিল।

এখন ওই বাগানের ৮৫০টি গাছে টক বরই ধরেছে। তা-ও আবার আগাম। চাষি মোসলেম এক সপ্তাহ ধরে টক বরই বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। আগাম হওয়ায় এখন বাজারে প্রতি কেজি টক বরই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে। এক মাস পরই এক কেজির দাম হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সফল চাষি মোসলেম এবার আগাম টক বরই বিক্রি করবেন প্রায় দুই টন। এবার বরই বেচে প্রায় দুই লাখ টাকা পাবেন তিনি। এক সঙ্গে দুটি ফলের বাগান করে উপজেলার অন্যান্য চাষিদের’কে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওই বাগানে গেলে মনে হয় ‘মাল্টার সঙ্গী টক বরই’।

এ ব্যাপারে চাষি মোসলেম উদ্দিন হাওর বার্তাকে বলেন, মাল্টাই হবে এ বাগানের প্রধান ফলের গাছ। আগাম টক বরই থাকবে মাত্র পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর মাল্টাগাছ প্রসারিত হবে। তখন বরই গাছ সমূলে কেটে ফেলা হবে। মোসলেমের বিশ্বাস, আগামী পাঁচ বছরে শুধু আগাম টক বরই বিক্রি করে ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকা আয় করবেন।

সখীপুর উপজেলার কীর্ত্তনখোলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন চার বছর ধরে ৯ একর জমিতে বিচি বিহীন লেবু চাষ করে পুরো টাঙ্গাইল জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। গত বছর ২০১৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার সেরা লেবুচাষি হিসেবে মোসলেম উদ্দিন স্বীকৃতি পান।

সরজমিনে, গত ২৩ (ডিসেম্বর) বাগানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মাল্টাগাছের ফাঁকে-ফাঁকে লাগানো টক বরই গাছে প্রচুর বরই ধরেছে। তিন জন কর্মচারী বাগানের পরিচর্যা করছেন।

বাগানে বসে আগাম টক বরই চাষ প্রসঙ্গে এই প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘আমার এক আত্মীয়ের একটি টক বরই গাছ আছে। অন্যান্য বরইয়ের আগে এই বরই আগে গাছে ধরে। ভাবলাম, ওই গাছ থেকে কলম করে বড় একটা বাগান করব। এ ভাবে দুই বছর চেষ্টা করে ৮৫০টি কলমের চারা তৈরি করেছি। এ বছরই আমার কলম করা বরই গাছে প্রথম ফলন এল। এ বরই আমারই সৃষ্টি।’

মোসলেম আরও বলেন, ‘দুই বছর আগে যখন মাল্টা ও বরইয়ের ছোট চারা লাগিয়ে ছিলাম, তখন আমি ওই বাগানের জমিতে কলা চাষ করে প্রায় ৪০ হাজার টাকার কলা বিক্রি করে ছিলাম।’

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, ‘মোসলেম গত বছর ২০১৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার সেরা লেবু চাষি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। আমি মনে করি মোসলেম উদ্দিন আমার ইউনিয়নের গর্ব।’

এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভুঁইয়া হাওর বার্তাকে জানান, ‘কৃষি বিভাগের বড় কর্ম-কর্তারা সখীপুরে এলেই আমরা মোসলেমের লেবু বাগানে নিয়ে যাই।

কিন্তু এবার মোসলেম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম টক বরই চাষ করেছেন। ওই বাগানে আবার বারি-১ জাতের মাল্টার চাষও করেছেন। প্রকৃত অর্থেই মোসলেম উদ্দিন একজন সফল চাষি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

একই বাগানে আগাম টকবরই ও মাল্টা চাষ করে তাক লাগিয়েছেন

আপডেট টাইম : ০৪:২৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগাম টক বরই গাছের বাগান পরিচর্যা করছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার মোসলেম উদ্দিন। সাড়ে ৪ একর উঁচু জমি। ওই জমিতে বছর দুয়েক আগে ৮৫০টি টক বরই এবং ৮৫০টি মাল্টার কলমের চারা লাগিয়েছেন চাষি মোসলেম উদ্দিন। প্রতি সারিতে একটি করে টক বরই আর একটি করে মাল্টাগাছ লাগানো হয়েছে। মাল্টার ফলনের সময় ফুরিয়েছে মাস তিনেক আগেই। এবার ওই বাগানের ১০টি মাল্টাগাছে প্রথম ফল ধরেছিল।

এখন ওই বাগানের ৮৫০টি গাছে টক বরই ধরেছে। তা-ও আবার আগাম। চাষি মোসলেম এক সপ্তাহ ধরে টক বরই বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। আগাম হওয়ায় এখন বাজারে প্রতি কেজি টক বরই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে। এক মাস পরই এক কেজির দাম হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সফল চাষি মোসলেম এবার আগাম টক বরই বিক্রি করবেন প্রায় দুই টন। এবার বরই বেচে প্রায় দুই লাখ টাকা পাবেন তিনি। এক সঙ্গে দুটি ফলের বাগান করে উপজেলার অন্যান্য চাষিদের’কে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওই বাগানে গেলে মনে হয় ‘মাল্টার সঙ্গী টক বরই’।

এ ব্যাপারে চাষি মোসলেম উদ্দিন হাওর বার্তাকে বলেন, মাল্টাই হবে এ বাগানের প্রধান ফলের গাছ। আগাম টক বরই থাকবে মাত্র পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর মাল্টাগাছ প্রসারিত হবে। তখন বরই গাছ সমূলে কেটে ফেলা হবে। মোসলেমের বিশ্বাস, আগামী পাঁচ বছরে শুধু আগাম টক বরই বিক্রি করে ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকা আয় করবেন।

সখীপুর উপজেলার কীর্ত্তনখোলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন চার বছর ধরে ৯ একর জমিতে বিচি বিহীন লেবু চাষ করে পুরো টাঙ্গাইল জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। গত বছর ২০১৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার সেরা লেবুচাষি হিসেবে মোসলেম উদ্দিন স্বীকৃতি পান।

সরজমিনে, গত ২৩ (ডিসেম্বর) বাগানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মাল্টাগাছের ফাঁকে-ফাঁকে লাগানো টক বরই গাছে প্রচুর বরই ধরেছে। তিন জন কর্মচারী বাগানের পরিচর্যা করছেন।

বাগানে বসে আগাম টক বরই চাষ প্রসঙ্গে এই প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘আমার এক আত্মীয়ের একটি টক বরই গাছ আছে। অন্যান্য বরইয়ের আগে এই বরই আগে গাছে ধরে। ভাবলাম, ওই গাছ থেকে কলম করে বড় একটা বাগান করব। এ ভাবে দুই বছর চেষ্টা করে ৮৫০টি কলমের চারা তৈরি করেছি। এ বছরই আমার কলম করা বরই গাছে প্রথম ফলন এল। এ বরই আমারই সৃষ্টি।’

মোসলেম আরও বলেন, ‘দুই বছর আগে যখন মাল্টা ও বরইয়ের ছোট চারা লাগিয়ে ছিলাম, তখন আমি ওই বাগানের জমিতে কলা চাষ করে প্রায় ৪০ হাজার টাকার কলা বিক্রি করে ছিলাম।’

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, ‘মোসলেম গত বছর ২০১৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার সেরা লেবু চাষি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। আমি মনে করি মোসলেম উদ্দিন আমার ইউনিয়নের গর্ব।’

এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভুঁইয়া হাওর বার্তাকে জানান, ‘কৃষি বিভাগের বড় কর্ম-কর্তারা সখীপুরে এলেই আমরা মোসলেমের লেবু বাগানে নিয়ে যাই।

কিন্তু এবার মোসলেম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম টক বরই চাষ করেছেন। ওই বাগানে আবার বারি-১ জাতের মাল্টার চাষও করেছেন। প্রকৃত অর্থেই মোসলেম উদ্দিন একজন সফল চাষি।