ঢাকা ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরের একমাত্র ভরসা নৌকা বাহন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৬৬১ বার

জাকির হোসাইনঃ বর্ষা শুরু হতেই নৌকার উপর নির্ভর হয়ে পড়ে হাওরের মানুষ। বর্ষার পূর্বেই নৌকা প্রস্তুত শুরু হয়। এখন পুরো শুকনো মৌসুম । তারপর ও আশপাশের বাড়ি ও হাটবাজারে যেতে নৌকাই হাওরবাসীর একমাত্র উপায়। বর্ষায় কালে হাওরের চারদিকেই অথই পানি। মাঝখানে ভাসছে ঘরবাড়ি। সে এক অপূর্ব দৃশ্য। এসব বাড়ির প্রায়ই রয়েছে একাধিক নৌকা।

কিশোরগঞ্জ জেলা ইটনা,অষ্টগ্রাম, মিঠামইন,বাজিতপুর,নিকলী,করিমগঞ্জে উপজেলায় রয়েছে বিশাল হাওর এলাকা। বর্ষা এলে এখানের বাসিন্দাদের একমাত্র বাহন হয়ে ওঠে নৌকা। কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্ব দিকে জেলার ভাটি অঞ্চলে নৌ-যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র চামড়াবন্দর নৌকাঘাট। একদিন মিঠামইন যাওয়ার সময় এক নৌকাঘাটে নৌকার মাঝির সাথে কথা হয়।

তিনি জানান, বর্ষার এ সময়ে খাল-বিল-নদীতে পানি থৈ থৈ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই ঘাটের সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ রয়েছে। বর্ষার ভরা মৌসুমে সারাদিন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর থাকে এ নৌকাঘাটে । সকাল হতে না হতেই দূরদুরান্ত থেকে যাত্রী বাহি নৌকাসহ মালবাহী ইঞ্জিন নৌকাগুলো ঘাটে এসে ভিড়তে থাকে। আবার অপরাহ্নের দিকে সবগুলো নৌকাই যাত্রী ও মালামাল নিয়ে চামড়াঘাট ছেড়ে যায় নিজ নিজ এলাকায়। 

বর্ষাকালে এখান থেকে জেলার ভাটি অঞ্চলের সুনামগঞ্জ, ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম,নিকলী,বাজিতপুর,আজমিরীগঞ্জসহ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানেও যাতায়াত করা যায়। চলতি বছর আষাঢ় মাস পর্যন্ত হাওরে বর্ষার আশানুরূপ পানি না হওয়ায় স্বাভাবিক নৌ যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা গোলায় সংরক্ষিত বোরো ধান জেলা সদরের নিকটবর্তী চাউল কল বা আড়তগুলোতে বাজারজাত করতে পারছিলেন না। চামড়াবন্দর নৌকাঘাট হয়ে পড়েছিল প্রাণ চাঞ্চল্যহীন। কিন্তু চলতি মাসের প্রথমার্ধে নদী ও হাওরে বর্ষার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকেরা প্রতিদিন নৌপথে শত শত মানুষ কিশোরগঞ্জ সদরে বিভিন্ন কাজের স্বাথে জেলা সদরে আসেন।

ইঞ্জিন নৌকা ও ঘাট এলাকায় কর্মরত শ্রমিকেরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জনসাধারণও নৌকাযোগে প্রত্যন্ত অঞ্চলে আসা যাওয়া করছেন। অনেকেই আবার এখন হাওর এলাকায় নৌ-ভ্রমণে যাচ্ছেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে নদীর বিভিন্ন নদীর খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চামড়াবন্দর নৌকাঘাটের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। শরৎকাল আসতেই খাল-বিল ও হাওরের পানি শুকিয়ে নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নৌকাঘাট এলাকা থেকে তৈরি অস্থায়ী দোকানগুলো সরিয়ে নেয়া হলে নৌকাঘাট এলাকায় নেমে আসে নিরবতা। জেলার মড়িকান্দি বাসিন্দা চামড়াবন্দরেরর দোকানদার বলেন, ‘বর্ষায় আমাদের চিন্তা নাই। বাড়ি নৌকা আছে।’

সূত্রঃ প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক এমপির ফেইজবুক থেকে নেওয়া ছবি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরের একমাত্র ভরসা নৌকা বাহন

আপডেট টাইম : ০২:৩৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

জাকির হোসাইনঃ বর্ষা শুরু হতেই নৌকার উপর নির্ভর হয়ে পড়ে হাওরের মানুষ। বর্ষার পূর্বেই নৌকা প্রস্তুত শুরু হয়। এখন পুরো শুকনো মৌসুম । তারপর ও আশপাশের বাড়ি ও হাটবাজারে যেতে নৌকাই হাওরবাসীর একমাত্র উপায়। বর্ষায় কালে হাওরের চারদিকেই অথই পানি। মাঝখানে ভাসছে ঘরবাড়ি। সে এক অপূর্ব দৃশ্য। এসব বাড়ির প্রায়ই রয়েছে একাধিক নৌকা।

কিশোরগঞ্জ জেলা ইটনা,অষ্টগ্রাম, মিঠামইন,বাজিতপুর,নিকলী,করিমগঞ্জে উপজেলায় রয়েছে বিশাল হাওর এলাকা। বর্ষা এলে এখানের বাসিন্দাদের একমাত্র বাহন হয়ে ওঠে নৌকা। কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্ব দিকে জেলার ভাটি অঞ্চলে নৌ-যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র চামড়াবন্দর নৌকাঘাট। একদিন মিঠামইন যাওয়ার সময় এক নৌকাঘাটে নৌকার মাঝির সাথে কথা হয়।

তিনি জানান, বর্ষার এ সময়ে খাল-বিল-নদীতে পানি থৈ থৈ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই ঘাটের সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ রয়েছে। বর্ষার ভরা মৌসুমে সারাদিন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর থাকে এ নৌকাঘাটে । সকাল হতে না হতেই দূরদুরান্ত থেকে যাত্রী বাহি নৌকাসহ মালবাহী ইঞ্জিন নৌকাগুলো ঘাটে এসে ভিড়তে থাকে। আবার অপরাহ্নের দিকে সবগুলো নৌকাই যাত্রী ও মালামাল নিয়ে চামড়াঘাট ছেড়ে যায় নিজ নিজ এলাকায়। 

বর্ষাকালে এখান থেকে জেলার ভাটি অঞ্চলের সুনামগঞ্জ, ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম,নিকলী,বাজিতপুর,আজমিরীগঞ্জসহ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানেও যাতায়াত করা যায়। চলতি বছর আষাঢ় মাস পর্যন্ত হাওরে বর্ষার আশানুরূপ পানি না হওয়ায় স্বাভাবিক নৌ যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা গোলায় সংরক্ষিত বোরো ধান জেলা সদরের নিকটবর্তী চাউল কল বা আড়তগুলোতে বাজারজাত করতে পারছিলেন না। চামড়াবন্দর নৌকাঘাট হয়ে পড়েছিল প্রাণ চাঞ্চল্যহীন। কিন্তু চলতি মাসের প্রথমার্ধে নদী ও হাওরে বর্ষার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকেরা প্রতিদিন নৌপথে শত শত মানুষ কিশোরগঞ্জ সদরে বিভিন্ন কাজের স্বাথে জেলা সদরে আসেন।

ইঞ্জিন নৌকা ও ঘাট এলাকায় কর্মরত শ্রমিকেরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জনসাধারণও নৌকাযোগে প্রত্যন্ত অঞ্চলে আসা যাওয়া করছেন। অনেকেই আবার এখন হাওর এলাকায় নৌ-ভ্রমণে যাচ্ছেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে নদীর বিভিন্ন নদীর খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চামড়াবন্দর নৌকাঘাটের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। শরৎকাল আসতেই খাল-বিল ও হাওরের পানি শুকিয়ে নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নৌকাঘাট এলাকা থেকে তৈরি অস্থায়ী দোকানগুলো সরিয়ে নেয়া হলে নৌকাঘাট এলাকায় নেমে আসে নিরবতা। জেলার মড়িকান্দি বাসিন্দা চামড়াবন্দরেরর দোকানদার বলেন, ‘বর্ষায় আমাদের চিন্তা নাই। বাড়ি নৌকা আছে।’

সূত্রঃ প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক এমপির ফেইজবুক থেকে নেওয়া ছবি