হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবহমান বাংলার হাজার বছরের লোকজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার প্রত্যয়ে রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে চলছেতিন দিনের পৌষ মেলা। গান, কবিতা আর নাচের সঙ্গে নকশাদার পিঠার স্বাদ নিতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এখন নগরবাসীর পদচারণায় মুখর।
গতকাল মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক সংগঠক কামাল লোহানী। তিনি বলেন, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বারেবারে বাংলায় প্রতিরোধের হাতিয়ার হয়েছে, এ পৌষ মেলা তারই অংশ। চারপাশে যখন জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে গেছে, তখন এই পৌষ মেলার মাধ্যমে আমরা সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। বিদেশি অপসংস্কৃতি আর মানুষ হত্যাকারী পশুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের বঙ্গ সংস্কৃতির উৎসবগুলোর চর্চা বাড়াতে হবে।
পৌষ মেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুছ বলেন, নগরে বেড়ে ওঠা তরুণটি যখন ভুলে যায় তার শেকড়ের কথা, যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন বাঙালির সংস্কৃতির এই উপাদানগুলোকে আমরা এমন মেলার মাধ্যমে তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।
মেলার সহ-আয়োজক বাংলা একাডেমির ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শাহিদা খাতুন বলেন, আমরা এক অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ মুহূর্তে হাজার বছরের বাংলা ঐতিহ্য আর ইতিহাসে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। পৌষ মেলার মতো সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো অব্যাহত রাখতে হবে।
পৌষ মেলার প্রথম দিন বাঁশিতে লোকজ গানের সুরে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনার পর নিবেদন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘পৌষ এলো গো’। তারপর রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী বুলবুল ইসলাম গেয়ে শোনান ‘এলো যে শীতের বেলা’। আবৃত্তি সংগঠন প্রকাশ মঞ্চে আসে তাদের দলীয় প্রযোজনা নিয়ে। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যজন।
মেলায় বিকেলের পর্বে ছিল ঋষিজ ও ভিন্নধারার দলীয় সংগীত; বেনুকা ললিতকলা একাডেমি, জাগো আর্ট সেন্টার, নান্দনিক, নৃত্যাক্ষের দলীয় নৃত্য; শিশির রহমান, মহিউজ্জামান চৌধুরী, সুমা রাণী রায়, আরিফ রহমানসহ অনেকের একক সংগীত পরিবেশনা; রণজিৎ বাউল, মমতা দাসীর পালা গান; রেজিনা ওয়ালী লীনা, মাশকুর-এ-সাত্তার কল্লোলের একক আবৃত্তি; অভিনেতা আব্দুল আজিজের পুঁথিপাঠ এবং মুকুল নৃত্যনাট্য সংগঠনের নৃত্যনাট্য।
আজ বিকেলে গান, আবৃত্তি ও নাচের পাশাপাশি থাকবে মহাদেব সংযাত্রা ও তার দলের সংযাত্রা পরিবেশনা। আগামীকাল উৎসবের সমাপনী দিনের আয়োজনে যাত্রাপালা পরিবেশন করবে ময়মনসিংহের দল রূপবান।