ঢাকা ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:১৩:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩৫০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাটে আলু ও ধান চাষের জন্য সুনাম থাকলেও নতুন করে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে মাল্টা চাষে। জয়পুরহাট জেলায় এবার প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের সমন্তাহার গ্রামের কৃষক আলহাজ রওশন জামিল।

নিজস্ব উদ্যোগে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ চাষ শুরু করছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফল গাছে আসবে এমন প্রত্যাশা মাল্টা চাষি রওশন জামিলের।

ক্ষেতলাল উপজেলার ভাসিলা-পূরানো গোপীনাথপুর রাস্তার দক্ষিণ পাশে সমন্তাহার গ্রামের কৃষক আলহাজ রওশন জামিল ‘মনোয়ারা রাজিব এগ্রো ফার্ম’ নামে তার ফল বাগানে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ‘বারী মাল্টা-১’ চাষ শুরু করেছেন।

নিজস্ব উদ্যোগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত বাগানে গত জানুয়ারি মাসে প্রায় ৫০০টি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা গাছ রোপণ করেন।

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে মাল্টা ফল গাছে আসবে এবং জুন মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছেন, চাষি রওশন জামিল।

মাল্টা বাগানের সঙ্গে মিশ্র জাতের অন্যান্য ফলও চাষ করে ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। এ সব ফল গাছের মধ্যে আছে উন্নত জাতের গৌরমতি আমের গাছ-৩৫টি, বারী ফোর আমের গাছ-১৬টি, চায়না থ্রি লিচুর গাছ-২০টি, পেঁপের গাছ-২৫টি, কলার গাছ-৩০টি, ডালিম গাছ-১৮টি, বিভিন্ন জাতের থাই পেয়ারা গাছ-২৫০টি ও ড্রাগন গাছ-২০টি।

বর্তমানে দৃষ্টিনন্দিত মাল্টা ফল বাগান তৈরির খবর ক্ষেতলাল তথা জয়পুরহাট জেলা ছাড়িয়ে আশপাশের জেলাতেও আলোচনা হচ্ছে। অনেকে আসছেন মাল্টা বাগান দেখতে এবং পরামর্শ গ্রহণ করছেন কৃষক, বৃক্ষপ্রেমী, ফল চাষি ও বাগান মালিকেরা।

ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ মাল্টা ফল চাষি আলহাজ রওশন জামিল বলেন, আর্থিকভাবে লাভবানসহ পরিবেশ উন্নয়ন, বিষমুক্ত, ফরমালিন মুক্ত মাল্টা ফল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও টাটকা ফল নিজ এলাকাতে চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে সরবরাহের লক্ষ্যে তার নিজস্ব উদ্যোগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) জমিতে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন। তার এ বাগানে প্রতিদিন সাতজন কর্মচারী কাজ করেন। এ বাগান দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন।

‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফলের বাগান দেখতে আসা কালাই উপজেলার কাজিপাড়া মহল্লার আব্দুল মতিন বলেন, মাল্টার বাগনে দেখে খুব ভালো লাগলো। আমিও তার মতো বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর কবির বলেন, এ এলাকাতে কৃষকেরা ধান ও আলুর আবাদ করতে বেশি আগ্রহী। ধান ও আলুর চাষাবাদ ছাড়াও অনেক ধরনের ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক লাভবান হওয়া যায় সেদিকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাগান মালিককে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে কৃষক

আপডেট টাইম : ০৮:১৩:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাটে আলু ও ধান চাষের জন্য সুনাম থাকলেও নতুন করে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে মাল্টা চাষে। জয়পুরহাট জেলায় এবার প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের সমন্তাহার গ্রামের কৃষক আলহাজ রওশন জামিল।

নিজস্ব উদ্যোগে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ চাষ শুরু করছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফল গাছে আসবে এমন প্রত্যাশা মাল্টা চাষি রওশন জামিলের।

ক্ষেতলাল উপজেলার ভাসিলা-পূরানো গোপীনাথপুর রাস্তার দক্ষিণ পাশে সমন্তাহার গ্রামের কৃষক আলহাজ রওশন জামিল ‘মনোয়ারা রাজিব এগ্রো ফার্ম’ নামে তার ফল বাগানে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ‘বারী মাল্টা-১’ চাষ শুরু করেছেন।

নিজস্ব উদ্যোগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত বাগানে গত জানুয়ারি মাসে প্রায় ৫০০টি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা গাছ রোপণ করেন।

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে মাল্টা ফল গাছে আসবে এবং জুন মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছেন, চাষি রওশন জামিল।

মাল্টা বাগানের সঙ্গে মিশ্র জাতের অন্যান্য ফলও চাষ করে ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। এ সব ফল গাছের মধ্যে আছে উন্নত জাতের গৌরমতি আমের গাছ-৩৫টি, বারী ফোর আমের গাছ-১৬টি, চায়না থ্রি লিচুর গাছ-২০টি, পেঁপের গাছ-২৫টি, কলার গাছ-৩০টি, ডালিম গাছ-১৮টি, বিভিন্ন জাতের থাই পেয়ারা গাছ-২৫০টি ও ড্রাগন গাছ-২০টি।

বর্তমানে দৃষ্টিনন্দিত মাল্টা ফল বাগান তৈরির খবর ক্ষেতলাল তথা জয়পুরহাট জেলা ছাড়িয়ে আশপাশের জেলাতেও আলোচনা হচ্ছে। অনেকে আসছেন মাল্টা বাগান দেখতে এবং পরামর্শ গ্রহণ করছেন কৃষক, বৃক্ষপ্রেমী, ফল চাষি ও বাগান মালিকেরা।

ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ মাল্টা ফল চাষি আলহাজ রওশন জামিল বলেন, আর্থিকভাবে লাভবানসহ পরিবেশ উন্নয়ন, বিষমুক্ত, ফরমালিন মুক্ত মাল্টা ফল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও টাটকা ফল নিজ এলাকাতে চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে সরবরাহের লক্ষ্যে তার নিজস্ব উদ্যোগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) জমিতে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন। তার এ বাগানে প্রতিদিন সাতজন কর্মচারী কাজ করেন। এ বাগান দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন।

‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফলের বাগান দেখতে আসা কালাই উপজেলার কাজিপাড়া মহল্লার আব্দুল মতিন বলেন, মাল্টার বাগনে দেখে খুব ভালো লাগলো। আমিও তার মতো বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর কবির বলেন, এ এলাকাতে কৃষকেরা ধান ও আলুর আবাদ করতে বেশি আগ্রহী। ধান ও আলুর চাষাবাদ ছাড়াও অনেক ধরনের ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক লাভবান হওয়া যায় সেদিকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাগান মালিককে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে।