ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বৃষ্টির পানিতে সরিষা আবাদে ক্ষতি হয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩১১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিম্নচাপজনিত বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সরিষা আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অল্প খরচের বেশী মুনাফার এই ফসলটি হারিয়ে তাই কৃষকের মাথায় যেনো হাত পড়েছে। হতাশায় ভারাক্রান্ত কৃষকরা ভাবছেন কী করে এবার ইরি ফসলের খরচ যোগাবেন। কম খরচ আর শ্রমে অধিক মুনাফা হওয়ায় ভৈরবে সরিষার চাষ একটি জনপ্রিয় আবাদ। তাই প্রতিবছরই বেশ উৎসাহ নিয়ে কৃষকরা এই আবাদটি করে থাকে।

এবারও সেই আশায় এখানকার কৃষকরা এই ফসলটির চাষ করেছিল। সব কিছু ঠিক-ঠাক মতো হলে বর্তমানে মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ ঘটতো। সেই হলুদের গালিচায় মধুলোভী মৌমাছিরা থাকতো ব্যস্ত। কৃষকের দুই চোখ ভরে স্বপ্নররা নাচানাচি করতো। কিন্ত গেল সপ্তাহের বিরূপ আবহাওয়া পাল্টে দিয়েছে এখানকার সরিষার মাঠগুলোর দৃশ্যপট। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় সরিষার মাঠজুড়ে এখন ধ্বংসস্তুপ। কৃষকের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। আর সেই দৃশ্য দেখে হতাশায় নিমগ্ন এলাকার কৃষক। উৎকণ্ঠিত পরবর্তী ফসল ইরিধানের আবাদের খরচ যোগানো নিয়ে।

কৃষকরা জানায়, গত সপ্তাহে নিম্নচাপজনিত কারণে টানা তিন/চার দিনের বৃষ্টিতে তাদের সরিষা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সরিষা জমির যে ফলনগুলোতে ফুল এসেছিলো, সেগুলো বৃষ্টির কারণে ঝরে পড়েছে। আর যে চারাগুলো বাড়ন্ত অবস্থায় ছিল, সেগুলো ভেঙ্গে মাটিতে মিশে গেছে। অনেক জমিতে পানি জমে থাকায় সরিষার গাছ পঁচে গেছে। যেগুলো টিকে আছে, সেগুলোও ঢলে পড়ে হলদে হয়ে গেছে।

তারা আরও জানায়, সরিষা হলো তাদের জন্য একটি লাভজনক ফসল। বর্ষার পানি জমি থেকে সরে যাওয়ার পর খুব কম খরচে তারা সরিষার আবাদটা করে থাকেন। এতে পরিশ্রম খুব একটা করতে হয় না। সময়ও ব্যয় হয় খুব কম। এখানকার মাটি মেঘনা-ব্রক্ষ্মপুত্র বিধৌত হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো হয়। অপরদিকে ভালো বাজারদরের কারণে ফলন বিক্রি করে অধিক মুনাফাও পায় তারা। ওই মুনাফার খরচ দিয়ে তারা পরবর্তী ফসল ইরি আবাদের খরচ যোগান দিয়ে থাকেন।

কালিকাপ্রসাদ এলাকার কৃষক নবী হোসেন, জাকির মিয়া ও রহমত উল্লাহ জানান, সরিষার জমি হারিয়ে তারা এখন দুচোখে অন্ধকার দেখছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা সরকারী সহায়তা কামনা করেন।

সরিষাকে এখানকার জন্য একটি জনপ্রিয় ফসল উল্লেখ করে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র-মেঘনা নদ-নদী বিধৌত পলিমাটির কারণে এখানে সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আর লাভজনক হওয়ায় এবারও এখানে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

বাড়ন্ত অবস্থায় সরিষা জমির ক্ষয়-ক্ষতির কথা স্বীকার করে তিনি জানান, অবশিষ্ট জমির ফসল কিভাবে রক্ষা করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় সেই পরামর্শ তারা কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বৃষ্টির পানিতে সরিষা আবাদে ক্ষতি হয়েছে

আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিম্নচাপজনিত বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সরিষা আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অল্প খরচের বেশী মুনাফার এই ফসলটি হারিয়ে তাই কৃষকের মাথায় যেনো হাত পড়েছে। হতাশায় ভারাক্রান্ত কৃষকরা ভাবছেন কী করে এবার ইরি ফসলের খরচ যোগাবেন। কম খরচ আর শ্রমে অধিক মুনাফা হওয়ায় ভৈরবে সরিষার চাষ একটি জনপ্রিয় আবাদ। তাই প্রতিবছরই বেশ উৎসাহ নিয়ে কৃষকরা এই আবাদটি করে থাকে।

এবারও সেই আশায় এখানকার কৃষকরা এই ফসলটির চাষ করেছিল। সব কিছু ঠিক-ঠাক মতো হলে বর্তমানে মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ ঘটতো। সেই হলুদের গালিচায় মধুলোভী মৌমাছিরা থাকতো ব্যস্ত। কৃষকের দুই চোখ ভরে স্বপ্নররা নাচানাচি করতো। কিন্ত গেল সপ্তাহের বিরূপ আবহাওয়া পাল্টে দিয়েছে এখানকার সরিষার মাঠগুলোর দৃশ্যপট। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় সরিষার মাঠজুড়ে এখন ধ্বংসস্তুপ। কৃষকের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। আর সেই দৃশ্য দেখে হতাশায় নিমগ্ন এলাকার কৃষক। উৎকণ্ঠিত পরবর্তী ফসল ইরিধানের আবাদের খরচ যোগানো নিয়ে।

কৃষকরা জানায়, গত সপ্তাহে নিম্নচাপজনিত কারণে টানা তিন/চার দিনের বৃষ্টিতে তাদের সরিষা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সরিষা জমির যে ফলনগুলোতে ফুল এসেছিলো, সেগুলো বৃষ্টির কারণে ঝরে পড়েছে। আর যে চারাগুলো বাড়ন্ত অবস্থায় ছিল, সেগুলো ভেঙ্গে মাটিতে মিশে গেছে। অনেক জমিতে পানি জমে থাকায় সরিষার গাছ পঁচে গেছে। যেগুলো টিকে আছে, সেগুলোও ঢলে পড়ে হলদে হয়ে গেছে।

তারা আরও জানায়, সরিষা হলো তাদের জন্য একটি লাভজনক ফসল। বর্ষার পানি জমি থেকে সরে যাওয়ার পর খুব কম খরচে তারা সরিষার আবাদটা করে থাকেন। এতে পরিশ্রম খুব একটা করতে হয় না। সময়ও ব্যয় হয় খুব কম। এখানকার মাটি মেঘনা-ব্রক্ষ্মপুত্র বিধৌত হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো হয়। অপরদিকে ভালো বাজারদরের কারণে ফলন বিক্রি করে অধিক মুনাফাও পায় তারা। ওই মুনাফার খরচ দিয়ে তারা পরবর্তী ফসল ইরি আবাদের খরচ যোগান দিয়ে থাকেন।

কালিকাপ্রসাদ এলাকার কৃষক নবী হোসেন, জাকির মিয়া ও রহমত উল্লাহ জানান, সরিষার জমি হারিয়ে তারা এখন দুচোখে অন্ধকার দেখছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা সরকারী সহায়তা কামনা করেন।

সরিষাকে এখানকার জন্য একটি জনপ্রিয় ফসল উল্লেখ করে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র-মেঘনা নদ-নদী বিধৌত পলিমাটির কারণে এখানে সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আর লাভজনক হওয়ায় এবারও এখানে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

বাড়ন্ত অবস্থায় সরিষা জমির ক্ষয়-ক্ষতির কথা স্বীকার করে তিনি জানান, অবশিষ্ট জমির ফসল কিভাবে রক্ষা করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় সেই পরামর্শ তারা কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছেন।