ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ হাজার ৭শ’ ৯২ হেক্টর জমি চার দিনের টানা বৃষ্টিতে আলুবীজ পানির নিচে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁদপুরে ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে আলুর আবাদি জমিতে হাটু পানি জমেছে। বপণকৃত আলু বীজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। ফলে একদিকে আলু উৎপাদনে স্বপ্নভঙ্গ, অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা ধার দেনা করে লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকদের মাথায় হাত পরেছে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ৩ হাজার ৭শ’ ৯২ হেক্টর জমির আলু বীজ এখন পানির নীচে। চলতি মৌসুমে জেলায় আলুর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৬শ’ ৯৫ হেক্টর জমিতে। সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মতলব দক্ষিণ উপজেলায়। সেখানে ২ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। এছাড়া চাঁদপুর জেলা সদরে ৯ শ’ ২২ হেক্টর জমির আলুবীজ পানির নীচে।

এ বছর কচুয়া উপজেলায় ৩ হাজার ৯শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির পানি জমে বপণকৃত আলুর বীজ ও প্রয়োগকৃত সার সবই বিনষ্ট হয়ে গেছে। কেবলমাত্র বীজই বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকার। এছাড়া ইরি বোরো ধানের বীজতলা, ধনিয়া, মূলা, লালশাক, মরিচ, লাউ, কুমড়া ইত্যাদি শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলুর জমি থেকে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন কচুয়ার পূর্ব সহদেবপুর ইউনিয়ন বাছাঁইয়া মাঠে ৪ একর জমির আলু চাষী শাহআলম জানান, আমরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে আলু রোপন করেছি। ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে সকল কৃষকের আলুর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, পরপর গত ২ বছর কচুয়ায় আলু চাষে বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ধস নেমেছিল। আশা করেছিলাম এ বছর আলু চাষে অধিক ফলন উৎপাদনের মাধ্যমে তা পুষিয়ে নেবো। কিন্তু উপরওয়ালা মনে হয় তা হতে দিলেন না। এমনিভাবে উপজেলার প্রায় কয়েক শতাধিক কৃষক আলুর ফলন ও অর্থ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার আহসান হাবীব বলেন, এ উপজেলায় ৩ হাজার ৯ শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

কৃষক সবেমাত্র ৩ শ’ ৭৫ হেক্টর আলু চাষাবাদ করেছেন। তিন-চার দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫০ হেক্টর আলুর জমি পানিতে নিমর্জিত রয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি যাতে জমি থেকে দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করেন। চাঁদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সফিকুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ও টানা বৃষ্টির কারনে কৃষকদের আলুর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষক । এরই মধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আলাপ করেছি ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৩ হাজার ৭শ’ ৯২ হেক্টর জমি চার দিনের টানা বৃষ্টিতে আলুবীজ পানির নিচে

আপডেট টাইম : ১২:২৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁদপুরে ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে আলুর আবাদি জমিতে হাটু পানি জমেছে। বপণকৃত আলু বীজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। ফলে একদিকে আলু উৎপাদনে স্বপ্নভঙ্গ, অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা ধার দেনা করে লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকদের মাথায় হাত পরেছে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ৩ হাজার ৭শ’ ৯২ হেক্টর জমির আলু বীজ এখন পানির নীচে। চলতি মৌসুমে জেলায় আলুর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৬শ’ ৯৫ হেক্টর জমিতে। সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মতলব দক্ষিণ উপজেলায়। সেখানে ২ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। এছাড়া চাঁদপুর জেলা সদরে ৯ শ’ ২২ হেক্টর জমির আলুবীজ পানির নীচে।

এ বছর কচুয়া উপজেলায় ৩ হাজার ৯শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির পানি জমে বপণকৃত আলুর বীজ ও প্রয়োগকৃত সার সবই বিনষ্ট হয়ে গেছে। কেবলমাত্র বীজই বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকার। এছাড়া ইরি বোরো ধানের বীজতলা, ধনিয়া, মূলা, লালশাক, মরিচ, লাউ, কুমড়া ইত্যাদি শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলুর জমি থেকে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন কচুয়ার পূর্ব সহদেবপুর ইউনিয়ন বাছাঁইয়া মাঠে ৪ একর জমির আলু চাষী শাহআলম জানান, আমরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে আলু রোপন করেছি। ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে সকল কৃষকের আলুর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, পরপর গত ২ বছর কচুয়ায় আলু চাষে বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ধস নেমেছিল। আশা করেছিলাম এ বছর আলু চাষে অধিক ফলন উৎপাদনের মাধ্যমে তা পুষিয়ে নেবো। কিন্তু উপরওয়ালা মনে হয় তা হতে দিলেন না। এমনিভাবে উপজেলার প্রায় কয়েক শতাধিক কৃষক আলুর ফলন ও অর্থ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার আহসান হাবীব বলেন, এ উপজেলায় ৩ হাজার ৯ শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

কৃষক সবেমাত্র ৩ শ’ ৭৫ হেক্টর আলু চাষাবাদ করেছেন। তিন-চার দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫০ হেক্টর আলুর জমি পানিতে নিমর্জিত রয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি যাতে জমি থেকে দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করেন। চাঁদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সফিকুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ও টানা বৃষ্টির কারনে কৃষকদের আলুর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষক । এরই মধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আলাপ করেছি ।