শীতকালীন বেগুনে চাষে দ্বিগুণ আয়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতকালীন সবজিতে ছেয়ে গেছে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মাঠ। সবজি চাষে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ এখানকার কৃষকের সমৃদ্ধির দুয়ার খুলে দিয়েছে। ভালো ফলনে তাদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। আর দামও অন্য বছরের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি। উল্লেখযোগ্য সবজির মধ্যে রয়েছে করলা, বেগুন, মুলা, শিম, ঢেঁড়শ, শসা, ঝিঙে, লাউ, বাঁধাকপি, ফুলকপি। এর মধ্যে বেগুন চাষ করেই কৃষক দ্বিগুণ আয় করছেন। এখানকার উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আরও কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক স. ম. আশরাফ আলী জানান, এ অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। রংপুরের চর থেকে শুরু করে সব জায়গায় সবজি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটছে। আর এসব সবজি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন হাজারো কৃষক।
পীরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হযরত আলী সোয়া বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন। এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রায় ৯০ হাজার টাকা আসবে তার। কাউনিয়া উপজেলার নাজিরদহ এলাকার ফজল মিয়া এক একর জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন। ফলন বাম্পার হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৫ মণেরও বেশি বেগুন তিনি বিক্রি করেছেন। সব খরচ বাদে প্রায় দ্বিগুণ লাভ হবে তার। গঙ্গাচড়া উপজেলার তোতা মিয়া এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ টাকা আয় করবেন বলে তিনি আশা করছেন। এছাড়া পীরগাছার পাওটানা ও অন্নদানগরের  কৃষক দুলাল মিয়া, আবু তাহের, আমজাদ আলী, নায়েব আলী, তারা মিয়া, মালেক শাহি, আজিজল ইসলাম, নবীর হোসেন এবং নবিজল সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এদের লাভবান হতে দেখে অনেক কৃষকই অন্য ফসলের ক্ষেত ভেঙে দিয়ে শীতের সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। একইভাবে সবজি চাষ করে রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুরের কৃষকও লাভবান হচ্ছেন। এসব এলাকার ক্ষেত এখন শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে।
জানা যায়, রংপুরে উৎপাদিত সবজির প্রধান বাজার রংপুর সিটি বাজার। ভোরে বিভিন্ন এলাকার কৃষক সবজি নিয়ে আসেন। প্রতিদিন এ বাজারে ২২ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়ে থাকে। এখানে আগাম উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আরও কয়েকটি জেলার চাহিদা পূরণ করছে বলে কৃষক জানান। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রবি-খরিফ মৌসুমে এ অঞ্চলে ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয়েছে ১৯ মেট্রিক টন।
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, সবজি চাষে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ এখানকার কৃষকের সমৃদ্ধির দুয়ার খুলে দিয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে রংপুর অঞ্চলের হাজারো কৃষক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর