হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গাদের জন্য নোয়াখালীর ভাসান চর দ্বীপে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
মিয়ানমারে পুনর্বাসিত হওয়ার আগপর্যন্ত ভাসান চরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য অস্থায়ী আবাসস্থল ও দ্বীপটির নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে মঙ্গলবার একনেক সভায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এ খবরের পর বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভাসান চরকে বসবাসের অনুপযোগী ও বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে আখ্যায়িত করে সেখানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিরোধিতার কথা জানায় অ্যামনেস্টি।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গারা পালিয়ে রাখাইন সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিতে নিতে অাগস্টের আগপর্যন্ত তাদের সংখ্যা চার লাখে বেশি ছাড়িয়ে যায়। ওইসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে টেকনাফ ও উখিয়ায় সামাজিক নানা সমস্যা সৃষ্টির অভিযোগের মধ্যে গত ২৫ অাগস্ট থেকে রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর তিন মাসে আরও প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিতও হয়েছে বাংলাদেশ। তবে টেকনাফ ও উখিয়ায় স্থানীয় অধিবাসীদের সংখ্যা যেখানে ৫ লাখ ৭ হাজার, সেখানে নতুন-পুরনো মিলিয়ে দশ থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গা ওই এলাকায় আশ্রয় নেয়ায় নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি এবং পর্যটন এলাকাটির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে উদ্বেগ রয়েছে।
জোয়ারের সময় ১০ হাজার এবং ভাটার সময় ১৫ হাজার একর আয়তনের জনমানবহীন ভাসান চর মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হত। ২০১৩ সালে এ চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌযান ছাড়া সেখানে যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতেও তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। এমন একটি দ্বীপে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হলে তাদের জন্য সেখানে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো বিষয়টি কঠিন হবে বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি।