ঢাকা ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বস্তিবাসীদের দুঃসহ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩৩৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উপার্জন সংকট, অভাব-অনটন আর নোংরা পরিবেশে দুঃসহ জীবনযাপনের গ্লানি থেকে কিছুতেই মুক্তি মিলছে না রাজধানীর বস্তিবাসীদের।

অনিয়মের কারণে এই জনগোষ্ঠির সংকট মোকাবিলায় সেভাবে কাজে আসছে না সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও।

এ সমস্যা সমাধানে আবাসন প্রকল্পসহ নানাবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ চলছে বলে জানালেন সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে সংকট আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উন্নয়ন গবেষকরা।

বস্তি। ইট, কাঠ, পাথরের এই শহরের শরীরে যেনো দগদগে ক্ষত। এখানে চোখ পড়লেই যেনো ম্লান হয়ে যায় নগরসৌন্দর্য্য।

মেগা সিটি ঢাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোটোবড়ো প্রায় ৪হাজার বস্তি। এসব নোংরা ঘিঞ্জি বস্তিতে বাস করছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।

স্বাভাবিক জীবনধারণের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও আয়-ব্যয়ের সঙ্গতি বিবেচনায় বাধ্য হয়েই তারা মেনে নিয়েছেন বাস্তবতা। কোনোমতে বেঁচে থাকাটাই যেনো এসব মানুষের জীবনের চূড়ান্ত অভিলাষ।

এখানে থাকা মানুষের একজন প্রৌঢ়া বলেন, ‘পোকামাকড়ের সাথেই বসবাস, একটা ছেলে মেয়ে মানুষ করতে পারলাম না। এই পরিবেশে থেকে জীবনের কোন মূল্য আছে?’

আরেকজন বলেন, ‘কারা সুখ করে? যারা বিল্ডিং এ থাকে তারা সুখ করে।’

আরেকজন শিশুশ্রমিক বলে, ‘সকালে নাস্তা খাই, তারপর ইট ভাঙি, তারপর স্কুলে যাই।’

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ডামাডোলে অভাব-অনটনের সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় বস্তিবাসীদের।

এসব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও প্রসারিত নয়। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ভিজিডি, ভিজিএফের আওতার বাইরে রয়েছেন তারা। বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা ও প্রতিবন্ধিভাতার ব্যবস্থা থাকলেও এ নিয়ে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।

এ অবস্থায় শহরে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি বস্তিবাসীর উন্নয়নে সরকারকে আরো বেশি তৎপর হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন উন্নয়ন গবেষকরা।

বহুতল ভবন নির্মাণ করে আবাসন সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি বস্তিবাসীদের নিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা জানালো সিটি করপোরেশন।

উন্নয়ন গবেষক রাশেদা রওনক খান বলেন, ‘প্রথমত আমি মনে করি যারা অভিবাসী হচ্ছে তাদেরকে কীভাবে স্থায়ী বাসিন্দা করা যায় তা সরকারের ভাবা উচিত।’

ঢাকা দক্ষিণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, সরকার বিভিন্ন জায়গায় তাদের আবাসনের একটি চেষ্টা চালাচ্ছে। সেভাবে পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন কষ্টসাধ্য হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করেন উন্নয়ন গবেষকরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বস্তিবাসীদের দুঃসহ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে না

আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উপার্জন সংকট, অভাব-অনটন আর নোংরা পরিবেশে দুঃসহ জীবনযাপনের গ্লানি থেকে কিছুতেই মুক্তি মিলছে না রাজধানীর বস্তিবাসীদের।

অনিয়মের কারণে এই জনগোষ্ঠির সংকট মোকাবিলায় সেভাবে কাজে আসছে না সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও।

এ সমস্যা সমাধানে আবাসন প্রকল্পসহ নানাবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ চলছে বলে জানালেন সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে সংকট আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উন্নয়ন গবেষকরা।

বস্তি। ইট, কাঠ, পাথরের এই শহরের শরীরে যেনো দগদগে ক্ষত। এখানে চোখ পড়লেই যেনো ম্লান হয়ে যায় নগরসৌন্দর্য্য।

মেগা সিটি ঢাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোটোবড়ো প্রায় ৪হাজার বস্তি। এসব নোংরা ঘিঞ্জি বস্তিতে বাস করছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।

স্বাভাবিক জীবনধারণের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও আয়-ব্যয়ের সঙ্গতি বিবেচনায় বাধ্য হয়েই তারা মেনে নিয়েছেন বাস্তবতা। কোনোমতে বেঁচে থাকাটাই যেনো এসব মানুষের জীবনের চূড়ান্ত অভিলাষ।

এখানে থাকা মানুষের একজন প্রৌঢ়া বলেন, ‘পোকামাকড়ের সাথেই বসবাস, একটা ছেলে মেয়ে মানুষ করতে পারলাম না। এই পরিবেশে থেকে জীবনের কোন মূল্য আছে?’

আরেকজন বলেন, ‘কারা সুখ করে? যারা বিল্ডিং এ থাকে তারা সুখ করে।’

আরেকজন শিশুশ্রমিক বলে, ‘সকালে নাস্তা খাই, তারপর ইট ভাঙি, তারপর স্কুলে যাই।’

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ডামাডোলে অভাব-অনটনের সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় বস্তিবাসীদের।

এসব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও প্রসারিত নয়। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ভিজিডি, ভিজিএফের আওতার বাইরে রয়েছেন তারা। বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা ও প্রতিবন্ধিভাতার ব্যবস্থা থাকলেও এ নিয়ে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।

এ অবস্থায় শহরে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি বস্তিবাসীর উন্নয়নে সরকারকে আরো বেশি তৎপর হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন উন্নয়ন গবেষকরা।

বহুতল ভবন নির্মাণ করে আবাসন সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি বস্তিবাসীদের নিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা জানালো সিটি করপোরেশন।

উন্নয়ন গবেষক রাশেদা রওনক খান বলেন, ‘প্রথমত আমি মনে করি যারা অভিবাসী হচ্ছে তাদেরকে কীভাবে স্থায়ী বাসিন্দা করা যায় তা সরকারের ভাবা উচিত।’

ঢাকা দক্ষিণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, সরকার বিভিন্ন জায়গায় তাদের আবাসনের একটি চেষ্টা চালাচ্ছে। সেভাবে পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন কষ্টসাধ্য হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করেন উন্নয়ন গবেষকরা।