ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে কৃষকের অনেক ক্ষতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৪:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩১৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কৃষকদের জমি থেকে নতুন ধান ঘরে আসার সাথে সাথে বাড়িতে শুরু হয় নানা উৎসব। তৈরি করা হয় বাহারি পিঠা। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। কিন্তু এবার আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা।

বাড়িতে কোনো রকম উৎসবের আমেজ নেই তাদের। কারণ ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ধান গাছ পানিতে তলিয়ে যায়। সে সেময় ধানের শীষ বের হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে আমন মৌসুমে ধানের ফলন যেমন আশা করছিলেন তেমনটা তারা পাননি। পড়া ধান কেটে বাড়িতে এনে ঘরে তুলতে বেশ কষ্ট করতে হচ্ছে। বিঘা প্রতি আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক সোনা মণ্ডল ও পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। প্রায় সব জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলন ভালো ছিল কিন্তু মাঝে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেছে। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮/১০ মণের বেশি এবার পাবেন না বলে জানান তিনি।

উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, মাঠের পানি এখনো শুকায়নি। পানির মধ্যেই ধান কেটে রাখতে হচ্ছে। মাঠ শুকনো না হওয়ায় গাড়িতে ধান টানা যাচ্ছে না। মাথায় করে ধান বাড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এবার তিনিও ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান।

কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির আলম জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলেন। প্রথম দিকে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করে ছিলেন। কিন্তু ধান পাকার সময় টানা বৃষ্টিতে তার ২ বিঘা জমির ধান পানিতে পড়ে যায়। ওই ২ বিঘা থেকে তিনি ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান।

ঘোষনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিঘা প্রতি বিঘায় ২৫ মণ ধান ঘরে তুলতাম। কিন্তু এবার ১০/১২ মণের বেশি পাব না। বৃষ্টিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, এ বছর কালীগঞ্জে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার হেক্টর। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষকরাও বাম্পার ফলনের আশা করছিল। কিন্তু হঠাৎই এই বৃষ্টিতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি অফিসার শংকর চন্দ্র জানান, জেলার ৬ উপজেলায় এবার প্রায় ৯৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আমন ধানে এবার বাম্পার ফলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অক্টোবর মাসে টানা ২/৩ দিনের বৃষ্টিতে জেলার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে ও হালকা বাতাসে ধান গাছ পড়ে গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে কৃষকের অনেক ক্ষতি

আপডেট টাইম : ০১:১৪:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কৃষকদের জমি থেকে নতুন ধান ঘরে আসার সাথে সাথে বাড়িতে শুরু হয় নানা উৎসব। তৈরি করা হয় বাহারি পিঠা। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। কিন্তু এবার আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা।

বাড়িতে কোনো রকম উৎসবের আমেজ নেই তাদের। কারণ ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ধান গাছ পানিতে তলিয়ে যায়। সে সেময় ধানের শীষ বের হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে আমন মৌসুমে ধানের ফলন যেমন আশা করছিলেন তেমনটা তারা পাননি। পড়া ধান কেটে বাড়িতে এনে ঘরে তুলতে বেশ কষ্ট করতে হচ্ছে। বিঘা প্রতি আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক সোনা মণ্ডল ও পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। প্রায় সব জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলন ভালো ছিল কিন্তু মাঝে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেছে। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮/১০ মণের বেশি এবার পাবেন না বলে জানান তিনি।

উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, মাঠের পানি এখনো শুকায়নি। পানির মধ্যেই ধান কেটে রাখতে হচ্ছে। মাঠ শুকনো না হওয়ায় গাড়িতে ধান টানা যাচ্ছে না। মাথায় করে ধান বাড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এবার তিনিও ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান।

কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির আলম জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলেন। প্রথম দিকে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করে ছিলেন। কিন্তু ধান পাকার সময় টানা বৃষ্টিতে তার ২ বিঘা জমির ধান পানিতে পড়ে যায়। ওই ২ বিঘা থেকে তিনি ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান।

ঘোষনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিঘা প্রতি বিঘায় ২৫ মণ ধান ঘরে তুলতাম। কিন্তু এবার ১০/১২ মণের বেশি পাব না। বৃষ্টিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, এ বছর কালীগঞ্জে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার হেক্টর। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষকরাও বাম্পার ফলনের আশা করছিল। কিন্তু হঠাৎই এই বৃষ্টিতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি অফিসার শংকর চন্দ্র জানান, জেলার ৬ উপজেলায় এবার প্রায় ৯৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আমন ধানে এবার বাম্পার ফলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অক্টোবর মাসে টানা ২/৩ দিনের বৃষ্টিতে জেলার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে ও হালকা বাতাসে ধান গাছ পড়ে গেছে।