ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবনঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত বাঁশের ভেলায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৭২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত লাউয়া নদী। এ নদীতে সারা বছরই পানি থাকায় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১২ হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এই নদী পার হতে নৌকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাঁশের ভেলাই তাদের একমাত্র যোগাযোগের বাহন। আর যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। প্রতিদিনই শিশু শিক্ষার্থীরা এই ভেলার মাধ্যমেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে। নদী পারাপারের সময় এই নড়বড়ে বাঁশের ভেলা ডুবোডুবো অবস্থায় থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণই থাকেন আতঙ্কের মধ্যে।

নদীটিতে একটি ব্রিজ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীর। তবে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছে, যাতায়াতের জন্য অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় ভেলা ডুবে বই খাতা ভিজে যায়। যাতায়াতের অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়রা একটি বাঁশের ভেলার ব্যবস্থা করেছেন। আর এই বাঁশের ভেলা দিয়েই ইউনিয়নবাসী নদী পারাপার হয়ে উপজেলা ও জেলা সদরে আসেন।

জানা যায়, লাউয়া নদীর পাড়েই বীরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। ভেলায় ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি উঠলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। তখন সাঁতরিয়ে পার হতে হয় ১২০ ফুটের এই নদী। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে লাউয়া নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

পূর্ব বীরগাঁও স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি মো. জাহিনুল হক হাওর বার্তাকে বলেন, একটি ব্রিজের জন্যে ইউনিয়নের প্রায় ১২ হাজার মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একটি মাত্র নড়বড়ে বাঁশের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। নদীর উপরে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছি। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া হাওর বার্তাকে বলেন, নদীর কারণে প্রায় দিনই অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক দিন নদীর পারাপার হতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা ভিজে যায়। যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। দায়িত্বশীলদের উদাসীনতা ও জনপ্রতিনিধির তৎপরতার অভাবে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও নদীর উপরে ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে না।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর কালাম হাওর বার্তাকে জানান, লাউয়া নদীতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হবে।

ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনার কথা নিশ্চিত করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান হাওর বার্তাকে জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। আর এই প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতেই ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করা যাচ্ছে বর্তমান সরকার থাকাকালে লাউয়া নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জীবনঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত বাঁশের ভেলায়

আপডেট টাইম : ০৫:০১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত লাউয়া নদী। এ নদীতে সারা বছরই পানি থাকায় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১২ হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এই নদী পার হতে নৌকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাঁশের ভেলাই তাদের একমাত্র যোগাযোগের বাহন। আর যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। প্রতিদিনই শিশু শিক্ষার্থীরা এই ভেলার মাধ্যমেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে। নদী পারাপারের সময় এই নড়বড়ে বাঁশের ভেলা ডুবোডুবো অবস্থায় থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণই থাকেন আতঙ্কের মধ্যে।

নদীটিতে একটি ব্রিজ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীর। তবে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছে, যাতায়াতের জন্য অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় ভেলা ডুবে বই খাতা ভিজে যায়। যাতায়াতের অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়রা একটি বাঁশের ভেলার ব্যবস্থা করেছেন। আর এই বাঁশের ভেলা দিয়েই ইউনিয়নবাসী নদী পারাপার হয়ে উপজেলা ও জেলা সদরে আসেন।

জানা যায়, লাউয়া নদীর পাড়েই বীরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। ভেলায় ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি উঠলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। তখন সাঁতরিয়ে পার হতে হয় ১২০ ফুটের এই নদী। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে লাউয়া নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

পূর্ব বীরগাঁও স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি মো. জাহিনুল হক হাওর বার্তাকে বলেন, একটি ব্রিজের জন্যে ইউনিয়নের প্রায় ১২ হাজার মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একটি মাত্র নড়বড়ে বাঁশের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। নদীর উপরে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছি। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া হাওর বার্তাকে বলেন, নদীর কারণে প্রায় দিনই অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক দিন নদীর পারাপার হতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা ভিজে যায়। যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। দায়িত্বশীলদের উদাসীনতা ও জনপ্রতিনিধির তৎপরতার অভাবে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও নদীর উপরে ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে না।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর কালাম হাওর বার্তাকে জানান, লাউয়া নদীতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হবে।

ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনার কথা নিশ্চিত করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান হাওর বার্তাকে জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। আর এই প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতেই ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করা যাচ্ছে বর্তমান সরকার থাকাকালে লাউয়া নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হবে।