ঢাকা ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওর পানি যার না খেত করতাম কিলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখনো প্রস্তুত করা যাচ্ছে না বীজতলা। তাই বোরো চাষ নিয়ে আশা -নিরাশার দোলাচলে হাওর পাড়ের কৃষক। গত বছরের মতো আবারো স্বপ্ন ভাঙার দুঃস্বপ্নে তাদের এমন উদ্বিগ্নতা। বছর জুড়ে হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ধান। কিন্তু এ মৌসুমেও সময়মতো চাষাবাদ আর ফসল উত্তোলন নিয়ে বাড়ছে তাদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। কারণ বছরের এই সময়টায় বোরো ধানের বীজ বপনের কাজ শেষ হতো । বপনকৃত বীজ থেকে চারা গজাত আর চারাগাছগুলোও পাতা ছেড়ে দৃশ্যমান হতো। প্রস্তুত হতো চাষের জমিও।

আর চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন চাষিরা। কিন্তু এ মৌসুমে ভিন্ন দৃশ্য জেলার হাওর অঞ্চলের। এখনো বীজ বপনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কৃষক। হাকালুকি, কাউয়াদীঘি আর হাইল হাওর। জেলার বোরো চাষের অন্যতম তিনটি হাওরজুড়ে এখনো থৈ থৈ পানি। তাই বোরো চাষ নিয়ে গেল বছরের মতো এ মৌসুমেও কৃষকের দুশ্চিন্তা। এখনো বোরো চাষের জমি আর বীজতলা পানির দখলে। উজান এলাকায় পানি অনেকটা কমলেও হাওর এলাকায় যেই সেই।

এ কারণে সময় গড়িয়ে গেলেও এখনো বপন করা যাচ্ছে না বোরো ধানের বীজ। প্রস্তুত হচ্ছে না বোরো চাষের জমিও। এ অবস্থা চলমান থাকলে এ মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ হবে কি হবে না। আর আবাদ হলেও ফসল ঘরে উঠানো যাবে কি না। গেল মৌসুমের মত আকস্মিক বন্যায় ফসল হাতছাড়া হবে কি না। এখন এমন নানা প্রশ্নে দুশ্চিন্তায় দ্বীধাগ্রস্ত এ অঞ্চলের বোরো চাষিরা।

গেল কয়েক দিন থেকে হাওরের উজান অংশে পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে জেগে উঠেছে পানিতে নিমজ্জিত থাকা ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাট। আর ধীরগতিতে কমছে নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতা। জেলার হাওর এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর এখন এমন দৃশ্য। এখনো পরিত্রাণ নেই এই দুর্ভোগের। বোরো ধানের বীজতলায় গলা কিংবা কোমর পানি। গতকাল সরজমিনে হাওর এলাকায় গেলে বোরো চাষিরা তাদের এমন দুশ্চিন্তার কথা জানান। এ বছর অতি বৃষ্টি আর কয়েক দফা বন্যায় এমন দীর্ঘ স্থায়ী জলাবদ্ধতা। বোরো, আউশ ও আমন ধানের আবাদ হয়েছিল।

কিন্তু কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারেনি কৃষক। কয়েক দফা বন্যা আর অতি বর্ষণে ধানের মত ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবজির ক্ষেতও। চলমান বছরে এ জেলার কৃষকরা হয়েছেন নাজেহাল। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় কৃষি খেতের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষকের ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাটেরও। এবছর হঠাৎ এমন দুর্যোগে হাওর পাড়ের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্দশা।

হাওর এলাকার এমন দুর্যোগের প্রভাব পড়ে পুরো জেলায়। ব্যবসা-বাণিজ্য আর আয়-রোজগারে এখনো হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। গেল কয়েকদিন থেকে হাওরের উজান অংশের পানি কমাতে দীর্ঘস্থায়ী জালাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত মানুষ অনেকটা স্বস্তিতে ফিরেছেন। কিন্তু এখনো দুর্ভোগ তাদের পিছু ছাড়ছে না। বোরো ধানের জমি কিংবা শীতকালীন সবজি আবাদের কৃষি জমিতে এখনো গলা কিংবা কোমর পানি।

যেভাবে পানি ধীরগতিতে নামছে তাতে আরো দেড়-দু’মাস লাগবে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এতে বোরোসহ মৌসুমী কৃষি খেতের সময় চলে যাওয়ার ভয় কৃষকদের। এখন হাওরজুড়ে পানি থাকায় কর্মহীন অলস সময় পার করছেন কৃষক। চাষিরা জানালেন, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে তাদের বীজ বপনের কাজ শেষ হয়।

এমনকি বপনকৃত আগাম জাতের বীজ থেকে গজানো চারাগুলো নভেম্বর মাসের মধ্যেই অনেকটাই বড় হয়ে যায়। তখন তারা একসঙ্গে চারাগাছের যত্ন নেন ও বোরো চাষের জমিও প্রস্তুত করেন। ৪০-৫০ দিন বয়স হলেই চারা রোপণ করতে শুরু করেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে চারাগাছগুলো জমিতে রোপণ কাজ শেষ হয়ে যায়। আর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়। চাষিরা জানান সময়মতো বীজ বপন ও চাষের জমি প্রস্তুত করতে না পারায় তারা এবছর হাওর এলাকায় বোরোর আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

কারণ, চৈত্র ও বৈশাখ মাস থেকে বৃষ্টি ও বন্যা দেখা দেয়। আর বোরো খেতের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। এ মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে যে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে তাতে গত বছরের মতো বন্যায় ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। চাষিরা জানালেন আরো ১০-১৫ দিনের মধ্যে বীজ বপন করা না গেলে অধিকাংশ নিচু জমিতে এবছর বোরো চাষ করা সম্ভব হবে না।

এমনকি আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ থেকেও তারা বঞ্চিত হবেন। কাউদীঘি হাওরের অন্তহরি, রশিদপুর, আব্দুল্লাহপুর, চরকারপার, জাহিদপুর, শাহপুর, বেড়কুড়ি, পাগুলিয়া, জগৎপুর, মিরপুর, পালপুর, ফতেহপুর, খালিশপুর, ইসলামপুর, সুমারাই, কাদিপুর, চানপুর, আমুয়া, জুম্মাপুর, কান্দিগাঁও, পাড়াশিমু গ্রাম ঘুরে দেখা গেল বোরো ধানের বীজতলা ও চাষের জমি এখনো ৪-৫ ফুট পানিতে নিমজ্জিত। তবে দু’ একটি গ্রামের উজান এলাকায় অল্প পরিমাণে বীজতলায় বীজ বপনের দৃশ্য চোখে পড়ে।

ফতেহপুর গ্রামের আকবর মিয়া (৫৫),খালিশ পুরের আবদুস ছত্তার (৬২), মিরপুরের শেখ আতাউর রহমান (৫৮), মনফর মিয়া (৪৬), ইসলামপুরের মো. মনির মিয়া (৬৮)সহ অনেকেই জানালেন কাউয়াদীঘি হাওরের পাড়ের ওই গ্রামগুলোর জীবিকার একমাত্র মাধ্যম বোরো ধান চাষ। কিন্তু গত বছর তারা প্রত্যেকেই ৫-২০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন।

বন্যায় তাদের জমির সব ফসল গিলে খায়। একটি ধানও ঘরে তুলতে পারেননি। আর এবছর বোরো চাষের মৌসুম আসলেও জলাবদ্ধতার কারনে এখনো বীজ বপন করতে পারেননি। হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের করিম মিয়া (৪৮), কয়েছ আহমদ বটলাই (৪০), গোবিন্দ দাস (৫০)সহ অনেকের কাছে বোরো চাষাবাদের খোঁজখবর জানতে চাইলে তারা বললেন, ভাই পানি যার না খেত (চাষ) করতাম কিলা। এবছরও যদি খেত না হয় তা হলে না খেয়ে মরতে হবে।

মানব জমিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওর পানি যার না খেত করতাম কিলা

আপডেট টাইম : ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখনো প্রস্তুত করা যাচ্ছে না বীজতলা। তাই বোরো চাষ নিয়ে আশা -নিরাশার দোলাচলে হাওর পাড়ের কৃষক। গত বছরের মতো আবারো স্বপ্ন ভাঙার দুঃস্বপ্নে তাদের এমন উদ্বিগ্নতা। বছর জুড়ে হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ধান। কিন্তু এ মৌসুমেও সময়মতো চাষাবাদ আর ফসল উত্তোলন নিয়ে বাড়ছে তাদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। কারণ বছরের এই সময়টায় বোরো ধানের বীজ বপনের কাজ শেষ হতো । বপনকৃত বীজ থেকে চারা গজাত আর চারাগাছগুলোও পাতা ছেড়ে দৃশ্যমান হতো। প্রস্তুত হতো চাষের জমিও।

আর চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন চাষিরা। কিন্তু এ মৌসুমে ভিন্ন দৃশ্য জেলার হাওর অঞ্চলের। এখনো বীজ বপনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কৃষক। হাকালুকি, কাউয়াদীঘি আর হাইল হাওর। জেলার বোরো চাষের অন্যতম তিনটি হাওরজুড়ে এখনো থৈ থৈ পানি। তাই বোরো চাষ নিয়ে গেল বছরের মতো এ মৌসুমেও কৃষকের দুশ্চিন্তা। এখনো বোরো চাষের জমি আর বীজতলা পানির দখলে। উজান এলাকায় পানি অনেকটা কমলেও হাওর এলাকায় যেই সেই।

এ কারণে সময় গড়িয়ে গেলেও এখনো বপন করা যাচ্ছে না বোরো ধানের বীজ। প্রস্তুত হচ্ছে না বোরো চাষের জমিও। এ অবস্থা চলমান থাকলে এ মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ হবে কি হবে না। আর আবাদ হলেও ফসল ঘরে উঠানো যাবে কি না। গেল মৌসুমের মত আকস্মিক বন্যায় ফসল হাতছাড়া হবে কি না। এখন এমন নানা প্রশ্নে দুশ্চিন্তায় দ্বীধাগ্রস্ত এ অঞ্চলের বোরো চাষিরা।

গেল কয়েক দিন থেকে হাওরের উজান অংশে পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে জেগে উঠেছে পানিতে নিমজ্জিত থাকা ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাট। আর ধীরগতিতে কমছে নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতা। জেলার হাওর এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর এখন এমন দৃশ্য। এখনো পরিত্রাণ নেই এই দুর্ভোগের। বোরো ধানের বীজতলায় গলা কিংবা কোমর পানি। গতকাল সরজমিনে হাওর এলাকায় গেলে বোরো চাষিরা তাদের এমন দুশ্চিন্তার কথা জানান। এ বছর অতি বৃষ্টি আর কয়েক দফা বন্যায় এমন দীর্ঘ স্থায়ী জলাবদ্ধতা। বোরো, আউশ ও আমন ধানের আবাদ হয়েছিল।

কিন্তু কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারেনি কৃষক। কয়েক দফা বন্যা আর অতি বর্ষণে ধানের মত ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবজির ক্ষেতও। চলমান বছরে এ জেলার কৃষকরা হয়েছেন নাজেহাল। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় কৃষি খেতের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষকের ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাটেরও। এবছর হঠাৎ এমন দুর্যোগে হাওর পাড়ের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্দশা।

হাওর এলাকার এমন দুর্যোগের প্রভাব পড়ে পুরো জেলায়। ব্যবসা-বাণিজ্য আর আয়-রোজগারে এখনো হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। গেল কয়েকদিন থেকে হাওরের উজান অংশের পানি কমাতে দীর্ঘস্থায়ী জালাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত মানুষ অনেকটা স্বস্তিতে ফিরেছেন। কিন্তু এখনো দুর্ভোগ তাদের পিছু ছাড়ছে না। বোরো ধানের জমি কিংবা শীতকালীন সবজি আবাদের কৃষি জমিতে এখনো গলা কিংবা কোমর পানি।

যেভাবে পানি ধীরগতিতে নামছে তাতে আরো দেড়-দু’মাস লাগবে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এতে বোরোসহ মৌসুমী কৃষি খেতের সময় চলে যাওয়ার ভয় কৃষকদের। এখন হাওরজুড়ে পানি থাকায় কর্মহীন অলস সময় পার করছেন কৃষক। চাষিরা জানালেন, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে তাদের বীজ বপনের কাজ শেষ হয়।

এমনকি বপনকৃত আগাম জাতের বীজ থেকে গজানো চারাগুলো নভেম্বর মাসের মধ্যেই অনেকটাই বড় হয়ে যায়। তখন তারা একসঙ্গে চারাগাছের যত্ন নেন ও বোরো চাষের জমিও প্রস্তুত করেন। ৪০-৫০ দিন বয়স হলেই চারা রোপণ করতে শুরু করেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে চারাগাছগুলো জমিতে রোপণ কাজ শেষ হয়ে যায়। আর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়। চাষিরা জানান সময়মতো বীজ বপন ও চাষের জমি প্রস্তুত করতে না পারায় তারা এবছর হাওর এলাকায় বোরোর আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

কারণ, চৈত্র ও বৈশাখ মাস থেকে বৃষ্টি ও বন্যা দেখা দেয়। আর বোরো খেতের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। এ মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে যে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে তাতে গত বছরের মতো বন্যায় ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। চাষিরা জানালেন আরো ১০-১৫ দিনের মধ্যে বীজ বপন করা না গেলে অধিকাংশ নিচু জমিতে এবছর বোরো চাষ করা সম্ভব হবে না।

এমনকি আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ থেকেও তারা বঞ্চিত হবেন। কাউদীঘি হাওরের অন্তহরি, রশিদপুর, আব্দুল্লাহপুর, চরকারপার, জাহিদপুর, শাহপুর, বেড়কুড়ি, পাগুলিয়া, জগৎপুর, মিরপুর, পালপুর, ফতেহপুর, খালিশপুর, ইসলামপুর, সুমারাই, কাদিপুর, চানপুর, আমুয়া, জুম্মাপুর, কান্দিগাঁও, পাড়াশিমু গ্রাম ঘুরে দেখা গেল বোরো ধানের বীজতলা ও চাষের জমি এখনো ৪-৫ ফুট পানিতে নিমজ্জিত। তবে দু’ একটি গ্রামের উজান এলাকায় অল্প পরিমাণে বীজতলায় বীজ বপনের দৃশ্য চোখে পড়ে।

ফতেহপুর গ্রামের আকবর মিয়া (৫৫),খালিশ পুরের আবদুস ছত্তার (৬২), মিরপুরের শেখ আতাউর রহমান (৫৮), মনফর মিয়া (৪৬), ইসলামপুরের মো. মনির মিয়া (৬৮)সহ অনেকেই জানালেন কাউয়াদীঘি হাওরের পাড়ের ওই গ্রামগুলোর জীবিকার একমাত্র মাধ্যম বোরো ধান চাষ। কিন্তু গত বছর তারা প্রত্যেকেই ৫-২০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন।

বন্যায় তাদের জমির সব ফসল গিলে খায়। একটি ধানও ঘরে তুলতে পারেননি। আর এবছর বোরো চাষের মৌসুম আসলেও জলাবদ্ধতার কারনে এখনো বীজ বপন করতে পারেননি। হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের করিম মিয়া (৪৮), কয়েছ আহমদ বটলাই (৪০), গোবিন্দ দাস (৫০)সহ অনেকের কাছে বোরো চাষাবাদের খোঁজখবর জানতে চাইলে তারা বললেন, ভাই পানি যার না খেত (চাষ) করতাম কিলা। এবছরও যদি খেত না হয় তা হলে না খেয়ে মরতে হবে।

মানব জমিন