ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলু আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৯:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩০০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবার আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে আলু চাষীরা। বর্তমান সময়ে আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় চাষ খেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষকেরা। ফলে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আলুর আবাদ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২৫০, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪২৮ ও জীবননগর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছিল। তবে, চলতি মৌসুমে আলুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে নেমে আসার সম্ভাবনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রবির কুমার বিশ্বাস জানান, চলতি মৌসুমে আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় এবার আলু চাষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চাষিরা। জেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় ধান আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকরা। ফলে, জেলায় এবার আলু আবাদ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে নেমে আসার সম্ভাবনা বলে মনে করা হচ্ছে।

কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর হিমাগারে আলু রেখে ১২শ’ থেকে ১৩ শত টাকা দরে বিক্রয় করতে পেরেছি। কিন্তু, এবার সেই হিমাগারের আলু ৪৫০ থেকে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

একই কথা বললেন দামুড়হুদার নাসির উদ্দীন, তিনি প্রতিবছর ৪/৫ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করে থাকে এবার আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় তার আলুর চাষ করা হবে না।

হাউলি গ্রামের কৃষক আজিজুল হক জানান, প্রতিবছর ৩/৪ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করতেন আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় এবার সে ওই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করবেন।

দামুড়হুদা সদরের বীজ বিক্রয় কেন্দ্র সুফলা টের্ডাসের স্বত্বাধিকারী আজিজুর রহমান জানায়, এবার আলু বপনের ভরা মৌসুমে আলুর বীজ বিক্রি নেই বললেই চলে। বাজারে বিভিন্ন জাতের আলুর বীজ পাওয়া গেলেও আমাদের অঞ্চলে সাধারণত কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড জাতের আলুর আবাদ হয়ে থাকে। গত বছর ১৮শ’ টাকা মণ দরে আলুর বীজ বিক্রয় হলেও এবার সেই একই জাতের আলুর বীজ ১২শ’ টাকা থেকে ১২শ ৮০ টাকা মণ দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। এবার বীজ বিক্রয় নেয় বললেই চলে। সে হিসেবে মনে করা হচ্ছে এবার আলুর চাষ গত বছরের অর্ধেকের ও কম হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার সুফি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান জানান, বেলে দোঁআশ মাটিতে সাধারণত আলুর ফলন ভালো হয়ে থাকে। আমাদের জেলার মাটি বেলে দোঁআশ হওয়ায় এ অঞ্চলের মাটি আলু চাষের উপযুগি তার পরে ও আলুর বাজারমূল্য কম হওয়ায় ধানের বাজার ও ফলন ভালো হওয়ায় আলুর আবাদের পরিবর্তে ধান চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষকরা। ফলে এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আলু আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১১:৩৯:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবার আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে আলু চাষীরা। বর্তমান সময়ে আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় চাষ খেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষকেরা। ফলে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আলুর আবাদ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২৫০, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪২৮ ও জীবননগর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছিল। তবে, চলতি মৌসুমে আলুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে নেমে আসার সম্ভাবনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রবির কুমার বিশ্বাস জানান, চলতি মৌসুমে আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় এবার আলু চাষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চাষিরা। জেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় ধান আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকরা। ফলে, জেলায় এবার আলু আবাদ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে নেমে আসার সম্ভাবনা বলে মনে করা হচ্ছে।

কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর হিমাগারে আলু রেখে ১২শ’ থেকে ১৩ শত টাকা দরে বিক্রয় করতে পেরেছি। কিন্তু, এবার সেই হিমাগারের আলু ৪৫০ থেকে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

একই কথা বললেন দামুড়হুদার নাসির উদ্দীন, তিনি প্রতিবছর ৪/৫ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করে থাকে এবার আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় তার আলুর চাষ করা হবে না।

হাউলি গ্রামের কৃষক আজিজুল হক জানান, প্রতিবছর ৩/৪ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করতেন আলুর বাজার খারাপ হওয়ায় এবার সে ওই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করবেন।

দামুড়হুদা সদরের বীজ বিক্রয় কেন্দ্র সুফলা টের্ডাসের স্বত্বাধিকারী আজিজুর রহমান জানায়, এবার আলু বপনের ভরা মৌসুমে আলুর বীজ বিক্রি নেই বললেই চলে। বাজারে বিভিন্ন জাতের আলুর বীজ পাওয়া গেলেও আমাদের অঞ্চলে সাধারণত কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড জাতের আলুর আবাদ হয়ে থাকে। গত বছর ১৮শ’ টাকা মণ দরে আলুর বীজ বিক্রয় হলেও এবার সেই একই জাতের আলুর বীজ ১২শ’ টাকা থেকে ১২শ ৮০ টাকা মণ দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। এবার বীজ বিক্রয় নেয় বললেই চলে। সে হিসেবে মনে করা হচ্ছে এবার আলুর চাষ গত বছরের অর্ধেকের ও কম হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার সুফি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান জানান, বেলে দোঁআশ মাটিতে সাধারণত আলুর ফলন ভালো হয়ে থাকে। আমাদের জেলার মাটি বেলে দোঁআশ হওয়ায় এ অঞ্চলের মাটি আলু চাষের উপযুগি তার পরে ও আলুর বাজারমূল্য কম হওয়ায় ধানের বাজার ও ফলন ভালো হওয়ায় আলুর আবাদের পরিবর্তে ধান চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষকরা। ফলে এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।