হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোর ছয়টায় মিষ্টির দোকানটির সামনে জড়ো হয়েছে অসংখ্য শালিক। খুটে খুটে চানাচুর খাচ্ছে তারা! শেষ হয়ে এলে মাঝবয়সী দোকান মালিক ফের খাবার দিচ্ছেন পাখিদের। হাজারো শালিক পাখির ভোরের নাস্তা খাওয়ার এ দৃশ্যে মূহুর্তেই চোখ ছানাবড়া হয়ে ওঠে। দূর থেকেও শুনতে পাওয়া কিচির-মিচির শব্দে তাদের কোলাহলও অনেক আনন্দদায়ক।
পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ রোডের শ্যামল দই ভাণ্ডারের সামনের অভাবনীয় এ দৃশ্য প্রতিদিন ভোরের। বাসস্ট্যান্ডের উত্তরে পাবনা প্রেসক্লাবের বিপরীতে এ আর কর্নার মার্কেটের মিষ্টির দোকানটির মালিক সমীর কুমার ঘোষের এ প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমি কাজের খবর এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। পাখিদের খাওয়া নির্বিঘ্ন করতে ভোরের ওই সময়টাতে মার্কেটের সামনে ও রাস্তার কিছু অংশ লোহার স্ট্যান্ডে ফিতা দিয়ে ঘিরে দেওয়া থাকে।
অতো ভোরেও দোকানটির সামনে জড়ো হয়ে পাখিদের খাওয়ার দৃশ্য মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করছিলেন বেশ কয়েকজন উৎসুক পথচারী। তারাও জানালেন, শালিকদের ভোরের নেমন্তন্ন খাওয়ানো শ্যামল দই ভাণ্ডারের মালিক সমীর কুমার ঘোষের রয়েছে পাখি ও প্রকৃতির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা। সমীর হাওর বার্তাকে বলেন, ‘দোকানের অবশিষ্ট খাবার প্রতিদিন সকালে ফেলে দিলে তা পাখিরা খেয়ে যেতো। বিষয়টি প্রথম দিকে নজরে আসেনি। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো একদিন অবশিষ্ট খাবার না থাকায় দোকানের সামনে কয়েকটি শালিক পাখি এসে চিৎকার-চেচামেচি করে। বিষয়টি মনে দাগ কাটে। দোকানের কিছু চানাচুর পাখিগুলোকে খেতে দেই। তারা খেয়ে-দেয়ে মনের সুখে উড়ে যায়’।
‘খেয়াল করলাম, প্রতিদিন খোলার পর কিছু শালিক পাখি আমার দোকানের দিকে চেয়ে থাকে। চানাচুর খেতে দিলে সেগুলো খেয়ে উড়ে চলে যেতো তারা। ধীরে ধীরে পাখির সংখ্যা বাড়তে লাগলো, বাড়তে লাগলো চানাচুরের পরিমাণও’।
বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে দু’হাজারেরও বেশি শালিক পাখি ভোর ছয়টায় সমীর ঘোষের দোকানে নেমন্তন্ন খেতে আসে। তাদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১৫ কেজি চানাচুর লাগে বলেও জানান তিনি।
সমীর আরও জানান, তার পরিবারের সব সদস্যেরও রয়েছে পাখি ও প্রকৃতির প্রতি অগাধ ভালোবাসা। তিনি না থাকলে ।
বাংলানিউজ