ঢাকা ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুখ দিয়ে লিখে জেএসসি পরীক্ষা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৬৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জন্মগতভাবে ঈশ্বর কুমার সূত্রধরের হাত দুটো অবশ। পা দুটোতেও শক্তি কম। হাত দিয়ে লিখতে না পারায় ছোটবেলা থেকে মুখ দিয়ে লেখার অভ্যাস করেছে সে। আর এভাবেই মুখে কলম দিয়ে লিখে এবার সে উল্লাপাড়া হামিদা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

ঈশ্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পাইকপাড়া গ্রামের প্রফুল্ল কুমার সূত্রধরের ছেলে। সে স্থানীয় খন্দকার আবদুল মজিদ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। নিজেদের ভিটেমাটি, জমিজমা নেই বললেই চলে। শিশুবয়সেই মাকে হারিয়েছে সে। এখন বড় বোনের বাড়িতে বসবাস করে তার পরিবার। তারা তিন বোন, দুই ভাই। বাবা কাঠের কাজ করতেন। বয়স হওয়ায় আর কাজ করতে পারেন না। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। সংসারের খোঁজখবর রাখেন না তিনি।

ঈশ্বর বলে, তার স্কুলের শিক্ষকেরা তাকে বিনা বেতনে লেখাপড়া করাচ্ছেন। স্কুলের শিক্ষক ইউসুফ আলী তাকে খাতা-কলম, কাপড়চোপড় কিনে দিয়ে সহযোগিতা করছেন। ঈশ্বর বলল, হাত দুটো তার অবশ। লেখাপড়া শিখে কোনো চাকরিই তার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই সে ভবিষ্যতে আইনজীবী হতে চায়।

হামিদা স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ এবং জেএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বর প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার জন্য সব সুযোগ-সুবিধা তিনি নিশ্চিত করছেন। পরীক্ষার হলে নিজে উত্তরপত্রের পাতা ওলটাতে না পারায় অন্য কেউ তা করে দিচ্ছেন। শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত সময়ও তাকে দেওয়া হচ্ছে।

খন্দকার আবদুল মজিদ উচ্চবিদ্যালয়ের নিখিল চন্দ্র ঘোষ বলেন, ছেলেটি প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ায় ভালো। উপার্জনের কোনো লোক না থাকায় বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে সে আরও লেখাপড়া করতে পারবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মুখ দিয়ে লিখে জেএসসি পরীক্ষা

আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জন্মগতভাবে ঈশ্বর কুমার সূত্রধরের হাত দুটো অবশ। পা দুটোতেও শক্তি কম। হাত দিয়ে লিখতে না পারায় ছোটবেলা থেকে মুখ দিয়ে লেখার অভ্যাস করেছে সে। আর এভাবেই মুখে কলম দিয়ে লিখে এবার সে উল্লাপাড়া হামিদা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

ঈশ্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পাইকপাড়া গ্রামের প্রফুল্ল কুমার সূত্রধরের ছেলে। সে স্থানীয় খন্দকার আবদুল মজিদ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। নিজেদের ভিটেমাটি, জমিজমা নেই বললেই চলে। শিশুবয়সেই মাকে হারিয়েছে সে। এখন বড় বোনের বাড়িতে বসবাস করে তার পরিবার। তারা তিন বোন, দুই ভাই। বাবা কাঠের কাজ করতেন। বয়স হওয়ায় আর কাজ করতে পারেন না। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। সংসারের খোঁজখবর রাখেন না তিনি।

ঈশ্বর বলে, তার স্কুলের শিক্ষকেরা তাকে বিনা বেতনে লেখাপড়া করাচ্ছেন। স্কুলের শিক্ষক ইউসুফ আলী তাকে খাতা-কলম, কাপড়চোপড় কিনে দিয়ে সহযোগিতা করছেন। ঈশ্বর বলল, হাত দুটো তার অবশ। লেখাপড়া শিখে কোনো চাকরিই তার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই সে ভবিষ্যতে আইনজীবী হতে চায়।

হামিদা স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ এবং জেএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বর প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার জন্য সব সুযোগ-সুবিধা তিনি নিশ্চিত করছেন। পরীক্ষার হলে নিজে উত্তরপত্রের পাতা ওলটাতে না পারায় অন্য কেউ তা করে দিচ্ছেন। শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত সময়ও তাকে দেওয়া হচ্ছে।

খন্দকার আবদুল মজিদ উচ্চবিদ্যালয়ের নিখিল চন্দ্র ঘোষ বলেন, ছেলেটি প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ায় ভালো। উপার্জনের কোনো লোক না থাকায় বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে সে আরও লেখাপড়া করতে পারবে।