নারীসেনা নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ায় প্রচলিত ‘কুমারীত্ব’ পরীক্ষাকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক উল্লেখ করে তা পরিহারের দাবি উঠেছে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এ পদ্ধতিকে ‘মানবতার অধঃপতন’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
ইন্দোনেশিয়ায় সেনা নিয়োগে নারীদের ক্ষেত্রে ‘টু ফিঙ্গার’ টেস্ট প্রচলিত রয়েছে। দেশটির সেনা সদস্য হতে হলে কিংবা কোনো সেনা কর্মকর্তাকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে নারীদের এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় বলে জানায় এইচআরডব্লিউ।
এক বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলে, এ ধরণের কার্যক্রম এই মুহূর্তে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এটি একটি নিষ্ঠুর ও অমানবিক পদ্ধতি।
এদিকে, ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনী এই পদ্ধতির সমর্থন করে নিয়োগের ক্ষেত্রে তা অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, নীতিভ্রষ্ট মানুষ সেনাবাহিনীতে চলে আসলে তা বাহিনীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তবে বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়েদের এমন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনী।
এর আগে গত বছর দেশটির পুলিশ বাহিনীতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়েদের ‘কুমারীত্ব’ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়, যা ব্যাপক সমালোচিত হয়।
এইচআরডব্লিউ বলে, এই পরীক্ষা আসলে ‘লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা’। সেই সঙ্গে একজন নারীর কুমারীত্ব প্রমাণের বিষয়টিও বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রধান দ্বীপ জাভায় বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত কিংবা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এমন ১১ জন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে এইচআরডব্লিউ। তাদের সবাইকে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কুমারীত্ব পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
সাক্ষাৎকার দাতা প্রত্যেক নারীই জানান, ওই পরীক্ষা সত্যিকার অর্থেই অত্যন্ত বেদনাদায়ক, বিব্রতকর ও ক্ষত সৃষ্টিকারী।
মানবাধিকার সংগঠনটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ২০১৩ সালে সেনা নিয়োগে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক নারী বলেন, পরীক্ষার সময় নিজেকে অপদস্থ হচ্ছি বলে মনে হচ্ছিল আমার।
তার কুমারীত্ব পরীক্ষাকারী চিকিৎসক একজন পুরুষ ছিলেন জানিয়ে ওই নারী বলেন, এটা দেখে আমি প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছিলাম।