হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরৎ শেষে চারদিকে এখন হেমন্তের হাওয়া বইছে। তারপরেও প্রকৃতিতে এখনও এই রোদ এই বৃষ্টি। ঝুম বর্ষায় বিস্তীর্ণ বিল জুড়ে গোলাপি পদ্মের দেখা মিললেও এই মৌসুমেও তার সৌন্দর্যের কোনো ঘাটতি নেই। পদ্মকে বলা হয় জলজ ফুলের রাণী। আর এই ফুলের সৌন্দর্য বদলে দিয়েছে নাটোরের চিনিডাঙ্গা বিলের চিত্র । নাটোরের দর্শনীয় স্থানের নাম আসলেই মনে পড়ে রানী-ভবানীর রাজবাড়ি আর উত্তরা গণভবনের কথা। কিন্তু তার পাশাপাশি বিলের জন্যও যে এলাকাটি বিখ্যাত তা কারো অজানা নয়। বড়াইগ্রামের চিনিডাঙ্গা বিল ভ্রমণে অন্যরকম মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে পড়ে। প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠা এই পদ্ম বিল তার আপন সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। অনেকটা লোকচক্ষুর অন্তরালেই ছিল বিলটি। বিলের চারদিকে শুধু পদ্ম আর পদ্ম। তবে এখানে যে শুধু পদ্ম ফোটে তা নয়, শাপলাও ফোটে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কেউ ফুলের বিছানা পেতে আছে। আর এমন অপরূপ দৃশ্যই ভ্রমণপিপাসুদের হাতছানি দেয় বারবার। শুধু ফুলের কারণেই চিনিডাঙ্গা বিলটি ধীরে ধীরে পরিচিত হয়েছে উঠছে। ফলে ইতোমধ্যেই এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে বিলে আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থীরা। বিলের আশেপাশের সবুজ প্রান্তর আর নয়নাভিরাম গ্রামীণ জীবনের দৃশ্য মনে আনে প্রশান্তি। এখানে এলে বাতাসেও ছুঁয়ে যায় ফুলের ঘ্রাণ। চিনিডাঙ্গার এই পদ্মবিলে সকালের দিকে ফোটা পদ্ম বেশি দেখা যায়। এখানকার মানুষ প্রবল অতিথিপরায়ণ। তাই আপনি যদি বিল ঘুরে দেখতে চান তাহলে জেলেপল্লীর ডিঙি নৌকা দিয়েই ঘুরতে পারবেন। সারা বেলা ঘুরেও নৌকার ভাড়া মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা। কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত এখানে ফুল ফুটে থাকে। তবে বিলের আসল সৌন্দর্য দেখতে চাইলে আশ্বিনের মাঝামাঝি থেকে কার্তিকের মাঝামাঝি সময় এখানে আসতে হবে।
কীভাবে যাবেনঃ
রাজধানী ঢাকার যেকোনো বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনি নাটোরে আসতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৩৭০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়া কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নাটোরে আসার জন্য দৈনিক তিনটি ট্রেন রয়েছে। নাটোর শহরে এসে অটোরিকশায় করে বড়াইগ্রাম উপজেলার চিনিডাঙ্গার বিল পর্যন্ত যেতে পারবেন ৩০ থেকে ৪০ টাকা ভাড়ায়।
চিনিডাঙ্গার এই পদ্মবিল নাটোর জেলা সদর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে। এই বিল ছাড়াও নাটোরে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় চলনবিল। সেখানেও নৌকায় চড়ে উপভোগ করতে পারবেন পদ্ম ফুলের এমন মোহনীয় সৌন্দর্য। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ প্রদক্ষেপ নিলে অন্তরালে থাকা চিনিডাঙ্গা বিলের সৌন্দর্যও বিকশিত হয়ে উঠতে পারে পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে।