খাল দখলমুক্ত না হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি অসম্ভব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খাল দখলমুক্ত না হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘রাজধানীর জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হচ্ছে চিহ্নিত খালগুলি বেদখল হয়ে যাওয়া। এসব খাল উদ্ধার করতে না পারলে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দেয়া অসম্ভব। খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলতে থাকবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর চাঁনখারপুলে অত্যাধুনিক মেডিকেল মার্কেট কমপ্লেক্স উদ্বোধন এবং জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীর জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ খালগুলো বেদখল হয়ে যাওয়া, কামরাঙ্গীচরের বালুনগর খাল উদ্ধারের মধ্যে দিয়ে এই অবৈধ দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হলো।

জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের জনসাধারণ গ্যাস সংকট, জলবদ্ধতা, যানজট, পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা মেয়রের কাছে তুলে ধরেন। মেয়র তাৎক্ষণিকভাবে কিছু সমস্যার সমাধান দেন। আবার কোনো কোনো সমস্যার সমাধানে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন বলেন, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য দ্রুত খালগুলোকে দখলমুক্ত করা হবে। এই শহরকে বাসযোগ্য করতে এলাকাবাসীর সহোযোগিতায়, ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং ওয়াসার সমন্বয়ে খালগুলো দখলমুক্ত করা হবে। যে খালগুলোতে আইনি জটিলতা নাই সেগুলো যতখন পর্যন্ত অবৈধ দখলমুক্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।

সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাল ছিল অনেকগুলো। এর মধ্যে চিহ্নিত খাল আছে ছয়টি। আরও দু-চারটি খাল বাড়তে পারে। খালগুলি এমনভাবে দখল হয়েছে, বিল্ডিং হয়েছে। কোথায় খাল ছিল তা এখন বোঝারও উপায় নাই।

মেয়র বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এই শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কারণ ভূমিদস্যুরা খাল দখল করে রেখেছে। তবে খাল উদ্ধার শুরু হয়েছে। খালগুলোর মালিকানায় আইনি ঝামেলা নেই বলেই উদ্ধার কাজ চলবে। এর জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা চাই। অবৈধ জবরদখল সমস্ত খাল উদ্ধার করে শহরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত রাখবো।

জলবদ্ধতা নিরসনে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, গত আড়াই বছরে আমরা অনেক রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও সংস্কার করেছি। ঢাকার উন্নয়নের বড় অন্তরায় জলবদ্ধতা। এবছর এপ্রিল থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সাধারণত বৃষ্টি শুরু হয় জুন-জুলাই মাসে। আবহাওয়ার বৈরিতার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, একটা সময় সিটি করপোরেশন সরকারি সম্পত্তি লুটপাটের জায়গায় ছিলো। এখন আমরা রাতদিন কাজ করছি। নগরীর যেসব খেলার মাঠ, পার্ক দখল হয়েছিলো সেগুলো উদ্ধার করছি। এই মাঠ-পার্কগুলো উন্নয়নে ‘জলসবুজে ঢাকা’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। আগামী বছর প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।

মেয়র বলেন, বর্জ্য পরিষ্কারে বিষয়ে নগরবাসীর সচেতনতা প্রয়োজন। রাস্তা-ঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এখন বিভিন্ন বর্জ্য পড়ে থাকে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঢাকাকে পরিষ্কার রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে ঢাকা পরিষ্কার রাখা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। নিজেরা বদলালে শহর বদলাবে।

২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উমর বিন আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ সালাউদ্দিন, তিতাস গ্যাস, ওয়াসা কর্মকর্তারাসহ সর্বস্তরের মানুষ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর