ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরো একটি অনন্য অর্জন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালি জাতির জন্য এ এক অনন্য অর্জন।

বাঙালির মহান নেতা, রাজনীতির মহাকবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯ মিনিটের বক্তৃতাটি ছিল তাত্ক্ষণিক। জনসমুদ্রের মঞ্চ কাঁপিয়ে যে অমর কাব্য সেদিন তিনি শুনিয়েছিলেন, তাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল বাঙালি জাতি। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। কী ছিল না সেদিনের সেই বক্তৃতায়। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমরনীতির সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন তিনি তাঁর সেই অনুপম বক্তৃতায়। কবিরা যেমন মাত্রা মেপে, সঠিক শব্দচয়নে একটি কবিতা লেখেন, তেমনি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ যেন ঐশ্বরিকভাবেই উচ্চারিত হয়েছিল। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন তাঁর দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ের কথা। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাঙালিদের হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের ২৫ বছরের শাসনকালে বাংলা ও বাঙালির বঞ্চনার কথা তুলে আনেন তিনি নিখুঁত উচ্চারণে। তাল-লয়-ছন্দ সব কিছু মিলিয়ে মানুষের হৃদয়ে গেঁথে যাওয়ার মতো সেই ভাষণ বাঙালিকে নতুন মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল।

বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের নেতা। আমাদের দীর্ঘ সংগ্রামের ভেতর দিয়ে অর্জন এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই সংগ্রামে তিনি ছিলেন নেতা। ৭ই মার্চের বক্তৃতায় তিনি বাঙালির দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। তাঁর অমোঘ উচ্চারণ, ‘বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি, ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করে ১০ বছর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছিল। ’ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাঁর দূরদর্শিতাও ছিল অসাধারণ। তিনি জানতেন, পাকিস্তানিরা এত সহজে বাঙালিকে ক্ষমতা দেবে না। তাই তিনি বাঙালিকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন। জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি উচ্চারণ করলেন, ‘…প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে…। ’ মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে যায় সেদিনই।

চরম সংকটের দিনে জাতি নির্দেশনা পেয়েছিল ইতিহাসের বরপুত্রের কাছ থেকে। তাঁর জাদুকরী সম্মোহনী শক্তিই বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল গুলির সামনে বুক পেতে দিতে। তিনি বরাভয় দিয়েছিলেন বলেই ভয় পায়নি জাতি। ইতিহাসের সেই বরপুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির জনক। আজও তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস। আমাদের সত্তায় মিশে আছেন তিনি। বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতির পর এই ৭ই মার্চের ভাষণ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আরো একটি অনন্য অর্জন

আপডেট টাইম : ০৩:৪৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালি জাতির জন্য এ এক অনন্য অর্জন।

বাঙালির মহান নেতা, রাজনীতির মহাকবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯ মিনিটের বক্তৃতাটি ছিল তাত্ক্ষণিক। জনসমুদ্রের মঞ্চ কাঁপিয়ে যে অমর কাব্য সেদিন তিনি শুনিয়েছিলেন, তাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল বাঙালি জাতি। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। কী ছিল না সেদিনের সেই বক্তৃতায়। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমরনীতির সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন তিনি তাঁর সেই অনুপম বক্তৃতায়। কবিরা যেমন মাত্রা মেপে, সঠিক শব্দচয়নে একটি কবিতা লেখেন, তেমনি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ যেন ঐশ্বরিকভাবেই উচ্চারিত হয়েছিল। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন তাঁর দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ের কথা। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাঙালিদের হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের ২৫ বছরের শাসনকালে বাংলা ও বাঙালির বঞ্চনার কথা তুলে আনেন তিনি নিখুঁত উচ্চারণে। তাল-লয়-ছন্দ সব কিছু মিলিয়ে মানুষের হৃদয়ে গেঁথে যাওয়ার মতো সেই ভাষণ বাঙালিকে নতুন মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল।

বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের নেতা। আমাদের দীর্ঘ সংগ্রামের ভেতর দিয়ে অর্জন এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই সংগ্রামে তিনি ছিলেন নেতা। ৭ই মার্চের বক্তৃতায় তিনি বাঙালির দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। তাঁর অমোঘ উচ্চারণ, ‘বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি, ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করে ১০ বছর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছিল। ’ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাঁর দূরদর্শিতাও ছিল অসাধারণ। তিনি জানতেন, পাকিস্তানিরা এত সহজে বাঙালিকে ক্ষমতা দেবে না। তাই তিনি বাঙালিকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন। জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি উচ্চারণ করলেন, ‘…প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে…। ’ মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে যায় সেদিনই।

চরম সংকটের দিনে জাতি নির্দেশনা পেয়েছিল ইতিহাসের বরপুত্রের কাছ থেকে। তাঁর জাদুকরী সম্মোহনী শক্তিই বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল গুলির সামনে বুক পেতে দিতে। তিনি বরাভয় দিয়েছিলেন বলেই ভয় পায়নি জাতি। ইতিহাসের সেই বরপুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির জনক। আজও তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস। আমাদের সত্তায় মিশে আছেন তিনি। বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতির পর এই ৭ই মার্চের ভাষণ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।