হাওর বার্তা ডেস্কঃ নাম আহম্মদ আলী, বয়স পঁচাত্তর বছর দুই মাস। পরিবারে রয়েছে আটজন সদস্য। ছেলে মাহাবুল ইসলাম (২৪) রং মিস্ত্রীর যোগালদারের কাজ করে সামান্য যা উপার্জন করতো তাতে তারা স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-ছেলে বউ ও এক নাতিকে নিয়ে ৫ জনের সংসারই চলতো না। তার উপর দুই সন্তানসহ বিধবা মেয়ে বাড়িতে উঠেছেন। তাই এই বৃদ্ধ বয়সেও ঘরে বসে না থেকে নেমে পড়েছেন ঝাড়ু ব্যবসায়।
বিধবা মেয়েকে সাথে নিয়ে ঘরে বসে তিনি ঝাড়ু তৈরি করেন এবং সেই ঝাড়ু মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামে পায়ে হেঁটে তিনি ফেরি করে বিক্রি করেন। এই ঝাড়ু বিক্রিতে তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন দীর্ঘদিন ধরে।
আহম্মদ আলী নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরশহরের সীমানাসংলগ্ন লালপুরে কদিমচিলান ইউনিয়নের গোধড়া গ্রামের মৃত বাছেদ আলীর ছেলে। যুবক বয়সে তিনি দিনমজুরী করেছেন। কিন্তু বয়সের ভারে ভারী কাজ করতে পারেন না। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ছেলের সাথেই থাকতেন। কিন্তু ছেলের একার উপার্জনে সংসার চালাতে হিমশিম খায় বলে কিছু একটা করতেই হবে তাকে। আর সে কারণেই নিজ বুদ্ধিতে গ্রামে গ্রামে ছন ক্রয় করে তা কিছুদিন শুকায়। তারপর বাড়িতে বসে ঝাড়ু তৈরি করেন তিনি। এতে সহযোগিতা করেন বিধবা মেয়ে ও ছেলের বউ। আহম্মদ আলী গ্রামে গ্রামে ঘুরে সে ঝাড়ু বিক্রি করেন।
আহম্মদ আলী জানান, প্রতিটি ঝাড়ু তিনি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করেন। এতে প্রতিদিন প্রায় দুশ থেকে তিনশ টাকা আয় করেন। তিনি আরও জানান, ছেলের সামান্য উপার্জনের সাথে তার ঝাড়ু বিক্রির আয় যোগ হওয়ায় আটজনের সংসার কোনরকম চলছে। তবে বয়সের কারণে মাঝেমধ্যে বেশ অসুস্থ থাকতে হয়। সেখানে অনেক টাকার ঔষধ কিনতে হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য দীর্ঘদিন মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে ঘুরেছি। কিন্তু কপালে বয়স্ক কার্ড জুটে নাই। তিনি তার জন্য একটি বয়স্ক কার্ড ও বিধবা মেয়েটির জন্য একটা বিধবা কার্ড পাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে কদমচিলান ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম রেজা মাস্টার বলেন, আহম্মদ আলী ও তার বিধবা মেয়ের জন্য বয়স্ক ও বিধবা কার্ড প্রদানসহ সরকারি প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।