ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেমন্ত আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৭
  • ৫৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরৎ ঋতুর বিদায়। হেমন্ত দরজায় এসে কড়া নাড়ছে। এর পরেই আসবে শীত। যদিও ইতিমধ্যে একটু আধটু কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। রাতের শেষ বেলায়ও শীত পড়ছে বেশ। প্রকৃতির যখন এ অবস্থা। ঠিক তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ এ আঙ্গিনার লেকগুলোতে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। এসব পাখিরা লাল শাপলার জলে কিচিরমিচির ডাকছে, আবার ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় শাপলার মাঝে, একদল ওড়ছে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, এ লেক থেকে ওই লেকে। অতিথি পাখির এমন খুনসুঁটি আর ছুটাছুটি যে কারো মনেক উদ্বেলিত করে তুলে। তাইতো বলা হয় শীতের মৌসুমে প্রকৃতির অপরুপ অলঙ্কার যেন এ অতিথি পাখি।
পাখি গবেষকদের মতে, এসময় হিমালয়ের উত্তরের দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে প্রচুর তুষারপাত হয়। এ তুষারপাতে পাখিরা টিকতে না পেরে বাংলাদেশের মত নাশীতাঞ্চ অঞ্চলে চলে আসে। তাই দূর দূরান্ত থেকে আসা নাম না জানা এসব পাখিদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত জাবির লেকগুলো। কারণ তারা যে আমাদের অতিথি। শীত চলে গেলে তারাও চলে যাবে তাদের আপন ঠিকানায়।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তথ্যমতে, জাবির লেকগুলোতে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম অতিথি পাখি আসে। তখন ক্যাম্পাসে ৯৮ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ১২৬টি দেশীয় প্রজাতির এবং ৬৯টি বিদেশি।
জাবির এ আঙ্গিনায় দুই ধরনের পাখির সমাগম ঘটে। এক ধরনের পাখি ডাঙায় বা শুকনো স্থানে থাকে। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয় পাখি। এ ক্যাম্পাসে যে সব পাখি আসে সেসবের মধ্যে ৯৮ শতাংশই ছোট সরালি। আর বাকি ২ শতাংশ অন্য প্রজাতির পাখি। ক্যাম্পাসে ছোট বড় ১৩-১৪টি লেক থাকলেও মূলত চারটি লেকে অতিথি পাখি বসে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক ও পরিবহণ চত্ত¡র সংলগ্ন লেক। এই দুটি লেকেই দেশীয় সরালি নামের হাঁসজাতীয় পাখির দেখা মিলেছে। বাকি লেকগুলোতে এখনো পাখি আসেনি। তবে এসব লেকগুলোকে পাখির জন্য অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে জাবি প্রশাসন।
পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজের কাছে এসব অতিথি পাখি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরে যে পাখিগুলো আসে এগুলোর অধিকাংশই আমাদের দেশীয় হাঁসজাতীয় পাখি। অল্প কয়েক প্রজাতির বিদেশি পাখিও আসে। তবে তারা আসে ডিসেম্বরে। এখন যে পাখিগুলো এসেছে এগুলো সরালি। এরা সাধারণত বাংলাদেশের হিমালয়ের কাছাকাছি দূরত্বের জেলাগুলো ও হাওর-বাওরে বাস করে। জাহাঙ্গীরনগরেও এদের ডিম পাড়া ও বাচ্চা ফোটানোর ঘটনা ঘটেছে। এদের অতিথি বা পরিযায়ী পাখি বলা যায় না। হয়তো জাহাঙ্গীরনগরের জন্য অতিথি বলা যেতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হেমন্ত আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি

আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরৎ ঋতুর বিদায়। হেমন্ত দরজায় এসে কড়া নাড়ছে। এর পরেই আসবে শীত। যদিও ইতিমধ্যে একটু আধটু কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। রাতের শেষ বেলায়ও শীত পড়ছে বেশ। প্রকৃতির যখন এ অবস্থা। ঠিক তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ এ আঙ্গিনার লেকগুলোতে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। এসব পাখিরা লাল শাপলার জলে কিচিরমিচির ডাকছে, আবার ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় শাপলার মাঝে, একদল ওড়ছে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, এ লেক থেকে ওই লেকে। অতিথি পাখির এমন খুনসুঁটি আর ছুটাছুটি যে কারো মনেক উদ্বেলিত করে তুলে। তাইতো বলা হয় শীতের মৌসুমে প্রকৃতির অপরুপ অলঙ্কার যেন এ অতিথি পাখি।
পাখি গবেষকদের মতে, এসময় হিমালয়ের উত্তরের দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে প্রচুর তুষারপাত হয়। এ তুষারপাতে পাখিরা টিকতে না পেরে বাংলাদেশের মত নাশীতাঞ্চ অঞ্চলে চলে আসে। তাই দূর দূরান্ত থেকে আসা নাম না জানা এসব পাখিদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত জাবির লেকগুলো। কারণ তারা যে আমাদের অতিথি। শীত চলে গেলে তারাও চলে যাবে তাদের আপন ঠিকানায়।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তথ্যমতে, জাবির লেকগুলোতে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম অতিথি পাখি আসে। তখন ক্যাম্পাসে ৯৮ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ১২৬টি দেশীয় প্রজাতির এবং ৬৯টি বিদেশি।
জাবির এ আঙ্গিনায় দুই ধরনের পাখির সমাগম ঘটে। এক ধরনের পাখি ডাঙায় বা শুকনো স্থানে থাকে। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয় পাখি। এ ক্যাম্পাসে যে সব পাখি আসে সেসবের মধ্যে ৯৮ শতাংশই ছোট সরালি। আর বাকি ২ শতাংশ অন্য প্রজাতির পাখি। ক্যাম্পাসে ছোট বড় ১৩-১৪টি লেক থাকলেও মূলত চারটি লেকে অতিথি পাখি বসে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক ও পরিবহণ চত্ত¡র সংলগ্ন লেক। এই দুটি লেকেই দেশীয় সরালি নামের হাঁসজাতীয় পাখির দেখা মিলেছে। বাকি লেকগুলোতে এখনো পাখি আসেনি। তবে এসব লেকগুলোকে পাখির জন্য অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে জাবি প্রশাসন।
পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজের কাছে এসব অতিথি পাখি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরে যে পাখিগুলো আসে এগুলোর অধিকাংশই আমাদের দেশীয় হাঁসজাতীয় পাখি। অল্প কয়েক প্রজাতির বিদেশি পাখিও আসে। তবে তারা আসে ডিসেম্বরে। এখন যে পাখিগুলো এসেছে এগুলো সরালি। এরা সাধারণত বাংলাদেশের হিমালয়ের কাছাকাছি দূরত্বের জেলাগুলো ও হাওর-বাওরে বাস করে। জাহাঙ্গীরনগরেও এদের ডিম পাড়া ও বাচ্চা ফোটানোর ঘটনা ঘটেছে। এদের অতিথি বা পরিযায়ী পাখি বলা যায় না। হয়তো জাহাঙ্গীরনগরের জন্য অতিথি বলা যেতে পারে।