আসছে ২৮ জন নারী ট্রাফিক সার্জেন্ট । সংখ্যার দিক থেকে দেখলে মনে হবে এত কম! তবে কাজের দিক বিবেচনায় নিলে সংখ্যাটা আর মনে পড়বে না। কেননা সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে ২৮ জন নারী প্রথমবারের মতো শৃঙ্খলা রক্ষা করবে এবং আইন অমান্যকারীদের কাছে প্রতিরোধক হয়ে দাঁড়াবে। ট্রাফিক আইন যাঁরা মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে এই নারীরা মামলা করতে পারবেন। গাড়ি জব্দ অথবা জরিমানাও করতে পারবেন। সন্দেহভাজন কোনো যাত্রীর শরীর তল্লাশি করতে পারবেন।
ট্রাফিক সার্জেন্টের দায়িত্ব পালন করবে এই নারীদের সঙ্গে থাকবে অস্ত্র, ওয়াকিটকি ইত্যাদি। মোটরবাইক চালানো তাঁদের জন্য বাধ্যতামূলক। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় যা-ই হোক, রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হবে টানা আট ঘণ্টা। নারী সার্জেন্টের দায়িত্বে চ্যালেঞ্জের কমতি নেই। নারীরা সব জেনে-শুনেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আসছেন। প্রশিক্ষণ শেষে আগামী ১ ডিসেম্বর সড়কে কাজ করতে নামবেন। সার্জেন্ট হিসেবে পুলিশে নারীদের নিয়োগ এই প্রথম।
বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, ট্রাফিকে কর্মরত পুরুষ সার্জেন্ট, পুলিশের উচ্চপর্যায়ের নারী কর্মকর্তারা এই সার্জেন্টদের আগমনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বলছেন, মাঠে নামলে চ্যালেঞ্জ নিতে হবেই। তা মোকাবিলা করেই পুলিশের উচ্চপর্যায়সহ বিভিন্ন পেশায় নারীরা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। এ ক্ষেত্রেও নারীরা সফল হবেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (নিয়োগ) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক দিনের ইচ্ছা নারীরা সার্জেন্টের দায়িত্ব পালন করবে।শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে ১ হাজার ৮৩৭ জন সার্জেন্ট পদে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। নারী প্রার্থী ছিলেন ৪৬ জন।’মৌখিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে ২৮ জন নারী সারা দেশের বিভিন্ন শূন্যপদে সার্জেন্ট হিসেবে নিয়োগ পান।তাঁদের রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
মনিরুল ইসলাম বললেন, ‘নারী বা পুরুষ সার্জেন্ট বলে কোনো বৈষম্য নেই। সবাই সমান কাজ করবেন। মেধা ও কোটা মিলিয়ে প্রথমবারেই ২৮ জন নারীকে পাব, আমরা এতটা তো আশাই করিনি।’পুরুষ সার্জেন্টরাও নারী সার্জেন্টদের স্বাগত জানিয়েছেন।
গোটা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। দেশের সড়ক সামলানোর কাজে নারী সার্জেন্টরা দক্ষতা দেখাবেন, এমনই প্রত্যাশা।