হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর চলমান সহিংসতা বন্ধে ৭ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ এবং দেশটির ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের হুমকি দেয়ার মাত্র একদিন পরেই ইয়াংগুনের বিরুদ্ধে এইসব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানালো ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত পরিসরে কাজ করা এবং দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য সব রকম সেনা সরঞ্জামাদি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চলমান নিষেধাজ্ঞাসহ, জবাবদিহিতা এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য ৭ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পদক্ষেপগুলো হচ্ছে:
১. গত ২৫ আগস্ট থেকে বর্তমান ও সাবেক মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের জন্য ‘জেড’ অ্যাক্ট ভ্রমণ শিথিলতার সম্ভাবনা বন্ধ।
২. সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অবরোধের উপায়গুলো নিয়ে ভাবতে ‘জেড’ অ্যাক্টের অধীনে সুযোগগুলো খতিয়ে দেখা।
৩. ‘লেহি আইন’ অনুসারে বার্মার উত্তরে রাখাইন রাজ্যের সামরিক কর্মকাণ্ডে যেসব কর্মকর্তা ও ইউনিট জড়িত তাদের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাপ্রাপ্ত কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য হবে না।
৪. মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যেন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাপ্রাপ্ত কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করতে না পারেন সে জন্য ইতোমধ্যে প্রদত্ত আমন্ত্রণ বাতিল করা।
৫. আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে প্রয়োজনীয় এলাকায় অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার দাবি।
৬. যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের বন্ধু সহযোগীদের সঙ্গে জাতিসংঘ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ও অন্যান্য যথাযথ অবস্থানে বার্মার জবাবদিহিতার বিষয়ে আলোচনা করা।
৭. যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে জবাবদিহিতার পদ্ধতি খুঁজে দেখা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কির নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমার অর্ধশতাব্দীর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজের উল্লেখযোগ্য অগ্রযাত্রার দিকে চলতে শুরু করেছে।
মার্কিন প্রশাসন এই উত্তরণ এবং নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে সমর্থন করে, যার গুরুত্ব রয়েছে মিয়ানমারের সকল জনগণের। যুক্তরাষ্ট্র-মিয়ানমার অংশীদারিত্বের স্বার্থে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত ঘটনাগুলোর জন্য রোহিঙ্গারা ভয়াবহ নির্যাতন সহ্য করেছে। দেশটিতে যে কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান ফের নৃশংসতার শিকার হলে দায়ীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের উত্তরণে সমর্থন অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে বর্তমান সংকট সমাধানে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সরকার ও তাদের সামরিক বাহিনীকে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।