ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেলিম-রিপনের বক্তব্যের মিল রয়েছে: জাসদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩০৮ বার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ‘পরিবেশ’ সৃষ্টি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জাসদের ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও বিএনপির মূখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপনের বক্তব্যের মিল রয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। এর ফলে ১৪ দলের ঐক্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে বলেও ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম দলটিকে সতর্ক করেছে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক নেতৃত্বাধীন দলটি।

সদ্য স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গঠিত জাসদই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল বলে শেখ সেলিমকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার একটি বিবৃতি পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান জানায় জাসদ।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম আর বিএনপির মূখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন যখন একই সময়ে একই ভাষায় জাসদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, এই অভিন্ন ভাষার যোগসূত্র কি?

সোমবার বিকালে পাঠানো ওই বিবৃতিতে জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনউদ্দিন খান বাদল এবং সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া ১৪ দলীয় ঐক্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং জঙ্গিসন্ত্রাস নির্ভর অপশক্তিকে রক্ষা করার যে কোনো অপকৌশলের উপর সজাগ দৃষ্টি রখার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত, তদন্ত শেষে আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণে কোথায়ও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম বিষয় আসেনি। তারপরও শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এহেন বক্তব্য প্রদান শুধু সত্যের অপলাপই নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

জাসদ নেতারা বলেন, যখন প্রধানমন্ত্রী ও ১৪ দল নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের জনগণ ও ১৪ দলের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর খুনী গোষ্ঠী ও বঙ্গবন্ধু খুনের সুফলভোগী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করছে, তখন শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এ বক্তব্য ঐক্যর মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং শত্রুপক্ষের হাতকেই শক্তিশালী করবে।

গত রবিবার জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে শেখ সেলিমকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনও বঙ্গবন্ধুর ওপর আঘাত হানতে পারত না, যদি এই গণবাহিনী, জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে, মানুষ হত্যা করে, এমপি মেরে পরিবেশ সৃষ্টি না করত। সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল রহস্য বের করতে হবে, কারা কারা জড়িত ছিল।”

শেখ সেলিমের বক্তব্যের একদিন বাদে সোমবার বিএনপি নেতা রিপন এক সংবাদ সম্মেলনে জাসদের ১৯৭২-৭৫ সময়কার ভূমিকার তদন্ত দাবি করেন।

১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ গণবাহিনী ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জাসদকে দায়ী করে রিপন বলেন, “আপনাদের (জাসদ) অপকর্ম সম্পর্কে শুধু এখন আমরাই বলি না, শাসক দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে আপনাদের অপকর্মের কথা প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে।”

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট নিয়ে দলে অবস্থান ব্যাখ্যা করে জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, “বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত, তদন্ত শেষে আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণে কোথাও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম বিষয় আসেনি।

তারপরও জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম কর্তৃক এহেন বক্তব্য প্রদান শুধু সত্যের অপলাপই নয়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করে দলটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সেলিম-রিপনের বক্তব্যের মিল রয়েছে: জাসদ

আপডেট টাইম : ০৯:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৫

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ‘পরিবেশ’ সৃষ্টি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জাসদের ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও বিএনপির মূখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপনের বক্তব্যের মিল রয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। এর ফলে ১৪ দলের ঐক্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে বলেও ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম দলটিকে সতর্ক করেছে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক নেতৃত্বাধীন দলটি।

সদ্য স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গঠিত জাসদই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল বলে শেখ সেলিমকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার একটি বিবৃতি পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান জানায় জাসদ।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম আর বিএনপির মূখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন যখন একই সময়ে একই ভাষায় জাসদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, এই অভিন্ন ভাষার যোগসূত্র কি?

সোমবার বিকালে পাঠানো ওই বিবৃতিতে জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনউদ্দিন খান বাদল এবং সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া ১৪ দলীয় ঐক্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং জঙ্গিসন্ত্রাস নির্ভর অপশক্তিকে রক্ষা করার যে কোনো অপকৌশলের উপর সজাগ দৃষ্টি রখার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত, তদন্ত শেষে আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণে কোথায়ও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম বিষয় আসেনি। তারপরও শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এহেন বক্তব্য প্রদান শুধু সত্যের অপলাপই নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

জাসদ নেতারা বলেন, যখন প্রধানমন্ত্রী ও ১৪ দল নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের জনগণ ও ১৪ দলের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর খুনী গোষ্ঠী ও বঙ্গবন্ধু খুনের সুফলভোগী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করছে, তখন শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এ বক্তব্য ঐক্যর মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং শত্রুপক্ষের হাতকেই শক্তিশালী করবে।

গত রবিবার জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে শেখ সেলিমকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনও বঙ্গবন্ধুর ওপর আঘাত হানতে পারত না, যদি এই গণবাহিনী, জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে, মানুষ হত্যা করে, এমপি মেরে পরিবেশ সৃষ্টি না করত। সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল রহস্য বের করতে হবে, কারা কারা জড়িত ছিল।”

শেখ সেলিমের বক্তব্যের একদিন বাদে সোমবার বিএনপি নেতা রিপন এক সংবাদ সম্মেলনে জাসদের ১৯৭২-৭৫ সময়কার ভূমিকার তদন্ত দাবি করেন।

১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ গণবাহিনী ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জাসদকে দায়ী করে রিপন বলেন, “আপনাদের (জাসদ) অপকর্ম সম্পর্কে শুধু এখন আমরাই বলি না, শাসক দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে আপনাদের অপকর্মের কথা প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে।”

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট নিয়ে দলে অবস্থান ব্যাখ্যা করে জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, “বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত, তদন্ত শেষে আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণে কোথাও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম বিষয় আসেনি।

তারপরও জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম কর্তৃক এহেন বক্তব্য প্রদান শুধু সত্যের অপলাপই নয়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করে দলটি।