হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোববার রাত থেকে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রাণ বাঁচাতে রাখাইনের উত্তরাঞ্চল থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তারা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার আনজুমান পাড়ার ক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে এসেছে। তাদেরকে সেখান থেকে সরে আরও ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি এখনো। এমন অবস্থায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এই নতুন দলের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। আজ মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিচের দেয়া বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গার ভাষ্যমতে, তাদেরকে রাখাইন ছেড়ে পালানোর জন্যে বেশ কয়েকবার হুমকি দেয়া হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো, পালাও নইলে মেরে ফেলা হবে। হুমকি পাওয়া সত্ত্বেও অনেকেই সেখানে নিজের বাড়িতে থেকে যাবার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হলে তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
রোহিঙ্গাদের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছাতে তাদেরকে রোদ-বৃষ্টির মধ্যেই এক সপ্তাহের মত টানা হাঁটতে হয়েছে। কেউ কেউ রোববার সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। বাকিরা সীমান্ত পার করেছেন সোমবার। আপাতত তারা মিয়ানমার সংলগ্ন ওই সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরে ভেতরে আসার অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। সেখানে এখনও প্রতি রাতে গুলি ছোড়ার আওয়াজ পাওয়া যায়। এদিকে, দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আসায় পানিশূণ্যতা ও ক্ষুধায় ভুগছেন অনেক শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা। ইউএনএইচসিআর, দ্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ও একশন এগেইন্সট হাঙ্গারের মতো ত্রাণ ও মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাগুলো সেখানে রোহিঙ্গাদের মধ্যে খাবার ও পানি বিতরণ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স(এমএসএফ) অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ কতৃপক্ষের সঙ্গে তাদেরকে রোহিঙ্গা শিবিরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়ার আহবান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ২৫ শে আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আনুমানিক ৫ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে।