হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর ওয়ারীর কে এম দাস লেন সড়কে ছিনতাইকারী গ্রুপের ১০/১২ জন সদস্য তিন বছর ধরে ছিনতাই চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ জানায়, এই চক্রটি শতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের হাতে আহত হয়েছেন প্রায় ২০ জন।
গত রবিবার সকালে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আবু তালহা প্রাণ হারান। গতকাল পুলিশ ছিনতাইয়ের ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে। ভিডিও ফুটেজে তালহার ওপর ছিনতাইকারীদের হামলার দৃশ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়ারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।
সূত্র জানায়, এ ঘটনায় নিহতের বাবা নূর উদ্দিন খন্দকার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সন্ধ্যার পর পুলিশ ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই যুবককে আটক করেছে। এই দুই যুবকের নাম জানাতে অস্বীকার করেছে ওয়ারী থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়ারী এলাকায় ছিনতাইকারীদের তত্পরতা বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবকের সহায়তায় বাইরে থেকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এই এলাকায় এসে ছিনতাই করে। অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা আমরা জানতেও পারি না। স্থানীয়রা বলেন, ভোর বেলা ও গভীর রাতে বাস টার্মিনাল, রেলষ্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে যাওয়া আসার সময় এলাকার লোকজন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন।
গতকাল সকালে ঢাকার ওয়ারি থানাধীন কেএম দাস লেনের ১২/৪ নম্বর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন আবু তালহা। নিহত তালহা ঢাকা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন মহির ভাগ্নে। তালহার ফুফা আবুল হাসনাত শাহ-জালাল বলেন, তালহার উপর যখন ছিনতাইকারীরা হামলা করে তখন কেউ এগিয়ে আসেনি। প্রত্যেক ভবনের দারোয়ান ছিল, অনেকেই জানালার পাশ থেকে ঘটনা দেখেছেন। কিন্তু কেউ বের হয়ে তালহাকে রক্ষা করেনি। একমাত্র ছেলে হারিয়ে অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তালহার বাবা-মা। তালহার প্রসঙ্গ তুলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা নুর উদ্দিন খন্দকার। তিনি বলেন, বছর খানেক আগে তালহা আমার সঙ্গে রিকশা করে যাচ্ছিল। রাস্তায় তরুণ-তরুণীর মধ্যে ঝগড়া দেখে নেমে প্রতিবাদ করে। এই ঘটনার জেরে পড়ে বেশ কয়েকজন তরুণ মিলে আমার ছেলের উপর হামলাও করেছিল।
আরেক বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, এ রাস্তাটি দিয়ে পুরান ঢাকার অনেক ব্যবসায়ী যাতায়াত করে থাকেন। তিনি অভিযোগ করেন, রাস্তাটিতে পুলিশের তেমন কোনো টহল থাকে না। তিনি ওই রাস্তায় পুলিশী টহল বৃদ্ধির জন্য দাবি জানান।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, তালহার পেটে ও উরু এবং বুকের বাম পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ধারালো অস্ত্রের আঘাতেই তিনি মারা গেছেন।
ওয়ারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।