দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ‘বরখাস্ত’ করে সরকার জনগণের রায়কে অশ্রদ্ধা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটির দাবি, এ পর্যন্ত ৫৩৮ জন বিএনপি-সমর্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্বাচিত ওই জনপ্রতিনিধিদের স্ব স্ব পদে পুনর্বহালেরও দাবি জানিয়েছে দলটি।
বৃৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
সরকার বিএনপি-সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের একের পর এক বরখাস্ত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ ও কারান্তরীণ থাকা অবস্থায় গাজীপুরের মেয়র আবদুল মান্নানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে অপসারণ করা হয়। সরকার সারাদেশে বিএনপি-সমর্থিত বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করছে। অন্যদিকে সরকারের অনুগতদের সেখানে স্থলাভিষিক্ত করছে।’
রিপন বলেন, ‘সরকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার কথা বলে প্রকারান্তরে একে ধ্বংস করে দিচ্ছে। জনগণের ভোটের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই; জনগণের রায়ের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নেই। কারণ জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিলে আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়। জনগণকে অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগ করার ক্ষমতা দেওয়া হলে আওয়ামী লীগ নড়বড়ে হয়ে যায়। এটা দেশের নির্বাচনের ট্র্যাক রেকর্ড।’
তিনি আরো বলেন, ‘ নিজেদের দুরাবস্থা বুঝতে পেরেই আওয়ামী লীগ বিএনপি-সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের একের পর এক বরখাস্ত করছে। এই বরখাস্ত করার হাতিয়ারটি যদি সংসদের এমপিদের ক্ষেত্রে থাকতো, তাহলে তারা বিরোধী দলের এমপিদেরও বরখাস্ত করতো।’
সরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করে সারাদেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলবাজির পথ পরিষ্কার করছে বলেও এ সময় অভিযোগ করেন তিনি।
রিপন বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে সরকার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। সেজন্য সেখানকার মেয়র আবদুল মান্নানকে বরখাস্ত করার চক্রান্ত আগে থেকেই ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে গাজীপুরের মেয়রকে গ্রেফতার করা হয়।’
দেশে এই মুহূর্তে কোনো আইনের শাসন নেই- দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন বিচারের বাণী নিভৃতে নয়, প্রকাশ্যেই কাঁদে। সারাদেশে ল’লেস শাসন চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।