ঢাকা ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধানে ফলন আশাতীত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫২:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ২৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আউশে আশাতীত ফলন হয়েছে। আমন আবাদও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে আউশ তোলার ধুম। আউশে এমন ফলন নিকট অতীতে দেখেনি চাষীরা। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকরা বলছেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল এবং সামুদ্রিক জোয়ারে শুরুতে কিছুটা ফসলহানি হয়েছে। তবে এখন তা কৃষকের জন্য আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। উর্বরতা বেড়ে যাওয়ায় কোমল মাটির পরশে কৃষকের ক্ষেতে সোনা ফলতে শুরু করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমতল ভূমি, পাহাড়, টিলাময় উঁচু-নিচু ভূমি, উপকূলীয় জলাভূমি থেকে শুরু করে চাষযোগ্য জমি এখন বড়ই উর্বরা। চট্টগ্রাম জেলায় নিট ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৭ হাজার ২৯ হেক্টর। তবে প্রাকৃতিকভাবে উঁচুনিচু টিলাময় পাহাড়ী এলাকা ও জলাভূমিতে আবাদ শুরু হওয়ায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও বেড়ে গেছে।
টানা ভারী বর্ষণে আবাদযোগ্য জমি সতেজ হয়েছে। চলে গেছে পোকামাকড়ের উপদ্রবসহ নানা রোগ-বালাই। দফায় দফায় পাহাড়ী ঢল ও বন্যায় এসেছে নতুন মাটি তথা পলি মাটির স্তর। অন্যদিকে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে উপকূলীয় এলাকায় কমেছে লবণের আগ্রাসন। ফলে ধান, শাকসবজি, ফলমূল থেকে শুরু করে সব ধরনের চাষাবাদে ইতিবাচক সুফল মিলছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে কিছুটা ফসলহানি হলেও এখন তা পুষিয়ে নিতে পারছে কৃষকরা। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আউশ ঘরে তোলার ধুম পড়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে চলছে জুমের ফসল তোলার উৎসব। আউশ এবং জুম চাষে ধানের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার ১ লাখ ১৬ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে আউশের আবাদ কম হয়। ফলনও হতো কম। তবে এবার আশাতীত ফলন মিলেছে আউশে। ইতোমধ্যে ৯১ শতাংশ আউশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। সব জাতের আউশে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। হাইব্রিড জাতের আউশে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতি হেক্টরে ২.৯৬ মেট্রিক টন। ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩.৭৪ মেট্রিক টন। উফশী জাতের আউশে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২.৪৯ মেট্রিক টন। মিলছে ২.৫২ মেট্রিক টন। আর দেশী জাতের আউশে ফলন পাওয়া যাচ্ছে ১.৩৩ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১.৩০ মেট্রিক টন। এবার এ অঞ্চলে হাইব্রিড জাতীয় আউশের আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৫৩৯ হেক্টর। তিন পার্বত্য জেলায় জুম চাষেও এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাহাড়ে ধান, শাকসবজিসহ সব ধরনের ফসল ভালো হওয়ায় খুশি পাহাড়ীরা। টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশ ও ঢালুতে চাষযোগ্য জমি উর্বর হয়ে উঠেছে।
আমন আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আউশে ভালো ফসল পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে মাঠে নেমেছেন প্রান্তিক চাষীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ২৭ হাজার ২৮৭ হেক্টরের ৯৮ শতাংশ। কক্সবাজার, ল²ীপুর ও ফেনী জেলায় আমন আবাদ শেষ হয়েছে। এ তিন জেলাতেই আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী হয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ভারী বর্ষণ, পাহাড়ী ঢল, জোয়ার ও কাপ্তাই লেকের পানি ছেড়ে দেওয়ায় পানিবদ্ধতার কারণে শুরুতে আমনের আবাদ বিনষ্ট হয় কিছু এলাকায়। তবে কৃষকদের একান্ত প্রচেষ্টা আর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ওই ধাক্কা কাটানো সম্ভব হয়েছে। আবাদ নষ্ট হওয়ার পর ৫৩১ শতক জমিতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ৪৮৫ শতক জমিতে নাবি জাতের রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়। হাটহাজারী, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার হটিকালচার সেন্টারে এসব বীজতলা তৈরি করা হয়।
চট্টগ্রামের খাদ্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে দুই দফা আমন আবাদের হোঁচট খায় কৃষক। কাপ্তাই হ্রদের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় রাঙ্গুনিয়া, রাউজানসহ আশপাশের এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রোপা আমন পানিতে ডুবে পচে যায়। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে হাটহাজারী কৃষি ইনস্টিটিউটে তৈরি করা হয় বীজতলা। সেখান থেকে কৃষকদের মাঝে চারা বিতরণ করে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে গুমাইবিলের এক ইঞ্চি জমিও খালি নেই বলে জানান চাষীরা। চট্টগ্রামের খাদ্য উদ্বৃত্ত উপজেলা বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া, মিরসরাই, ফটিকছড়ি, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও সাতকানিয়ায় ব্যাপকহারে আমনের আবাদ হয়েছে। কক্সবাজারেও এবার অন্য বছরের তুলনায় বেশি আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, টানা বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে লোনা পানির আগ্রাসন হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে উপকূলের চাষ অযোগ্য জমিতেও এবার আমনের আবাদ হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় জমি তৈরিতে কৃষকের তেমন বেগ পেতে হয়নি। তাছাড়া চালের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে অতিরিক্ত আগ্রহী হয়ে উঠে প্রান্তিক চাষীরা। কৃষি বিভাগ তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসায় এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি এলাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। প্রায় সম্পূর্ণ প্রকৃতিনির্ভর এ আবাদে খরচও অনেক কম। কয়েক বছর আগেও ভরা বর্ষায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন আবাদে সেচ দিতে হয়েছিল। কিন্তু এবার পুরো বর্ষাকাল জুড়েই ছিল টানা বর্ষণ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষি জমির জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সুফল পাওয়া গেছে ধান আবাদে। এ অঞ্চলের আউশের ফলন কম হয়। কিন্তু এবার আশাতীত ফলন পাওয়া গেছে। আবার আমন আবাদের ক্ষেত্রেও অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্ষণের ফলে জমির উর্বরতা বেড়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ পানির আগ্রাসন কমেছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের উৎপাতও হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে সব ধরনের ফসল ভালো হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ধানে ফলন আশাতীত

আপডেট টাইম : ১১:৫২:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আউশে আশাতীত ফলন হয়েছে। আমন আবাদও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে আউশ তোলার ধুম। আউশে এমন ফলন নিকট অতীতে দেখেনি চাষীরা। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকরা বলছেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল এবং সামুদ্রিক জোয়ারে শুরুতে কিছুটা ফসলহানি হয়েছে। তবে এখন তা কৃষকের জন্য আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। উর্বরতা বেড়ে যাওয়ায় কোমল মাটির পরশে কৃষকের ক্ষেতে সোনা ফলতে শুরু করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমতল ভূমি, পাহাড়, টিলাময় উঁচু-নিচু ভূমি, উপকূলীয় জলাভূমি থেকে শুরু করে চাষযোগ্য জমি এখন বড়ই উর্বরা। চট্টগ্রাম জেলায় নিট ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৭ হাজার ২৯ হেক্টর। তবে প্রাকৃতিকভাবে উঁচুনিচু টিলাময় পাহাড়ী এলাকা ও জলাভূমিতে আবাদ শুরু হওয়ায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও বেড়ে গেছে।
টানা ভারী বর্ষণে আবাদযোগ্য জমি সতেজ হয়েছে। চলে গেছে পোকামাকড়ের উপদ্রবসহ নানা রোগ-বালাই। দফায় দফায় পাহাড়ী ঢল ও বন্যায় এসেছে নতুন মাটি তথা পলি মাটির স্তর। অন্যদিকে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে উপকূলীয় এলাকায় কমেছে লবণের আগ্রাসন। ফলে ধান, শাকসবজি, ফলমূল থেকে শুরু করে সব ধরনের চাষাবাদে ইতিবাচক সুফল মিলছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে কিছুটা ফসলহানি হলেও এখন তা পুষিয়ে নিতে পারছে কৃষকরা। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আউশ ঘরে তোলার ধুম পড়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে চলছে জুমের ফসল তোলার উৎসব। আউশ এবং জুম চাষে ধানের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার ১ লাখ ১৬ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে আউশের আবাদ কম হয়। ফলনও হতো কম। তবে এবার আশাতীত ফলন মিলেছে আউশে। ইতোমধ্যে ৯১ শতাংশ আউশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। সব জাতের আউশে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। হাইব্রিড জাতের আউশে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতি হেক্টরে ২.৯৬ মেট্রিক টন। ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩.৭৪ মেট্রিক টন। উফশী জাতের আউশে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২.৪৯ মেট্রিক টন। মিলছে ২.৫২ মেট্রিক টন। আর দেশী জাতের আউশে ফলন পাওয়া যাচ্ছে ১.৩৩ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১.৩০ মেট্রিক টন। এবার এ অঞ্চলে হাইব্রিড জাতীয় আউশের আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৫৩৯ হেক্টর। তিন পার্বত্য জেলায় জুম চাষেও এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাহাড়ে ধান, শাকসবজিসহ সব ধরনের ফসল ভালো হওয়ায় খুশি পাহাড়ীরা। টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশ ও ঢালুতে চাষযোগ্য জমি উর্বর হয়ে উঠেছে।
আমন আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আউশে ভালো ফসল পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে মাঠে নেমেছেন প্রান্তিক চাষীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ২৭ হাজার ২৮৭ হেক্টরের ৯৮ শতাংশ। কক্সবাজার, ল²ীপুর ও ফেনী জেলায় আমন আবাদ শেষ হয়েছে। এ তিন জেলাতেই আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী হয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ভারী বর্ষণ, পাহাড়ী ঢল, জোয়ার ও কাপ্তাই লেকের পানি ছেড়ে দেওয়ায় পানিবদ্ধতার কারণে শুরুতে আমনের আবাদ বিনষ্ট হয় কিছু এলাকায়। তবে কৃষকদের একান্ত প্রচেষ্টা আর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ওই ধাক্কা কাটানো সম্ভব হয়েছে। আবাদ নষ্ট হওয়ার পর ৫৩১ শতক জমিতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ৪৮৫ শতক জমিতে নাবি জাতের রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়। হাটহাজারী, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার হটিকালচার সেন্টারে এসব বীজতলা তৈরি করা হয়।
চট্টগ্রামের খাদ্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে দুই দফা আমন আবাদের হোঁচট খায় কৃষক। কাপ্তাই হ্রদের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় রাঙ্গুনিয়া, রাউজানসহ আশপাশের এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রোপা আমন পানিতে ডুবে পচে যায়। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে হাটহাজারী কৃষি ইনস্টিটিউটে তৈরি করা হয় বীজতলা। সেখান থেকে কৃষকদের মাঝে চারা বিতরণ করে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে গুমাইবিলের এক ইঞ্চি জমিও খালি নেই বলে জানান চাষীরা। চট্টগ্রামের খাদ্য উদ্বৃত্ত উপজেলা বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া, মিরসরাই, ফটিকছড়ি, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও সাতকানিয়ায় ব্যাপকহারে আমনের আবাদ হয়েছে। কক্সবাজারেও এবার অন্য বছরের তুলনায় বেশি আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, টানা বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে লোনা পানির আগ্রাসন হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে উপকূলের চাষ অযোগ্য জমিতেও এবার আমনের আবাদ হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় জমি তৈরিতে কৃষকের তেমন বেগ পেতে হয়নি। তাছাড়া চালের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে অতিরিক্ত আগ্রহী হয়ে উঠে প্রান্তিক চাষীরা। কৃষি বিভাগ তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসায় এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি এলাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। প্রায় সম্পূর্ণ প্রকৃতিনির্ভর এ আবাদে খরচও অনেক কম। কয়েক বছর আগেও ভরা বর্ষায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন আবাদে সেচ দিতে হয়েছিল। কিন্তু এবার পুরো বর্ষাকাল জুড়েই ছিল টানা বর্ষণ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষি জমির জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সুফল পাওয়া গেছে ধান আবাদে। এ অঞ্চলের আউশের ফলন কম হয়। কিন্তু এবার আশাতীত ফলন পাওয়া গেছে। আবার আমন আবাদের ক্ষেত্রেও অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্ষণের ফলে জমির উর্বরতা বেড়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ পানির আগ্রাসন কমেছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের উৎপাতও হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে সব ধরনের ফসল ভালো হচ্ছে।