ঢাকা ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ আগস্ট জাতির মাথা লজ্জায় হেট করে দেয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৫
  • ৪০১ বার

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্টের নৃশংস ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা জাতির মাথা বিশ্ববাসীর কাছে লজ্জায় হেট করে দিয়েছিল।

আজ রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এবং আমার ছোটবোন দেশে ছিলাম না। মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলাম। দুটানা মন নিয়ে গিয়েছিলাম। এক মাসের মধ্যে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু আমরা আর ফিরতে আসতে পারিনি। আমাদের ফেরার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এভাবে ছয়টি বছর বিদেশের মাটিতে কাটাতে হলো। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ যখন আমাকে দলীয় প্রধান নির্বাচন করে তখন দেশবাসীর সমর্থনে দেশে ফিরে আসি।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের নৃশংস সেই ঘটনার পর কী ঘটেছিল? হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র, মার্শাল ল, সংবিধান স্থগিত। মার্শাল ল-ই ছিল তখনকার আইন। প্রতিদিন রাতে কারফিউ। সেই ৮৬ সাল পর্যন্ত দেশে কারফিউ জারি ছিল। যেখানে সংবিধান থাকে না, যেখানে মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়, সেখানে গণতন্ত্র থাকে কিভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কোনো একটি হত্যাকাণ্ড ঘটলেই আমার কাছে এ হত্যার বিচার দাবি করা হয়। তারা কি একবার ভেবে দেখেন যখন আমার পিতা-মাতা, আমার ছোট্ট ভাই রাসেল, অন্তঃস্বত্তা ভাবি আরজুকে গুলি করে হত্যা করেছিল, সেই হত্যার বিচার পর্যন্ত খুনিরা করতে দেয়নি। খুনি মোশতাক অর্ডিনেন্স জারি করে আর জিয়াউর রহমান তা জায়েজ করে। জিয়া খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেন। বিভিন্ন দূতাবাসে খুনিদের চাকরি দেয়া হয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যাদের বিচার শুরু করেছিলেন ৭৫ পরবর্তী সময়ে সেই যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেয়া হয়। যারা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল তাদের ফিরিয়ে আনা হয় যাতে দেশটাকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বানানো যায়। যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেন জিয়া। জিয়াই তাদের প্রতিষ্ঠিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এমন আছে কি যে খুনিকে এভাবে রক্ষা করে বা রেহাই দেয়। এটা হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশে। এই খুনিদের জেনারেল এরশাদ দল করার সুযোগ করে দেয়। এই খুনিরা দলও গঠন করে। এরশাদ এসে খুনি ফারুককে নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ এর ভোটারবিহীন নির্বাচনে কর্নেল হুদা আর রশিদকে এমপি বানায় খালেদা জিয়া। তবে বাংলাদেশের মানুষ সেই নির্বাচন মেনে নেয়নি। জনগণ খালেদাকে বিদায় করেছিল ঠিক যেমন এরশাদকে বিতাড়িত করেছিল।

তিনি বলেন, ৯৬-এ আমরা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার শুরু করি। কিন্তু আমরা শেষ করতে পারিনি। তবে আল্লাহর রহমত আছে, ২০০৮ সালে আবার ক্ষমতায় আসি এবং খুনিদের বিচার শুরু করি। এরজন্য আমি আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি। কৃতজ্ঞতা জানাই দেশের মানুষের প্রতি এবং আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি। তাদের সমর্থনেই বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি দেশ দিয়ে গেছেন। এই দেশটি আছে বলেই যা কিছু আমরা পাচ্ছি। স্বাধীন দেশের নাগরিক না হলে কি এই প্রাপ্তিগুলো হতো? স্বাধীনতা তো একদিনে আসেনি। ২৩ বচরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধ। ২৪ বছরের ফসল এই স্বাধীনতা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

১৫ আগস্ট জাতির মাথা লজ্জায় হেট করে দেয়

আপডেট টাইম : ১০:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৫

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্টের নৃশংস ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা জাতির মাথা বিশ্ববাসীর কাছে লজ্জায় হেট করে দিয়েছিল।

আজ রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এবং আমার ছোটবোন দেশে ছিলাম না। মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলাম। দুটানা মন নিয়ে গিয়েছিলাম। এক মাসের মধ্যে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু আমরা আর ফিরতে আসতে পারিনি। আমাদের ফেরার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এভাবে ছয়টি বছর বিদেশের মাটিতে কাটাতে হলো। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ যখন আমাকে দলীয় প্রধান নির্বাচন করে তখন দেশবাসীর সমর্থনে দেশে ফিরে আসি।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের নৃশংস সেই ঘটনার পর কী ঘটেছিল? হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র, মার্শাল ল, সংবিধান স্থগিত। মার্শাল ল-ই ছিল তখনকার আইন। প্রতিদিন রাতে কারফিউ। সেই ৮৬ সাল পর্যন্ত দেশে কারফিউ জারি ছিল। যেখানে সংবিধান থাকে না, যেখানে মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়, সেখানে গণতন্ত্র থাকে কিভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কোনো একটি হত্যাকাণ্ড ঘটলেই আমার কাছে এ হত্যার বিচার দাবি করা হয়। তারা কি একবার ভেবে দেখেন যখন আমার পিতা-মাতা, আমার ছোট্ট ভাই রাসেল, অন্তঃস্বত্তা ভাবি আরজুকে গুলি করে হত্যা করেছিল, সেই হত্যার বিচার পর্যন্ত খুনিরা করতে দেয়নি। খুনি মোশতাক অর্ডিনেন্স জারি করে আর জিয়াউর রহমান তা জায়েজ করে। জিয়া খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেন। বিভিন্ন দূতাবাসে খুনিদের চাকরি দেয়া হয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যাদের বিচার শুরু করেছিলেন ৭৫ পরবর্তী সময়ে সেই যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেয়া হয়। যারা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল তাদের ফিরিয়ে আনা হয় যাতে দেশটাকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বানানো যায়। যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেন জিয়া। জিয়াই তাদের প্রতিষ্ঠিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এমন আছে কি যে খুনিকে এভাবে রক্ষা করে বা রেহাই দেয়। এটা হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশে। এই খুনিদের জেনারেল এরশাদ দল করার সুযোগ করে দেয়। এই খুনিরা দলও গঠন করে। এরশাদ এসে খুনি ফারুককে নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ এর ভোটারবিহীন নির্বাচনে কর্নেল হুদা আর রশিদকে এমপি বানায় খালেদা জিয়া। তবে বাংলাদেশের মানুষ সেই নির্বাচন মেনে নেয়নি। জনগণ খালেদাকে বিদায় করেছিল ঠিক যেমন এরশাদকে বিতাড়িত করেছিল।

তিনি বলেন, ৯৬-এ আমরা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার শুরু করি। কিন্তু আমরা শেষ করতে পারিনি। তবে আল্লাহর রহমত আছে, ২০০৮ সালে আবার ক্ষমতায় আসি এবং খুনিদের বিচার শুরু করি। এরজন্য আমি আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি। কৃতজ্ঞতা জানাই দেশের মানুষের প্রতি এবং আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি। তাদের সমর্থনেই বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি দেশ দিয়ে গেছেন। এই দেশটি আছে বলেই যা কিছু আমরা পাচ্ছি। স্বাধীন দেশের নাগরিক না হলে কি এই প্রাপ্তিগুলো হতো? স্বাধীনতা তো একদিনে আসেনি। ২৩ বচরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধ। ২৪ বছরের ফসল এই স্বাধীনতা।