ঢাকা ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্ধ্যা হলেই পাল্টে যায় শাবির শহীদ মিনারের চিত্র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৫
  • ৫০৭ বার

শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর সম্মান জানিয়ে ২০০১ সালে তৎকালীন স্পিকার প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের। ৩২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ শহীদ মিনারটি সম্ভবত দেশের ভূপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ উচ্চতায়। ৫৮ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি টিলায় ৬হাজার ৮শত ৮৬ বর্গফুট জায়গা জুড়ে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৭৮ফুট। শতাধিক সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয় উপরে। শহীদ মিনার থেকেই পাখির চোখে দেখা যায় পুরো ক্যাম্পাস।

কিন্তু এ শহীদ মিনারকে ঘিরেই সম্প্রতি সংঘটিত হচ্ছে নানা অসামাজিক কর্মকা-। সকালের সূর্যের এক ফালি হাসির সাথে মেধাবী শিক্ষার্থী ও প্রেমিকযুগলের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগল শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমায় শহীদ মিনারে। প্রায়সই সেখানে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়।

শহীদ মিনার ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত আইসিটি ভবনের পেছনটাও সম্প্রতি প্রেমিক-প্রেমিকাদের ডেটিং প্লেস হয়ে উঠেছে।

এসব অনৈতিক কাজ অবাধে চললেও প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসন নামমাত্র এসবের বিরুদ্ধে দুএকটি অভিযান পরিচালনা করলেও তেমন কাজে আসেনি।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া প্রেমিক যুগল নয়, বহিরাগত প্রেমিক যুগলদেরও ঢল নামে শাবিপ্রবির এ ক্যাম্পাসে। উজাড় করে দেয় একে অপরকে। পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন বা অন্য যে কোন উৎসবের দিনে প্রেমিক যুগলদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকা।

জানা যায়, প্রেমিকযুগলদের পদচারণা ছাড়াও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব বেড়েছে সংলগ্ন এলাকায়। মাঝে মাঝে ছিনতাইয়ের মত অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে থাকে শহীদ মিনারের আশপাশ ঘিরেই। দেয়াল প্রাচীর দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা সংরক্ষিত না থাকায় ছিনতাইকারীরা সহজেই ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।

শহীদ মিনারকে ঘিরে প্রেমিক-প্রেমিকাদের এমন কর্মকা-ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বািবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের এমন অবাধে প্রবেশ যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবাধে প্রবেশের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিভাষ নাথ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মেধার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে মানুষ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছি। এখান থেকে আমাদের এমন কিছু শেখা উচিত নয় যা সমাজের চোখে নিন্দনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি মুক্ত অঙ্গণে এরকম কর্মকা- সত্যিই দুঃখজনক। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীর আপত্তিকর চলাফেরায় হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী কর্তৃক এমন অশ্লীল কর্মকা- অত্র এলাকার তরুণ-তরুনীদের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জান চৌধুরীকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় শিগগির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সন্ধ্যা হলেই পাল্টে যায় শাবির শহীদ মিনারের চিত্র

আপডেট টাইম : ০৭:৩১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৫

শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর সম্মান জানিয়ে ২০০১ সালে তৎকালীন স্পিকার প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের। ৩২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ শহীদ মিনারটি সম্ভবত দেশের ভূপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ উচ্চতায়। ৫৮ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি টিলায় ৬হাজার ৮শত ৮৬ বর্গফুট জায়গা জুড়ে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৭৮ফুট। শতাধিক সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয় উপরে। শহীদ মিনার থেকেই পাখির চোখে দেখা যায় পুরো ক্যাম্পাস।

কিন্তু এ শহীদ মিনারকে ঘিরেই সম্প্রতি সংঘটিত হচ্ছে নানা অসামাজিক কর্মকা-। সকালের সূর্যের এক ফালি হাসির সাথে মেধাবী শিক্ষার্থী ও প্রেমিকযুগলের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগল শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমায় শহীদ মিনারে। প্রায়সই সেখানে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়।

শহীদ মিনার ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত আইসিটি ভবনের পেছনটাও সম্প্রতি প্রেমিক-প্রেমিকাদের ডেটিং প্লেস হয়ে উঠেছে।

এসব অনৈতিক কাজ অবাধে চললেও প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসন নামমাত্র এসবের বিরুদ্ধে দুএকটি অভিযান পরিচালনা করলেও তেমন কাজে আসেনি।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া প্রেমিক যুগল নয়, বহিরাগত প্রেমিক যুগলদেরও ঢল নামে শাবিপ্রবির এ ক্যাম্পাসে। উজাড় করে দেয় একে অপরকে। পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন বা অন্য যে কোন উৎসবের দিনে প্রেমিক যুগলদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকা।

জানা যায়, প্রেমিকযুগলদের পদচারণা ছাড়াও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব বেড়েছে সংলগ্ন এলাকায়। মাঝে মাঝে ছিনতাইয়ের মত অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে থাকে শহীদ মিনারের আশপাশ ঘিরেই। দেয়াল প্রাচীর দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা সংরক্ষিত না থাকায় ছিনতাইকারীরা সহজেই ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।

শহীদ মিনারকে ঘিরে প্রেমিক-প্রেমিকাদের এমন কর্মকা-ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বািবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের এমন অবাধে প্রবেশ যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবাধে প্রবেশের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিভাষ নাথ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মেধার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে মানুষ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছি। এখান থেকে আমাদের এমন কিছু শেখা উচিত নয় যা সমাজের চোখে নিন্দনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি মুক্ত অঙ্গণে এরকম কর্মকা- সত্যিই দুঃখজনক। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীর আপত্তিকর চলাফেরায় হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী কর্তৃক এমন অশ্লীল কর্মকা- অত্র এলাকার তরুণ-তরুনীদের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জান চৌধুরীকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় শিগগির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।