ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তাঁর স্থান ইতিহাসে সুচিহ্নিত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২১:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৫
  • ২৪১ বার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ২৩ জুলাই দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসকে ‘সার্বজনীন’ করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন। পরদিনের পত্রিকায় তাঁর বক্তব্যটি যদি ভুলভাবে উদ্ধৃত না হয়ে থাকে (এবং আমরা আশা করি তা হয় নি), তিনি বলেছেন, ‘যত দোষত্রুটিই থাক, অনেকে (তাঁর) অনেক সমালোচনাও করতে পারে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুই এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা।’ তারপর গত ৪ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনাসভায় ভাষণ দিতে গিয়েও তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা কোনো তর্কবিতর্ক দেখতে চাই না। আমরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। বিভাজন চাই না।’ সৈয়দ আশরাফের এই বক্তব্যে তাঁর যে বাস্তবতাবোধ ও দায়িত্বসচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায় তার জন্য তাঁকে প্রথমেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। যদিও যে ইচ্ছা বা আকাক্সক্ষার কথা দলীয় মুখপাত্র হিসেবে তিনি দুদিনই তাঁর দলের অন্য কোনো কোনো নেতার উপস্থিতিতে ব্যক্ত করেছেন, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে তাঁরা নিজেরা কী-কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা জানার সুযোগ এ পর্যন্ত দেশবাসীর হয় নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দলীয় সম্পত্তি করে না রেখে, তাঁর নাম বা ভাবমূর্তিকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করে, দলমতের ঊর্ধ্বে তাঁর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার এই সদিচ্ছাকে বিলম্বে হলেও, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বোধোদয়ের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে। যাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন না, কিন্তু এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের প্রত্যক্ষদর্শী বা তার সম্পর্কে মোটামুটি অবহিত, তাঁরা সকলেই তাঁর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। এমন কি আওয়ামী লীগের ভেতরেও যাঁরা দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের স্বার্থ এবং জাতির ইতিহাসকে বিচার করার পক্ষপাতী তাঁরাও আশা করি এই ঘোষণায় স্বস্তি ও আনন্দ বোধ করবেন। যদিও সৈয়দ আশরাফের এই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি আমরা তাঁর দলের আর কোনো নেতা বা সমর্থক বুদ্ধিজীবীর বক্তৃতা-বিবৃতিতে এ যাবত পাই নি। এ ব্যাপারে প্রধান বিরোধী দলসহ অন্যদের প্রতিক্রিয়াহীনতা বা নীরবতাও আমাদের হতাশ করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তাঁর স্থান ইতিহাসে সুচিহ্নিত

আপডেট টাইম : ০৮:২১:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৫

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ২৩ জুলাই দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসকে ‘সার্বজনীন’ করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন। পরদিনের পত্রিকায় তাঁর বক্তব্যটি যদি ভুলভাবে উদ্ধৃত না হয়ে থাকে (এবং আমরা আশা করি তা হয় নি), তিনি বলেছেন, ‘যত দোষত্রুটিই থাক, অনেকে (তাঁর) অনেক সমালোচনাও করতে পারে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুই এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা।’ তারপর গত ৪ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনাসভায় ভাষণ দিতে গিয়েও তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা কোনো তর্কবিতর্ক দেখতে চাই না। আমরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। বিভাজন চাই না।’ সৈয়দ আশরাফের এই বক্তব্যে তাঁর যে বাস্তবতাবোধ ও দায়িত্বসচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায় তার জন্য তাঁকে প্রথমেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। যদিও যে ইচ্ছা বা আকাক্সক্ষার কথা দলীয় মুখপাত্র হিসেবে তিনি দুদিনই তাঁর দলের অন্য কোনো কোনো নেতার উপস্থিতিতে ব্যক্ত করেছেন, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে তাঁরা নিজেরা কী-কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা জানার সুযোগ এ পর্যন্ত দেশবাসীর হয় নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দলীয় সম্পত্তি করে না রেখে, তাঁর নাম বা ভাবমূর্তিকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করে, দলমতের ঊর্ধ্বে তাঁর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার এই সদিচ্ছাকে বিলম্বে হলেও, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বোধোদয়ের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে। যাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন না, কিন্তু এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের প্রত্যক্ষদর্শী বা তার সম্পর্কে মোটামুটি অবহিত, তাঁরা সকলেই তাঁর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। এমন কি আওয়ামী লীগের ভেতরেও যাঁরা দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের স্বার্থ এবং জাতির ইতিহাসকে বিচার করার পক্ষপাতী তাঁরাও আশা করি এই ঘোষণায় স্বস্তি ও আনন্দ বোধ করবেন। যদিও সৈয়দ আশরাফের এই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি আমরা তাঁর দলের আর কোনো নেতা বা সমর্থক বুদ্ধিজীবীর বক্তৃতা-বিবৃতিতে এ যাবত পাই নি। এ ব্যাপারে প্রধান বিরোধী দলসহ অন্যদের প্রতিক্রিয়াহীনতা বা নীরবতাও আমাদের হতাশ করেছে।