ঢাকা ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এইচএসসির ফলে ইংরেজি খাতা চ্যালেঞ্জের রেকর্ড, আবেদন অর্ধলাখ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সদ্য প্রকাশিত এইচএসসির ফলে ইংরেজি খাতা চ্যালেঞ্জের রেকর্ড হয়েছে। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে এবার ৫৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে বলে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

চলতি বছর এইচএসসির ফলে ধস নামে। পাসের হার কমে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে আসে। প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী তিন লাখ বিষয়ে নম্বর পরিবর্তনে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। আর পত্রের সংখ্যা বেড়েছে ৪৩ হাজারের বেশি। এবার সাধারণ আট বোর্ডে শুধু ইংরেজিতে আবেদন এসেছে ৫৫ হাজার ১২৪টি। আগামী ২২ আগস্ট এই পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।

আবেদন মূল্যায়ন করে দেখা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা বোর্ডে। এই বোর্ডে ৪৭ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী এক লাখ ৩৩ হাজার ২০০ খাতার ফল পরিবর্তন করার আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইংরেজিতে। ইংরেজির দুটি পত্রের আবেদনের সংখ্যা ১২ হাজার ৩২৫টি।

এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিকে ১৪ হাজার ৯৪৯ পরীক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাহবুব হাসান বলেন, ১৩টি বিষয়ে ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসব পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এরমধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৪৮৮টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন এসেছে।

এছাড়া বাংলা প্রথমপত্রে তিন হাজার ৬৮০, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৭৮০, ইংরেজি প্রথমপত্রে ছয় হাজার ৪৮৮, দ্বিতীয়পত্রে পাঁচ হাজার ২১১,

পদার্থ বিজ্ঞান প্রথমপত্রে তিন হাজার ৬৭, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৩০২, রসায়ন প্রথমপত্রে এক হাজার ৮৯৬, রসায়ন দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ১২০, জীববিজ্ঞান প্রথমপত্রে দুই হাজার ২১৯, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৪০, উচ্চতর গণিত প্রথমপত্রে দুই হাজার ২৯৩, দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ৮৫২ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে চার হাজার ১৭৮টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন হয়েছে।

এদিকে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ছয় হাজার ১২৬ জন আবেদনকারী ১৭ হাজার ৬৯৪টি পত্রের ফল পরিবর্তন করতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রের দুই হাজার ৪৮৩, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ১৩০, বাংলা প্রথমপত্রে এক হাজার ২৫৪, দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ২৫ এবং আইসিটিতে এক হাজার ৪৪৯টি আবেদন পড়েছে।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ১২ হাজার ৩১৪ জন আবেদনকারী ৩৬ হাজার ৪১৩টি পত্রের জন্য আবেদন করেছে। এই বোর্ডে আবেদনের শীর্ষে রয়েছে ইংরেজি। দুটি পত্রের মোট আবেদন পড়েছে ১১ হাজারের বেশি।

রাজশাহীতে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন ১২ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট ৩১ হাজার ২৪৫টি পত্রের আবেদন করেছেন। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে ১২ হাজার ৩৪৪টি।

যশোর বোর্ডে মোট ২৩ হাজার ৪৬৬টি পত্রের নম্বর বদলের জন্য আবেদন করেছেন ১১ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইংরেজিতে তিন হাজার ৭৪৪টি।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন ১০ হাজার ৪৬ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট ২১ হাজার ২৬টি পত্রের আবেদন করেছে। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে দুই হাজার ৬৪৪টি।

এবার সবচেয়ে খারাপ ফল করা কুমিল্লা বোর্ডের আবেদনের হিড়িক পড়েছে। পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এই বোর্ডে আবেদন করেছেন ১২ হাজার ৭০ জন শিক্ষার্থী। মোট ৩৩ হাজার ৭৩৩টি পত্রের আবেদন জমা পড়েছে। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে ১২ হাজার ৯৭০টি। আইসিটিতে দুই হাজার ৮১৫টি।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট ১৪ হাজার ৯১৭ জন আবেদনকারী ৪৮ হাজারের বেশি পত্রের ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১০ হাজার ২৪৩ জন আবেদনকারী ২১ হাজারের বেশি পত্রের ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে।

আবেদনের রেকর্ড হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আন্তঃবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, গত বছর থেকে শিক্ষার্থীরা জিপিএ দেখার পাশাপাশি নম্বরও দেখতে পারছে। আগে কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছে তা জানতে পারত না। এখন পত্র এবং এমসিকিউর আলাদা আলাদা নম্বর দেখতে পারছে।

তার মতে, সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছে পরবর্তী গ্রেডের কাছাকাছি নম্বর পাওয়ার শিক্ষার্থীরা। কেউ যদি ৭৮ বা ৭৯ বা দুটি পত্র মিলিয়ে ১৫৮ পেয়েছে তারাই ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে। তাদের ধারণা হয়ত নম্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে।

বোডের কর্মকর্তারা জানান, পুনঃনিরীক্ষণের মূল্যায়ন হওয়ার খাতার মোট ৪টি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি না। কোনো শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায় মূল্যায়ন হয় না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এইচএসসির ফলে ইংরেজি খাতা চ্যালেঞ্জের রেকর্ড, আবেদন অর্ধলাখ

আপডেট টাইম : ০১:১৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সদ্য প্রকাশিত এইচএসসির ফলে ইংরেজি খাতা চ্যালেঞ্জের রেকর্ড হয়েছে। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে এবার ৫৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে বলে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

চলতি বছর এইচএসসির ফলে ধস নামে। পাসের হার কমে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে আসে। প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী তিন লাখ বিষয়ে নম্বর পরিবর্তনে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। আর পত্রের সংখ্যা বেড়েছে ৪৩ হাজারের বেশি। এবার সাধারণ আট বোর্ডে শুধু ইংরেজিতে আবেদন এসেছে ৫৫ হাজার ১২৪টি। আগামী ২২ আগস্ট এই পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।

আবেদন মূল্যায়ন করে দেখা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা বোর্ডে। এই বোর্ডে ৪৭ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী এক লাখ ৩৩ হাজার ২০০ খাতার ফল পরিবর্তন করার আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইংরেজিতে। ইংরেজির দুটি পত্রের আবেদনের সংখ্যা ১২ হাজার ৩২৫টি।

এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিকে ১৪ হাজার ৯৪৯ পরীক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাহবুব হাসান বলেন, ১৩টি বিষয়ে ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসব পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এরমধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৪৮৮টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন এসেছে।

এছাড়া বাংলা প্রথমপত্রে তিন হাজার ৬৮০, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৭৮০, ইংরেজি প্রথমপত্রে ছয় হাজার ৪৮৮, দ্বিতীয়পত্রে পাঁচ হাজার ২১১,

পদার্থ বিজ্ঞান প্রথমপত্রে তিন হাজার ৬৭, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৩০২, রসায়ন প্রথমপত্রে এক হাজার ৮৯৬, রসায়ন দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ১২০, জীববিজ্ঞান প্রথমপত্রে দুই হাজার ২১৯, দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ৪০, উচ্চতর গণিত প্রথমপত্রে দুই হাজার ২৯৩, দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ৮৫২ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে চার হাজার ১৭৮টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন হয়েছে।

এদিকে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ছয় হাজার ১২৬ জন আবেদনকারী ১৭ হাজার ৬৯৪টি পত্রের ফল পরিবর্তন করতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রের দুই হাজার ৪৮৩, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রে দুই হাজার ১৩০, বাংলা প্রথমপত্রে এক হাজার ২৫৪, দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ২৫ এবং আইসিটিতে এক হাজার ৪৪৯টি আবেদন পড়েছে।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ১২ হাজার ৩১৪ জন আবেদনকারী ৩৬ হাজার ৪১৩টি পত্রের জন্য আবেদন করেছে। এই বোর্ডে আবেদনের শীর্ষে রয়েছে ইংরেজি। দুটি পত্রের মোট আবেদন পড়েছে ১১ হাজারের বেশি।

রাজশাহীতে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন ১২ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট ৩১ হাজার ২৪৫টি পত্রের আবেদন করেছেন। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে ১২ হাজার ৩৪৪টি।

যশোর বোর্ডে মোট ২৩ হাজার ৪৬৬টি পত্রের নম্বর বদলের জন্য আবেদন করেছেন ১১ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইংরেজিতে তিন হাজার ৭৪৪টি।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন ১০ হাজার ৪৬ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট ২১ হাজার ২৬টি পত্রের আবেদন করেছে। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে দুই হাজার ৬৪৪টি।

এবার সবচেয়ে খারাপ ফল করা কুমিল্লা বোর্ডের আবেদনের হিড়িক পড়েছে। পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এই বোর্ডে আবেদন করেছেন ১২ হাজার ৭০ জন শিক্ষার্থী। মোট ৩৩ হাজার ৭৩৩টি পত্রের আবেদন জমা পড়েছে। এই বোর্ডে ইংরেজিতে আবেদন পড়েছে ১২ হাজার ৯৭০টি। আইসিটিতে দুই হাজার ৮১৫টি।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট ১৪ হাজার ৯১৭ জন আবেদনকারী ৪৮ হাজারের বেশি পত্রের ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১০ হাজার ২৪৩ জন আবেদনকারী ২১ হাজারের বেশি পত্রের ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে।

আবেদনের রেকর্ড হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আন্তঃবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, গত বছর থেকে শিক্ষার্থীরা জিপিএ দেখার পাশাপাশি নম্বরও দেখতে পারছে। আগে কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছে তা জানতে পারত না। এখন পত্র এবং এমসিকিউর আলাদা আলাদা নম্বর দেখতে পারছে।

তার মতে, সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছে পরবর্তী গ্রেডের কাছাকাছি নম্বর পাওয়ার শিক্ষার্থীরা। কেউ যদি ৭৮ বা ৭৯ বা দুটি পত্র মিলিয়ে ১৫৮ পেয়েছে তারাই ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে। তাদের ধারণা হয়ত নম্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে।

বোডের কর্মকর্তারা জানান, পুনঃনিরীক্ষণের মূল্যায়ন হওয়ার খাতার মোট ৪টি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি না। কোনো শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায় মূল্যায়ন হয় না।