ফেরোমন পদ্ধতিতে সবজি চাষ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ও ছোনগাছা ইউনিয়নে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন এলাকার কৃষকরা। আধুনিক পদ্ধতির নাম ফেরোমন। ফেরোমন হচ্ছে একধরনের কীটপতঙ্গের দমন ফাঁদ, যাতে ক্ষতিকর পোকামাকড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হয়। পুরুষ পোকাকে আকৃষ্ট করার জন্য স্ত্রী পোকা কর্তৃক নিঃসৃত এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে। যা সেক্স ফেরোমন নামে পরিচিত। কুমড়াজাতীয় ফসলে এ পদ্ধতির কার্যকারিতার জন্য কৃষকদের মধ্যে এটি জাদুর ফাঁদ নামে পরিচিত।

গত বছরের তুলনায় এবার আরো ঝুঁকে পড়েছে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ। এবারও কৃষকরা ফেরোমন পদ্ধতিতে চাষ করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।

সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন সবজি বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি লাউ গাছের প্রতিটি ডগায় লাউ ঝুলছে। সারিবদ্ধভাবে লাউগুলো ঝুলছে ডগার সঙ্গে। সেটি যেন এক অপরূপ দৃশ্য। ফেরোমন পদ্ধতিতে লাউ ছাড়াও পেপে, আদা, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন, ফুলকপি, বাধাকপি ও শিমসহ আগাম জাতের সবজি চাষ করে থাকেন কৃষকরা।

ছোনগাছা গ্রামের কৃষক মুকুল বলেন, আজ থেকে দুই বছর আগে ধান চাষে ব্যস্ত ছিলাম এখন পোষায় না। ধান চাষে আয় ও ব্যয় প্রায় সমান। এখন সবজি চাষ করে কিছু পয়সার মুখ দেখছি।

কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বছর ২ বিঘা জমিতে লাউসহ বিভিন্ন সবজি লাগিয়েছেন তিনি। ২ বিঘা জমিতে চারা থেকে শুরু করে মাচা দেয়া পর্যন্ত তার খরচ পড়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রথমে লাউসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকার। দ্বিতীয়বার বিক্রি করেছেন ২০ হাজার টাকা।

আমিনপুর গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘ধান, পাট, গম, সবই চাষ করতাম। কিন্তু কোনটাতেই বেশি লাভের মুখ দেখা যায় না। সবজি চাষ করে এখন পকেটে সব সময় দুই চার পয়সা থাকে। এজন্যই এবার বন্যার পানি কমার পরই সবজি লাগিয়েছি।’

চকচন্ডী গ্রামের কৃষক মো. আজিজুল হক বলেন, এখানে টাটকা শাকসবজি প্রতিনিয়ত পাওয়া যায়। বিশেষ করে হাটবারের দিনে বেশি পাওয়া যায। এই গ্রামে আগে বেশি ধান চাষ করা হতো। কিন্তু লাভ কম হবার কারণে কৃষকরা এখন সবজি চাষের দিকে ঝুঁকেছে।

বিশেষ করে এখানে লাউয়ের ফলনটা বাম্পার হয়েছে বলে জানান তিনি।

সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ বলেন, এ উপজেলার অধিকাংশ মাটি এঁটেল ও দো-আশ। সবজি চাষের জন্য উপযোগী। তাই অধিক হারে নানা ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে।

তিনি আরো বলেন, উপজেলার কৃষি অফিস থেকে চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এর ফলে সবজি চাষে তারা সফলতা পেয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর