ঢাকা ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনা কতদূর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:১০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০১৭
  • ৩৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছয় খুনীকে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক ও আইনী প্রক্রিয়ায় চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। পলাতক দুই খুনীকে দেশে এনে রায় কার্যকরের জন্য ইতোমধ্যেই ল’ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪২ বছরেও সব খুনীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়ায় জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে পারছে না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সঙ্গে জনমনে যে প্রশ্নটি দেখা দিয়েছে তা হলো- বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনা কতদূর?

স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যার বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। জারি করা হয় এক বিশেষ অর্ডিনেন্স।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে। শুরু হয় বিচারকার্য। মাঝখানে আবারো গতি কমতে থাকে বিচার কার্যক্রমের। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও একেএম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

পলাতক সাত আসামির মধ্যে ২০০১ সালে আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা যান। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক অপর ছয় আসামিরা হলো- নূর চৌধুরী, আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। যেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখার একজন ডিআইজির নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি টিম গঠন করা করা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পলাতক খুনি নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আর চারজনের অবস্থান নিশ্চিত না হলেও সূত্র জানায়, এদের একজন পাকিস্তান একজন সেনেগাল ও অপর একজন জার্মানিতে আছেন। বাকি একজন লিবিয়া কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো এক দেশে অবস্থান করছেন।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক হাওর বার্তাকে বলেন, জাতির পিতার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ল’ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কূটনৈতিক ও আইনি দু’প্রক্রিয়াই আমরা অব্যাহত রেখেছি। দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে দেশে আনার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছে। হয়তো খুব দ্রুতই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যেতে পারে।

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, নূর চৌধুরীকে ফেরত আনতে কানাডার আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। যেখানে ইতিবাচক কথাবার্তা হয়েছে। তারাও নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে আগ্রহী। আইনী জটিলতায় এটা আটকে রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনা কতদূর

আপডেট টাইম : ০৮:১০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছয় খুনীকে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক ও আইনী প্রক্রিয়ায় চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। পলাতক দুই খুনীকে দেশে এনে রায় কার্যকরের জন্য ইতোমধ্যেই ল’ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪২ বছরেও সব খুনীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়ায় জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে পারছে না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সঙ্গে জনমনে যে প্রশ্নটি দেখা দিয়েছে তা হলো- বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনা কতদূর?

স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যার বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। জারি করা হয় এক বিশেষ অর্ডিনেন্স।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে। শুরু হয় বিচারকার্য। মাঝখানে আবারো গতি কমতে থাকে বিচার কার্যক্রমের। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও একেএম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

পলাতক সাত আসামির মধ্যে ২০০১ সালে আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা যান। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক অপর ছয় আসামিরা হলো- নূর চৌধুরী, আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। যেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখার একজন ডিআইজির নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি টিম গঠন করা করা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পলাতক খুনি নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আর চারজনের অবস্থান নিশ্চিত না হলেও সূত্র জানায়, এদের একজন পাকিস্তান একজন সেনেগাল ও অপর একজন জার্মানিতে আছেন। বাকি একজন লিবিয়া কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো এক দেশে অবস্থান করছেন।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক হাওর বার্তাকে বলেন, জাতির পিতার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ল’ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কূটনৈতিক ও আইনি দু’প্রক্রিয়াই আমরা অব্যাহত রেখেছি। দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে দেশে আনার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছে। হয়তো খুব দ্রুতই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যেতে পারে।

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, নূর চৌধুরীকে ফেরত আনতে কানাডার আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। যেখানে ইতিবাচক কথাবার্তা হয়েছে। তারাও নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে আগ্রহী। আইনী জটিলতায় এটা আটকে রয়েছে।