ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপেলের বীজ খেলে আপনার মৃত্যুও হতে পারে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭
  • ২১৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  শরীর গঠনে অন্য যে কোনো ফলের তুলনায় আপেলের অবদানকে একটু বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণও আপেল হল এমন একটি ফল যাতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লেবোনয়েড এবং ফাইবার রয়েছে। সেই সঙ্গে আছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নামের একটি উপাদান, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাহলে একবার ভাবুন একটা ফলে এমন কিছু ক্ষমতা রয়েছে যাকে কাজে লাগিয়ে আপনি পেটের রোগ থেকে ক্যান্সার, ছোট বড় যে কোনও শারীরিক সমস্যাকে দূরে রাখতে পারবেন। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আপেলের কদর এত বেশি কেন!

তবে ভয় একটা জায়গাতেই। আপেল খেতে খেতে ভুলবশত যদি বীজটা পেটে চলে যায় তাবহলেই সর্বনাশ। কারণ আপেলের বীজে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা নিমেষে প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একেবারে ঠিক শুনেছেন, সহজ কথায় আপেলের বীজ বাস্তবিকই বিষের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর। কী এমন আছে আপেল বীজে? আসলে এতে উপস্থিত অ্যামিগডেলিন নামের একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র তা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের সংস্পর্শে আসে। আর ঠিক তখনই অ্যামিগডেলিন নামের উপাদানটি চরিত্র বদল করে বিষাক্ত সায়ানাইডে পরিণত হয়। আর সায়ানাইড এমন একটি বিষ, যা নিমেষে মারাত্মক অসুস্থ করে তুলতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তো মৃত্যুর কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে। তাই সাবধান!

সায়ানাইড শরীর প্রবেশ করার পর কী করে?
ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে সায়ানাইড নামক বিষটির সঙ্গে সহজেই পরিচয় ঘটবে আপনার। মানুষের তৈরি সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষেদের তালিকায় সায়ানাইডের স্থান একেবারে উপরের দিকে। শুধু তাই নয়, এই বিষকে কাজে লাগিয়ে অনেক মহান ব্যক্তিত্ব নিজেদের প্রাণ দিয়েছিলন। যে তালিকায় গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস থেকে শুরু করে মিশরীয় সুন্দরি ক্লিয়োপেট্রার নামও রয়েছে। রয়েছে হিটলার এবং তার বান্ধবী ইভা ব্রাউন, হেনরিচ হিমলার সহ আরও অনেকে। এই বিষটি এত জনপ্রিয়তা পাওয়ার পিছনে একটাই কারণ রয়েছে, তা হল এটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মৃত্যু ঘটে। কষ্ট পাওয়ার কোনও সুযোগই মেলে না। এক কথায় ‘সুইট ডেথ’। সেই সায়ানাইডই রয়েছে আপালের বীজে।

প্রসঙ্গত, সায়ানাইড শরীরে প্রবেশ করার পর অক্সিজেন সাপ্লাই অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়ে আসে চোখের সামনে। তবে এমনটা ভাববেন না যে শুধু আপেলের বীজেই এই বিষ উপস্থিত রয়েছে। আরও কিছু ফলের শরীরেও এই বিষের সন্ধান পাওয়া গেছে। যেমন, চেরি, প্লাম, অ্যাপ্রিকট, পিচ প্রভৃতি। তবে আপেল ছাড়া যেসব ফলের উল্লেখ করা হল, সেই সব ফলের বীজের উপরে একটা পুরু আবরণ থাকে, যা অ্যামিগডেলিনকে হজমে সহায়ক অ্যাসিডের সংস্পর্শে আসতে দেয় না। ফলে সায়ানাইড তৈরি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।

অল্প পরিমাণ সায়ানাইডও কী প্রাণনাশক?
না, তা নয় যদিও। বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন প্রায় ২০০টা আপেলের বীজ শরীরে প্রবেশ করলে তবেই মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে তাই বলে ভাববেন না যে ১-২টা শরীরের প্রবেশ করলে কিছুই হবে না। এক্ষেত্রে মৃত্যু না ঘটলেও একাধিক শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন মাথা ঘোরা, মাথা যন্ত্রণা, বমি, পেটে যন্ত্রণা, দুর্বলতা প্রভৃতি।

তাহলে কতটা সায়ানাইড বিষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে?
এক্ষেত্রে বডি ওয়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তবে নির্দিষ্ট করে বললে ০.৫-৩.৫ গ্রাম প্রতি কেজি অনুসারে খেলে মৃত্যু ঘটবেই ঘটবে। প্রসঙ্গত, ১ গ্রাম আপেলের বীজে প্রায় ০.০৬-০.২৪ এম জি সায়ানাইড তৈরি হয়। এবার আপনি নিজেই হিসেব করে নিতে পারেন আপেলের বীজ কতটা ক্ষতি করতে পারে।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আপেলের বীজ খেলে আপনার মৃত্যুও হতে পারে

আপডেট টাইম : ১২:৩৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  শরীর গঠনে অন্য যে কোনো ফলের তুলনায় আপেলের অবদানকে একটু বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণও আপেল হল এমন একটি ফল যাতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লেবোনয়েড এবং ফাইবার রয়েছে। সেই সঙ্গে আছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নামের একটি উপাদান, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাহলে একবার ভাবুন একটা ফলে এমন কিছু ক্ষমতা রয়েছে যাকে কাজে লাগিয়ে আপনি পেটের রোগ থেকে ক্যান্সার, ছোট বড় যে কোনও শারীরিক সমস্যাকে দূরে রাখতে পারবেন। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আপেলের কদর এত বেশি কেন!

তবে ভয় একটা জায়গাতেই। আপেল খেতে খেতে ভুলবশত যদি বীজটা পেটে চলে যায় তাবহলেই সর্বনাশ। কারণ আপেলের বীজে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা নিমেষে প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একেবারে ঠিক শুনেছেন, সহজ কথায় আপেলের বীজ বাস্তবিকই বিষের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর। কী এমন আছে আপেল বীজে? আসলে এতে উপস্থিত অ্যামিগডেলিন নামের একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র তা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের সংস্পর্শে আসে। আর ঠিক তখনই অ্যামিগডেলিন নামের উপাদানটি চরিত্র বদল করে বিষাক্ত সায়ানাইডে পরিণত হয়। আর সায়ানাইড এমন একটি বিষ, যা নিমেষে মারাত্মক অসুস্থ করে তুলতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তো মৃত্যুর কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে। তাই সাবধান!

সায়ানাইড শরীর প্রবেশ করার পর কী করে?
ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে সায়ানাইড নামক বিষটির সঙ্গে সহজেই পরিচয় ঘটবে আপনার। মানুষের তৈরি সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষেদের তালিকায় সায়ানাইডের স্থান একেবারে উপরের দিকে। শুধু তাই নয়, এই বিষকে কাজে লাগিয়ে অনেক মহান ব্যক্তিত্ব নিজেদের প্রাণ দিয়েছিলন। যে তালিকায় গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস থেকে শুরু করে মিশরীয় সুন্দরি ক্লিয়োপেট্রার নামও রয়েছে। রয়েছে হিটলার এবং তার বান্ধবী ইভা ব্রাউন, হেনরিচ হিমলার সহ আরও অনেকে। এই বিষটি এত জনপ্রিয়তা পাওয়ার পিছনে একটাই কারণ রয়েছে, তা হল এটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মৃত্যু ঘটে। কষ্ট পাওয়ার কোনও সুযোগই মেলে না। এক কথায় ‘সুইট ডেথ’। সেই সায়ানাইডই রয়েছে আপালের বীজে।

প্রসঙ্গত, সায়ানাইড শরীরে প্রবেশ করার পর অক্সিজেন সাপ্লাই অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়ে আসে চোখের সামনে। তবে এমনটা ভাববেন না যে শুধু আপেলের বীজেই এই বিষ উপস্থিত রয়েছে। আরও কিছু ফলের শরীরেও এই বিষের সন্ধান পাওয়া গেছে। যেমন, চেরি, প্লাম, অ্যাপ্রিকট, পিচ প্রভৃতি। তবে আপেল ছাড়া যেসব ফলের উল্লেখ করা হল, সেই সব ফলের বীজের উপরে একটা পুরু আবরণ থাকে, যা অ্যামিগডেলিনকে হজমে সহায়ক অ্যাসিডের সংস্পর্শে আসতে দেয় না। ফলে সায়ানাইড তৈরি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।

অল্প পরিমাণ সায়ানাইডও কী প্রাণনাশক?
না, তা নয় যদিও। বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন প্রায় ২০০টা আপেলের বীজ শরীরে প্রবেশ করলে তবেই মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে তাই বলে ভাববেন না যে ১-২টা শরীরের প্রবেশ করলে কিছুই হবে না। এক্ষেত্রে মৃত্যু না ঘটলেও একাধিক শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন মাথা ঘোরা, মাথা যন্ত্রণা, বমি, পেটে যন্ত্রণা, দুর্বলতা প্রভৃতি।

তাহলে কতটা সায়ানাইড বিষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে?
এক্ষেত্রে বডি ওয়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তবে নির্দিষ্ট করে বললে ০.৫-৩.৫ গ্রাম প্রতি কেজি অনুসারে খেলে মৃত্যু ঘটবেই ঘটবে। প্রসঙ্গত, ১ গ্রাম আপেলের বীজে প্রায় ০.০৬-০.২৪ এম জি সায়ানাইড তৈরি হয়। এবার আপনি নিজেই হিসেব করে নিতে পারেন আপেলের বীজ কতটা ক্ষতি করতে পারে।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া