ঢাকা ১২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা মাতিয়ে গেলেন সুনিধি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০০:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০১৭
  • ৪০৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানী ঢাকার ব্যস্তটাকে কাটিয়ে তীব্র যানজট ঠেলে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির নবরাত্রি হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাজারো দর্শকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। চোখে না পড়ার কোন কারণ নেই, কেননা দেশে এবং দেশের বাইরের টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল অথবা কোন সিডি প্লেয়ারে যার গান শোনা মাত্রই শ্রোতারা দিশেহারা হয়ে যায়, বলিউডের সেই সাড়া জাগানো শিল্পী সুনিধি চৌহানের গান সরাসরি শুনবে সবাই, এ যেন এক সোনার হরিণ।

যেমন চেহারা, তেমনি তাঁর গানের গলা তেমনি গানের তালে তালে নাচ। পর্যাপ্ত মূল্যে টিকেট কিনতে না পারলেও সুনিধিকে এক ঝলক দেখার জন্য নবরাত্রি হল রুমের গেটের বাইরে অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

দ্যা গ্র্যান্ড মাস্টার ইভেন্টস বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এ কনসার্টটিতে দর্শকদের সামনে সরাসরি গান পরিবেশন করেন সুনিধি। সুনিধি ছাড়াও দেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী তাহসান খান, কর্নিয়া গান পরিবেশন করেন। এ ছাড়াও ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা আইরিন, ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ মেহজাবিন নাচ পরিবেশন করেন। নাচ গুলোর কোরিয়গ্রাফী করেন ইভান শাহারিয়ার সোহাগ।

অনুষ্ঠানে নাচে-গানে মুগ্ধতার পাশাপাশি শ্রোতাদের চিরাচারিত হাততালি, সিটি বাজানো, অহেতুক চিৎকার-চেচামেচি, তাল-বেতালের নাচ কোনটারই কমতি ছিল না।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ এ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে বিলম্ব হয়। বিলম্বের পরিসীমা অতিক্রম করতে থাকলে, শ্রোতাদের উৎকণ্ঠা রোধ করতে ৭টা ২৪মিনিটে কোন সাড়াশব্দ ছাড়াই মঞ্চে আসেন চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ইশরাত পায়েল। এই দুজন ডেকে নেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নওশীনকে।

রিয়াজ, নওশিন, পায়েল মিলে অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরুতেই ডেকে নেন শিল্পী রুমা তাপসীকে। রুমা মঞ্চে এসেই গাইতে শুরু করেন ‘সব কটি জানালা খুলে দাও না’, লতাজির হিন্দি গান ‘অ্যানকারিগা দোনকি চাহা মেরি বলো’ এবং ‘দামাদম মাসকোতো লান্দার’ দিয়ে তার পরিবেশনা শেষ করেন রুমা।

এর পর মঞ্চে নাচ নিয়ে আসেন মেহজাবিন ও তার দল। মেহজাবিনের পরপরই নাচ পরিবেশন করেন মিষ্টি মেয়ে চিত্রনায়িকা আইরিন। নাচের পর আবার ফিরলেন গানে এবার ক্ষুদে গানরাজ ২০১০ এর  নীলা  গাইলেন ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘বসন্ত বাতাশে সইগো’। নীলার পর মঞ্চে আসেন কর্নিয়া। কর্নিয়া তার পরিবেশনায় ‘তোর প্রতীক্ষায় আমি নিঃস্ব মাঝে যাই’, ‘লিন ওন’, ‘সুন্দরী কমলা নাচে’, ‘খাজা বাবা খাজা বাবা’, ‘ও সুন্দরী এখন আমি কি করি’ গান গুলো পরিবেশন করেন।

এর পরপরই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নওশীন ও রিয়াজের আমন্ত্রণে মঞ্চে হাজির হন জনপ্রিয় শিল্পী তাহসান। উঠেই গাইলেন জনপ্রিয় গান ‘সামনে তুমি দাঁড়িয়ে’। গানটির সঙ্গে অনেক দর্শকও গলা মেলায়। এরপরে ‘তুমি ছুঁয়ে দিলে এ মন’ গানটি গেয়ে শোনান তিনি। ততক্ষণে মিলনায়তন জুড়ে বিরাজ করছে অন্যরকম এক উত্তেজনা। আরো গেয়ে শোনালেন ‘বিন্দু আমি তোমায় ঘিরে, প্রেম তুমি, আলো আলো’। সে সময় দেশীয় চার জনের পরিবেশনায় গানগুলোর সঙ্গে তাল-বেতালে নাচতে থাকে দর্শকরা।

তারপর স্বাভাবিকভাবে সঞ্চালক তিনজন মিলে ঘোষণা করলেন ‘দ্য গ্ল্যামারাস, ওয়ান অ্যান্ড অনলি..’, বাকি কথাটুকু হারিয়ে গেল হাততালিতে-উচ্ছ্বাসের আড়ালে। মঞ্চের বিরাট পর্দায় একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যর ভিডিও শুরু হলো। তাতে সুনিধি নানান রূপের-রঙের। হঠাৎ করেই নিভে গেল মঞ্চের আলো। এরই মধ্যে উপস্থিত দর্শক আঁচ করতে পেরেছেন সুনিধি আসছেন। মঞ্চে আসার আগেই তার গলার স্বর শুনতে পেল হল রুমে থাকা দর্শকরা। আলো জ্বলে উঠতেই সুনিধি সুনিধির চিৎকারে ফেটে পড়ে পুরো হলরুম। ডানদিক থেকে খানিকটা দৌড়ের মতো সুনিধি মঞ্চের মাঝখানটায় এসে দাঁড়ান।

হাতে মাইক্রোফোন। মুখে হাসি। কালো পোশাকে আকর্ষণীয়া শিল্পী সুনিধি চৌহান। রাত ১০ টার কিছুক্ষণ পরপরই গাইতে শুরু করেন ‘ধুম মা চালে’। শেষ হতেই হঠাৎই দর্শকদের উচ্ছ্বাস আরা উত্তাল হয়। হাজার জোড়া চোখে ঘোর। সবাই একজনকেই দেখছে। সে সুনিধি। অপেক্ষা পেরিয়ে এবার গাইলেন `ডান্স পে চান্স মারিলে’।

সুনিধির লাইভের স্বাদ পেতে যারা আগেই ইউটিউব ঘেটে তার জনপ্রিয় গানগুলো এবং কিছু কনসার্ট দেখে আসছিলেন তাদের চোখে বিস্ময় আরো বেশী। এছাড়া ‘বে ইন্তে হার, ইস্কো সুফিয়ানা, মেরি মাহিয়া সানাম’ শুরু করলেন। দর্শকদের কণ্ঠে তখন ভেসে উঠল এই সব গান। তাদের সিটির জোর আরো বেড়ে গেল। দুলে দুলে নেচে ওঠাটা আরও প্রবল হতে থাকল। সুনিধি তো জানতেনই এদেশে তার কত ভক্ত। তাইতো গাইলেন ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’। এক কথায় আগুনে ছড়িয়ে দিলেন ঘি। এরপর একের পর এক গাইতে থাকলেন ‘কাহা মন চলে, সাত সামান্দার বল গায়া, তু এমি এমি লুটগায়া, কামালি কামালি, সায়াদ ফিরছি জানা, তেরি মাস্তি মাগান, আল্লা তু হায়িহে, ও সাকি সাকি, ডিং ডং দলে, ডিস্ক দিবানি’ এ ছাড়াও তার আরো জনপ্রিয় কিছু গান দর্শকদের উপহার দেন সুনিধি এবং ‘মাই নেইম ইস শিলা’ গানটির মধ্য দিয়ে শেষ করেন তার পরিবেশনা। আর এরই সাথে ঢাকার শ্রোতাদের সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে গেলেন ভারতীয় শিল্পী সুনিধি চৌহান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা মাতিয়ে গেলেন সুনিধি

আপডেট টাইম : ০৫:০০:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানী ঢাকার ব্যস্তটাকে কাটিয়ে তীব্র যানজট ঠেলে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির নবরাত্রি হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাজারো দর্শকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। চোখে না পড়ার কোন কারণ নেই, কেননা দেশে এবং দেশের বাইরের টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল অথবা কোন সিডি প্লেয়ারে যার গান শোনা মাত্রই শ্রোতারা দিশেহারা হয়ে যায়, বলিউডের সেই সাড়া জাগানো শিল্পী সুনিধি চৌহানের গান সরাসরি শুনবে সবাই, এ যেন এক সোনার হরিণ।

যেমন চেহারা, তেমনি তাঁর গানের গলা তেমনি গানের তালে তালে নাচ। পর্যাপ্ত মূল্যে টিকেট কিনতে না পারলেও সুনিধিকে এক ঝলক দেখার জন্য নবরাত্রি হল রুমের গেটের বাইরে অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

দ্যা গ্র্যান্ড মাস্টার ইভেন্টস বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এ কনসার্টটিতে দর্শকদের সামনে সরাসরি গান পরিবেশন করেন সুনিধি। সুনিধি ছাড়াও দেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী তাহসান খান, কর্নিয়া গান পরিবেশন করেন। এ ছাড়াও ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা আইরিন, ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ মেহজাবিন নাচ পরিবেশন করেন। নাচ গুলোর কোরিয়গ্রাফী করেন ইভান শাহারিয়ার সোহাগ।

অনুষ্ঠানে নাচে-গানে মুগ্ধতার পাশাপাশি শ্রোতাদের চিরাচারিত হাততালি, সিটি বাজানো, অহেতুক চিৎকার-চেচামেচি, তাল-বেতালের নাচ কোনটারই কমতি ছিল না।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ এ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে বিলম্ব হয়। বিলম্বের পরিসীমা অতিক্রম করতে থাকলে, শ্রোতাদের উৎকণ্ঠা রোধ করতে ৭টা ২৪মিনিটে কোন সাড়াশব্দ ছাড়াই মঞ্চে আসেন চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ইশরাত পায়েল। এই দুজন ডেকে নেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নওশীনকে।

রিয়াজ, নওশিন, পায়েল মিলে অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরুতেই ডেকে নেন শিল্পী রুমা তাপসীকে। রুমা মঞ্চে এসেই গাইতে শুরু করেন ‘সব কটি জানালা খুলে দাও না’, লতাজির হিন্দি গান ‘অ্যানকারিগা দোনকি চাহা মেরি বলো’ এবং ‘দামাদম মাসকোতো লান্দার’ দিয়ে তার পরিবেশনা শেষ করেন রুমা।

এর পর মঞ্চে নাচ নিয়ে আসেন মেহজাবিন ও তার দল। মেহজাবিনের পরপরই নাচ পরিবেশন করেন মিষ্টি মেয়ে চিত্রনায়িকা আইরিন। নাচের পর আবার ফিরলেন গানে এবার ক্ষুদে গানরাজ ২০১০ এর  নীলা  গাইলেন ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘বসন্ত বাতাশে সইগো’। নীলার পর মঞ্চে আসেন কর্নিয়া। কর্নিয়া তার পরিবেশনায় ‘তোর প্রতীক্ষায় আমি নিঃস্ব মাঝে যাই’, ‘লিন ওন’, ‘সুন্দরী কমলা নাচে’, ‘খাজা বাবা খাজা বাবা’, ‘ও সুন্দরী এখন আমি কি করি’ গান গুলো পরিবেশন করেন।

এর পরপরই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নওশীন ও রিয়াজের আমন্ত্রণে মঞ্চে হাজির হন জনপ্রিয় শিল্পী তাহসান। উঠেই গাইলেন জনপ্রিয় গান ‘সামনে তুমি দাঁড়িয়ে’। গানটির সঙ্গে অনেক দর্শকও গলা মেলায়। এরপরে ‘তুমি ছুঁয়ে দিলে এ মন’ গানটি গেয়ে শোনান তিনি। ততক্ষণে মিলনায়তন জুড়ে বিরাজ করছে অন্যরকম এক উত্তেজনা। আরো গেয়ে শোনালেন ‘বিন্দু আমি তোমায় ঘিরে, প্রেম তুমি, আলো আলো’। সে সময় দেশীয় চার জনের পরিবেশনায় গানগুলোর সঙ্গে তাল-বেতালে নাচতে থাকে দর্শকরা।

তারপর স্বাভাবিকভাবে সঞ্চালক তিনজন মিলে ঘোষণা করলেন ‘দ্য গ্ল্যামারাস, ওয়ান অ্যান্ড অনলি..’, বাকি কথাটুকু হারিয়ে গেল হাততালিতে-উচ্ছ্বাসের আড়ালে। মঞ্চের বিরাট পর্দায় একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যর ভিডিও শুরু হলো। তাতে সুনিধি নানান রূপের-রঙের। হঠাৎ করেই নিভে গেল মঞ্চের আলো। এরই মধ্যে উপস্থিত দর্শক আঁচ করতে পেরেছেন সুনিধি আসছেন। মঞ্চে আসার আগেই তার গলার স্বর শুনতে পেল হল রুমে থাকা দর্শকরা। আলো জ্বলে উঠতেই সুনিধি সুনিধির চিৎকারে ফেটে পড়ে পুরো হলরুম। ডানদিক থেকে খানিকটা দৌড়ের মতো সুনিধি মঞ্চের মাঝখানটায় এসে দাঁড়ান।

হাতে মাইক্রোফোন। মুখে হাসি। কালো পোশাকে আকর্ষণীয়া শিল্পী সুনিধি চৌহান। রাত ১০ টার কিছুক্ষণ পরপরই গাইতে শুরু করেন ‘ধুম মা চালে’। শেষ হতেই হঠাৎই দর্শকদের উচ্ছ্বাস আরা উত্তাল হয়। হাজার জোড়া চোখে ঘোর। সবাই একজনকেই দেখছে। সে সুনিধি। অপেক্ষা পেরিয়ে এবার গাইলেন `ডান্স পে চান্স মারিলে’।

সুনিধির লাইভের স্বাদ পেতে যারা আগেই ইউটিউব ঘেটে তার জনপ্রিয় গানগুলো এবং কিছু কনসার্ট দেখে আসছিলেন তাদের চোখে বিস্ময় আরো বেশী। এছাড়া ‘বে ইন্তে হার, ইস্কো সুফিয়ানা, মেরি মাহিয়া সানাম’ শুরু করলেন। দর্শকদের কণ্ঠে তখন ভেসে উঠল এই সব গান। তাদের সিটির জোর আরো বেড়ে গেল। দুলে দুলে নেচে ওঠাটা আরও প্রবল হতে থাকল। সুনিধি তো জানতেনই এদেশে তার কত ভক্ত। তাইতো গাইলেন ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’। এক কথায় আগুনে ছড়িয়ে দিলেন ঘি। এরপর একের পর এক গাইতে থাকলেন ‘কাহা মন চলে, সাত সামান্দার বল গায়া, তু এমি এমি লুটগায়া, কামালি কামালি, সায়াদ ফিরছি জানা, তেরি মাস্তি মাগান, আল্লা তু হায়িহে, ও সাকি সাকি, ডিং ডং দলে, ডিস্ক দিবানি’ এ ছাড়াও তার আরো জনপ্রিয় কিছু গান দর্শকদের উপহার দেন সুনিধি এবং ‘মাই নেইম ইস শিলা’ গানটির মধ্য দিয়ে শেষ করেন তার পরিবেশনা। আর এরই সাথে ঢাকার শ্রোতাদের সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে গেলেন ভারতীয় শিল্পী সুনিধি চৌহান।