ওই যুবকেরা আল্লাহু আকবর বলছিল আর নিলয়কে কোপাচ্ছিল

ব্লগার ব্লগার নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়ের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় তার স্ত্রী আশামনি বলেছেন, ওই যুবকেরা আল্লাহু আকবর বলছিল আর নিলয়কে কোপাচ্ছিল। নিলয় একটি কথা বলারও সুযোগ পায়নি।
রাজধানীর পূর্ব গোড়ানের ৮ নম্বর গলির ১৬৭ নম্বর বাসার পঞ্চমতলায় ব্লগার নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়কে যখন কয়েকজন যুবক উপর্যুপরি কোপাচ্ছিলেন, বারান্দায় দাঁড়িয়ে তার স্ত্রী তখন প্রাণপণে চিৎকার করছেন- বাঁচাও, বাঁচাও বলে।
নিজের স্বামীর হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক যে বর্ণনা আশামনি দিয়েছেন তা থেকে এ চিত্রই উঠে এসেছে।
আশামনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে আমার স্বামী বাজার থেকে ফিরে ড্রয়িংরুমে ল্যাপটপ নিয়ে বসেন। তখন এক যুবক এসে কলিংবেল বাজায়। আমি নিজেই দরজা খুলে দেই। বাসা ভাড়ার কথা বলে ঘর দেখার নাম করে ওই যুবক বাসার ভেতরে ঢোকে। ওই সময় আমার ছোট বোন তন্বী রান্না ঘরে তরকারি কাটছিল।
তিনি বলেন, আমরা তো বাসা ছাড়ছি না। বাড়িওয়ালাকেও তো এ বিষয়ে কিছু জানাইনি। তখন ওই যুবক বলে- বাড়িওয়ালাই আমাকে দেখে যেতে বলেছেন। সে তখন হাতে থাকা মোবাইলে কী যেন লিখছিল। বিষয়টি আমার স্বামীকে জানাতে ড্রয়িংরুমে গেলে এরইমধ্যে আরো তিন যুবক বাসায় ঢোকে। তারা ভেতরে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেয়। আর তন্বী রান্না ঘরে আটকিয়ে রাখে।
খুনের বর্ণনা দিয়ে আশা বলেন, তিনজনের হাতে রামদা ও একজনের হাতে পিস্তল ছিল। তাদের একজনের দাড়ি ছিল। সেই যুবকই প্রথমে নিলয়কে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। প্রথম কোপ দেয়ার পরই আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তারা বারান্দায় আটকে রাখে। একইভাবে অন্য রুম থেকে তন্বীকেও এখানে নিয়ে আসে। এরপর একের পর এক কোপ দিতে থাকে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকে পালিয়ে যায়।
হত্যার সময় কেউ এগিয়ে আসেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি বারান্দা দিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলেও কেউ তাকে বাঁচাতে আসেনি। এমনকি হত্যাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ মিনিট পর দরজা খুলেছে প্রতিবেশিরা।
আশা আরো বলেন, ওই যুবকেরা আল্লাহু আকবর বলছিল আর নিলয়কে কোপাচ্ছিল। নিলয় একটি কথা বলারও সুযোগ পায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর