ঢাকা ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

কিশোরগঞ্জের নামকরণের পিছনের কথা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অগাস্ট ২০১৫
  • ৪৭৫ বার

কিশোরগঞ্জের নামকরনের ইতিহাস নিয়ে রয়েছে নানা মত। ঐতিহাসিকগণ এবিষয়ে নিশ্চিত কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। রেনেলের মানচিত্রে (১৭৮১) বা জেলা হিসেবে ময়মনসিংহ প্রতিষ্ঠাকালে (১৭৮৭) কারেক্টরের রিপোর্টে কিশোরগঞ্জ নামের কোন উল্লেখ পাওয়া যায় না।এমনকি ১৮৪৫ সালে জমালপুর মহকুমার সৃষ্টি হওয়ার সময়েও নয়।জানা যায়, এখনকার কিশোরগঞ্জ তৎকালীন জোয়ার হোসেনপুর পরগনার অন্তর্গত ছিল।কিন্তু কালক্রমে উক্ত পরগনা নাটোরের মহারাজার জমীদারীর অন্তভূক্ত হয়ে যায়। তখন উক্ত এলাকার বিখ্যাত প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিক নাটোরের মহারাজার সাথে ব্যবসার সূত্রে যোগাযোগ হয়।নাটোরের মহারাজার এ এলাকার কয়েকটি তালুক দেবসেবার জন্য কৃষ্ণদাস প্রামাণিককে “লাখেরাজ” দেন। কিন্তু ১৭৯৩ খীষ্ট্রাব্দে নাটোরের মহারাজার জমিদারী নিলাম হয়ে গেলে খাঁজে কাফরে আরাতুন নামে এক আর্মেনীয় ব্যবসায়ী তা কিনে নেন।এতে আর্মেনীয় ব্যবসায়ী আরাতুনের সাথে প্রামাণিকদের দীর্ঘসময় মোকদ্দমা চলে। এই প্রসঙ্গে শ্রীকেদারনাথ মজুমদার লিখেছেন, “এই জোয়ারের কতিপয় বৃহৎ বৃহৎ মহাল লইয়া আরাতুনের সহিত কাটাখালির(কিশোরগঞ্জ) সুপ্রসিদ্ধ পরামাণিক দিগের বহুদিন বিবাদ চলিয়াছিল। এথেকে দেখা যায় যে, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগেও কিশোরগঞ্জ ‘কাটাখালি’ নামে সমধিক পরিচিত ছিল।আবার জেমস টেলরের বর্ণনায় এলাকাটিকে জঙ্গলবাড়ি নামে উল্লেখ করা হয়েছে।তবে এই নামকরণের উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞজনদের মত ও স্থানীয়দের ধারণা থেকে অনুমান করা যায় যে, বর্তমান কিশোরগঞ্জের বত্রিশ এলাকার ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের ষষ্ঠ ছেলে এবং প্রামাণিকদের কীর্তি একুশ রত্নের স্রষ্ঠা নন্দকিশোর এর ‘কিশোর’ ও তাঁরই প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় গঞ্জের (হাট) ‘গঞ্জ’ যোগ করে কিশোরগঞ্জ –এর নামকরণ করা হয়েছে। প্রামাণিকদের পারিবারিক বংশললিতা অনুসারে নন্দকিশোর প্রামাণিকের আনুমানিক সময়-কাল ১৭৫০-১৮১০ খিষ্ট্রাব্দ।এই হিসাব অনুযায়ী তাঁর শেষ সময়ে বা মৃত্যুর পর তাঁর নামানুসারে এলাকাটির নামকরণ হওয়া স্বাভাবিক। প্রামাণিকদের যে বিরাট প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল তা স্পষ্টতঃই জানা যায়। বাংলাদেশের বহু এলাকার নামকরণ ঐ এলাকার কোন বিশেষ ব্যক্তির নামানুসারে করা হয়েছে। জেলা গেজেটিয়ারে অবশ্য বলা হয়েছে যে, প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের ৭ ছেলের একজন ব্রজকিশোর এবং সম্ভবতঃ তাঁর নামানুসারেই ‘কিশোরগঞ্জ’ এর নামকরণ করা হয়েছে। তবে প্রথম মতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদারের নামের সাথেও ‘কিশোর’ যোগ হতে দেখা যায় এবং সে খেকেও কিশোরগঞ্জের নামকরণের কথা কেউ কেউ বললেও তা ঠিক নয়, কারণ এ এলাকাটি ঐ জমীদারের জমিদারীর অন্তর্গত ছিল না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

কিশোরগঞ্জের নামকরণের পিছনের কথা

আপডেট টাইম : ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অগাস্ট ২০১৫

কিশোরগঞ্জের নামকরনের ইতিহাস নিয়ে রয়েছে নানা মত। ঐতিহাসিকগণ এবিষয়ে নিশ্চিত কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। রেনেলের মানচিত্রে (১৭৮১) বা জেলা হিসেবে ময়মনসিংহ প্রতিষ্ঠাকালে (১৭৮৭) কারেক্টরের রিপোর্টে কিশোরগঞ্জ নামের কোন উল্লেখ পাওয়া যায় না।এমনকি ১৮৪৫ সালে জমালপুর মহকুমার সৃষ্টি হওয়ার সময়েও নয়।জানা যায়, এখনকার কিশোরগঞ্জ তৎকালীন জোয়ার হোসেনপুর পরগনার অন্তর্গত ছিল।কিন্তু কালক্রমে উক্ত পরগনা নাটোরের মহারাজার জমীদারীর অন্তভূক্ত হয়ে যায়। তখন উক্ত এলাকার বিখ্যাত প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিক নাটোরের মহারাজার সাথে ব্যবসার সূত্রে যোগাযোগ হয়।নাটোরের মহারাজার এ এলাকার কয়েকটি তালুক দেবসেবার জন্য কৃষ্ণদাস প্রামাণিককে “লাখেরাজ” দেন। কিন্তু ১৭৯৩ খীষ্ট্রাব্দে নাটোরের মহারাজার জমিদারী নিলাম হয়ে গেলে খাঁজে কাফরে আরাতুন নামে এক আর্মেনীয় ব্যবসায়ী তা কিনে নেন।এতে আর্মেনীয় ব্যবসায়ী আরাতুনের সাথে প্রামাণিকদের দীর্ঘসময় মোকদ্দমা চলে। এই প্রসঙ্গে শ্রীকেদারনাথ মজুমদার লিখেছেন, “এই জোয়ারের কতিপয় বৃহৎ বৃহৎ মহাল লইয়া আরাতুনের সহিত কাটাখালির(কিশোরগঞ্জ) সুপ্রসিদ্ধ পরামাণিক দিগের বহুদিন বিবাদ চলিয়াছিল। এথেকে দেখা যায় যে, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগেও কিশোরগঞ্জ ‘কাটাখালি’ নামে সমধিক পরিচিত ছিল।আবার জেমস টেলরের বর্ণনায় এলাকাটিকে জঙ্গলবাড়ি নামে উল্লেখ করা হয়েছে।তবে এই নামকরণের উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞজনদের মত ও স্থানীয়দের ধারণা থেকে অনুমান করা যায় যে, বর্তমান কিশোরগঞ্জের বত্রিশ এলাকার ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের ষষ্ঠ ছেলে এবং প্রামাণিকদের কীর্তি একুশ রত্নের স্রষ্ঠা নন্দকিশোর এর ‘কিশোর’ ও তাঁরই প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় গঞ্জের (হাট) ‘গঞ্জ’ যোগ করে কিশোরগঞ্জ –এর নামকরণ করা হয়েছে। প্রামাণিকদের পারিবারিক বংশললিতা অনুসারে নন্দকিশোর প্রামাণিকের আনুমানিক সময়-কাল ১৭৫০-১৮১০ খিষ্ট্রাব্দ।এই হিসাব অনুযায়ী তাঁর শেষ সময়ে বা মৃত্যুর পর তাঁর নামানুসারে এলাকাটির নামকরণ হওয়া স্বাভাবিক। প্রামাণিকদের যে বিরাট প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল তা স্পষ্টতঃই জানা যায়। বাংলাদেশের বহু এলাকার নামকরণ ঐ এলাকার কোন বিশেষ ব্যক্তির নামানুসারে করা হয়েছে। জেলা গেজেটিয়ারে অবশ্য বলা হয়েছে যে, প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের ৭ ছেলের একজন ব্রজকিশোর এবং সম্ভবতঃ তাঁর নামানুসারেই ‘কিশোরগঞ্জ’ এর নামকরণ করা হয়েছে। তবে প্রথম মতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদারের নামের সাথেও ‘কিশোর’ যোগ হতে দেখা যায় এবং সে খেকেও কিশোরগঞ্জের নামকরণের কথা কেউ কেউ বললেও তা ঠিক নয়, কারণ এ এলাকাটি ঐ জমীদারের জমিদারীর অন্তর্গত ছিল না।