হাওর বার্তা ডেস্কঃ নান্দনিক গল্পকার হুমায়ূন আহমেদ। শুধু গল্প-উপন্যাস লেখার মধ্যেই সীমবদ্ধ ছিলেন না। একাধারে নির্মাতা, নাট্যকার এবং গীতিকারও ছিলেন তিনি। নাটক ও সিনেমা নির্মাণে তৈরি করেছেন আলাদা ধারা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক নির্মাণ করলেও মাত্র আটটি ছবি নির্মাণ করেছেন তিনি।
তার নির্মিত নাটক ও ছবিতে অভিনয় করে অনেক শিল্পীই দর্শকদের কাছে তারকা পরিচিতি পেয়েছেন। বুধবার ছিল এ লেখকের প্রয়াণ দিবস। বিশেষ এ দিনটিতে তার গল্প ও পরিচালনায় অভিনয় করা বেশ কয়েকজন নায়িকা প্রিয় এ মানুষটিকে স্মরণ করে জানিয়েছেন নিজেদের অনুভূতির কথা।
বিপাশা হায়াত
হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে আলোচিত ছবি হচ্ছে ‘আগুনের পরশমণি’। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। তার নির্মিত প্রথম ছবি এটি। এ ছবিতেই নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন বিপাশা হায়াত। বিপাশারও এটি প্রথম ছবি। এতে রাত্রি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। দেশের গেরিলা যোদ্ধার প্রতি রাত্রির প্রেম, যুদ্ধের সময় গেরিলা যোদ্ধাদের প্রতি সাধারণ মানুষের মমতা ও সমর্থনের প্রতিফলন ফুটে উঠেছিল এ ছবিতে। প্রিয় এ চলচ্চিত্রকারকে নিয়ে বিপাশা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মতো এমন মেধাবী মানুষ খুব কম দেখা যায়। সৌভাগ্যক্রমে তার প্রথম চলচ্চিত্র আমারও প্রথম চলচ্চিত্র। প্রথম চলচ্চিত্রেই তিনি আমার কাছ থেকে যেভাবে অভিনয় বের করে নিয়ে এসেছেন সেটি আমাকেও ভাবাত। তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কখনই ভোলার নয়। তার পরিচালিত প্রথম ছবিতে অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি।
মেহের আফরোজ শাওন
হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিনি শাওন। সংসার জীবনের পাশাপাশি তার প্রতিটি সৃষ্টিতেও জড়িয়ে রেখেছেন নিজেকে। হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ৮টি ছবির মধ্যে ৪টির নায়িকাই ছিলেন মেহের আফরোজ শাওন। ছবিগুলো হচ্ছে- ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’ ও ‘শ্যামল ছায়া’। হুমায়ূন আহমেদ তার জীবনের পুরো জায়গাটাই দখল করে আছেন। প্রয়াত এ লেখক প্রসঙ্গে শাওন বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের জননী ডকুমেন্টারি করতেই তার সঙ্গে প্রথম সরাসরি পরিচয় হয়। এরপর তো তার সঙ্গে দীর্ঘ জার্নি। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে হুমায়ূনের তুলনা তিনি নিজেই। তার উপস্থাপনা শক্তি ছিল প্রখর। সহজ একটা বিষয়কে আকর্ষণীয় করে পর্দায় দেখাতে পারতেন তিনি। আর এটাই ছিল তার বৈশিষ্ট্য।
তানিয়া আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ নামের ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালে। এতে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তানিয়া আহমেদ। মহান এ লেখকের চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যার একটি ছবি নির্মাণ করার সময় প্রতিটি চরিত্র নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। আর এ জন্য যারাই তার সঙ্গে কাজ করেছেন সবাই অনেক কিছু শিখেছেন। আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি যে, স্যারের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছিলাম।’
বিদ্যা সিনহা মিম
লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘আমার আছে জল’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান বিদ্যা সিনহা মিম। ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। এতে দিলশাদ চরিত্রে দেখা যায় তাকে। তিনি বলেন, ‘স্যারের ছবির নায়িকা হওয়া আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। একজন নির্মাতা হিসেবে স্যারকে যতটুকু দেখেছি তাতে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো পথ নেই। তাকে সব সময় আমার কাছে গল্পের মানুষ মনে হতো। গল্পে যেমন চরিত্র পড়ি তেমনই একটা চরিত্র ছিলেন তিনি আমার কাছে।