ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার সেই উপদেষ্টার কারাদণ্ড মার্কিন আদালতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০১৭
  • ৪২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ সরদার সাদী ওরফে সর্দার ফারুককে (৪২) চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন মার্কিন আদালত। মঙ্গলবার ফ্লোরিডার মিডল ডিসট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টের বিচারপতি গ্রেগরী প্রেসনেল এ রায় দেন। একইসাথে সাদীকে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতিও প্রদান করা হয়েছে।

ফেডারেল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল সাদীর ২৮তম গ্রেফতার। চেক জালিয়াতি, ব্যাংকের সাথে প্রতারণা, বিভিন্ন জনের সাথে ঠকবাজি ইত্যাদি মামলায় এর আগে ২০০৯ সালের ৫ মার্চ একই আদালতে সাদীর ৪০ মাসের কারাদণ্ড হয়। এই দণ্ডভোগের পর তাকে ৫ বছরের সুপারভাইজড রিলিজের (কর্তৃপক্ষের নজরদারি) তথা প্রবেশনে থাকার অনুমোদন দেন আদালত।

সর্বশেষ মামলায় প্রবেশনের বিধি চরমভাবে লঙ্ঘনের জন্যে সাদীকে গত ১৭ মে গ্রেফতার করা হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হিলে বিএনপির পক্ষে দেন-দরবার করতে যাবার সময় এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে।

২০১৫ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বিএনপির পক্ষে ভুয়া বিবৃতি তৈরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর বিএনপি নেতাদের চাপে সাদীসহ দুজনকে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং বিদেশ বিষয়ক বিশেষ দূতের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

মামলার বিবরণে আরো জানা গেছে, ২০০৯ সালের মার্চে ৪০ মাসের দণ্ডসহ সাদীকে ২ লাখ ৩৪ হাজার ২২৯ ডলার ৭৫ সেন্ট জরিমানা করা হয়। বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এই অর্থ সাদী আত্মসাত করেন বলে আদালতে স্বীকার করেন তিনি। সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু গত ৬ বছরের মধ্যে সাড়ে ৩ বছরের মত তিনি জেলে ছিলেন। এরপর প্রবেশন ভঙ্গ করে নিউইয়র্কে বিএনপির মিটিং-মিছিলের সময় অতিবাহিত করায় ওয়ার্ক পারমিট নবায়নে সক্ষম হননি। তাই কোন কাজও করতে পারেননি বলে আদালতের অবজার্ভেশন রয়েছে। তাই সেই অর্থ সাদী কীভাবে পরিশোধ করবেন সেটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে সর্বশেষ মন্তব্যে মাননীয় আদালত উল্লেখ করেছেন।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, সাদী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন ১৯৯৬ সালে। এরপরই ফ্লোরিডার অরলান্ডোতে বসতি গড়েন। সেখানেই তিনি মার্সিয়া পবেলকে বিয়ে করেছেন। তাদের একটি কন্যা রয়েছে। তার নাম সারাহ পবেল ফারুক।

২০০১ সাল থেকেই মার্সিয়ার সাথে বনিবনা হচ্ছিল না সাদীর। এরপর ২০০৮ সালে তালাক হয় তাদের। সে সময় থেকেই সাদীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। কারণ, তার বৈধ স্ট্যাটাস নেই। সে অনুযায়ী, ২০০৯ সালের মার্চে প্রদত্ত দণ্ডভোগের পর ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টরা তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি হাতে নিলেও সে সময় ‘জাতিসংঘ কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার’র আওতায় ইমিগ্রেশন কোর্ট তার এসাইলাম মঞ্জুর করে। তবে ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে সাদী ওই দণ্ডভোগের পর মুক্তি পাবার সাথে সাথে তাকে আইসের তত্ত্বাবধানে প্রবেশনে দেয়া হয়। সে সময় সাদী থাকতেন ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্সে। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাদী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়িয়ে নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বসতি গড়েন বলেও আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়। এ জন্যেই তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়েছিল। এটি কার্যকর করা হয় গত ১৭ মে। সেই থেকে সাদীকে কারাগারে রাখা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

খালেদা জিয়ার সেই উপদেষ্টার কারাদণ্ড মার্কিন আদালতে

আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ সরদার সাদী ওরফে সর্দার ফারুককে (৪২) চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন মার্কিন আদালত। মঙ্গলবার ফ্লোরিডার মিডল ডিসট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টের বিচারপতি গ্রেগরী প্রেসনেল এ রায় দেন। একইসাথে সাদীকে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতিও প্রদান করা হয়েছে।

ফেডারেল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল সাদীর ২৮তম গ্রেফতার। চেক জালিয়াতি, ব্যাংকের সাথে প্রতারণা, বিভিন্ন জনের সাথে ঠকবাজি ইত্যাদি মামলায় এর আগে ২০০৯ সালের ৫ মার্চ একই আদালতে সাদীর ৪০ মাসের কারাদণ্ড হয়। এই দণ্ডভোগের পর তাকে ৫ বছরের সুপারভাইজড রিলিজের (কর্তৃপক্ষের নজরদারি) তথা প্রবেশনে থাকার অনুমোদন দেন আদালত।

সর্বশেষ মামলায় প্রবেশনের বিধি চরমভাবে লঙ্ঘনের জন্যে সাদীকে গত ১৭ মে গ্রেফতার করা হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হিলে বিএনপির পক্ষে দেন-দরবার করতে যাবার সময় এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে।

২০১৫ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বিএনপির পক্ষে ভুয়া বিবৃতি তৈরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর বিএনপি নেতাদের চাপে সাদীসহ দুজনকে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং বিদেশ বিষয়ক বিশেষ দূতের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

মামলার বিবরণে আরো জানা গেছে, ২০০৯ সালের মার্চে ৪০ মাসের দণ্ডসহ সাদীকে ২ লাখ ৩৪ হাজার ২২৯ ডলার ৭৫ সেন্ট জরিমানা করা হয়। বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এই অর্থ সাদী আত্মসাত করেন বলে আদালতে স্বীকার করেন তিনি। সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু গত ৬ বছরের মধ্যে সাড়ে ৩ বছরের মত তিনি জেলে ছিলেন। এরপর প্রবেশন ভঙ্গ করে নিউইয়র্কে বিএনপির মিটিং-মিছিলের সময় অতিবাহিত করায় ওয়ার্ক পারমিট নবায়নে সক্ষম হননি। তাই কোন কাজও করতে পারেননি বলে আদালতের অবজার্ভেশন রয়েছে। তাই সেই অর্থ সাদী কীভাবে পরিশোধ করবেন সেটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে সর্বশেষ মন্তব্যে মাননীয় আদালত উল্লেখ করেছেন।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, সাদী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন ১৯৯৬ সালে। এরপরই ফ্লোরিডার অরলান্ডোতে বসতি গড়েন। সেখানেই তিনি মার্সিয়া পবেলকে বিয়ে করেছেন। তাদের একটি কন্যা রয়েছে। তার নাম সারাহ পবেল ফারুক।

২০০১ সাল থেকেই মার্সিয়ার সাথে বনিবনা হচ্ছিল না সাদীর। এরপর ২০০৮ সালে তালাক হয় তাদের। সে সময় থেকেই সাদীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। কারণ, তার বৈধ স্ট্যাটাস নেই। সে অনুযায়ী, ২০০৯ সালের মার্চে প্রদত্ত দণ্ডভোগের পর ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টরা তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি হাতে নিলেও সে সময় ‘জাতিসংঘ কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার’র আওতায় ইমিগ্রেশন কোর্ট তার এসাইলাম মঞ্জুর করে। তবে ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে সাদী ওই দণ্ডভোগের পর মুক্তি পাবার সাথে সাথে তাকে আইসের তত্ত্বাবধানে প্রবেশনে দেয়া হয়। সে সময় সাদী থাকতেন ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্সে। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাদী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়িয়ে নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বসতি গড়েন বলেও আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়। এ জন্যেই তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়েছিল। এটি কার্যকর করা হয় গত ১৭ মে। সেই থেকে সাদীকে কারাগারে রাখা হয়েছে।