ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ধস : নববধূকে রেখেই না ফেরার দেশে ক্যাপ্টেন তানভীর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭
  • ৬২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিয়ে করেছেন এখনো এক বছর হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবিতে এখনও সতেজ। বলছি ক্যাপ্টেন তানভীর সালাম শান্ত’র কথা।

প্রতিটি ছবিতে হাতে হাত রেখে হাস্যোজ্জ্বল স্বামী-স্ত্রী। হয়তো কথা ছিল জীবনভর একসঙ্গে চলার। স্ত্রীর হাতের মেহেদির রঙ হয়তো এখনও মুছে যায়নি। কিন্তু বছর না পেরোতেই কথা রাখেননি তানভীর। নবপরিণীতাকে একা রেখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

গতকাল মঙ্গলবার পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে যান উদ্ধার অভিযানে। কিন্তু ফেরা হয়নি তার। মাটিচাপা পড়ে তারও মৃত্যু হয়।

পটুয়াখালী জেলার বাউফলের ছেলে তানভীর ২০০৯ সালে যোগদান করেন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে। ৬৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি

কোর্সের মাধ্যমে কমিশন লাভ করেন তিনি। পরে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় পদোন্নতি পান। বিয়ে করেন ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তানভীর ও তার স্ত্রীর ফেসবুক ওয়ালে বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি এখনও সজীব। তানভীরের প্রোফাইল ছবিও তার বিয়ের ছবি।

তার ফেসবুকের কাভার ফটোতে আছে পবিত্র কুরআনের সুরা হাশরের একটি আয়াতের অনুবাদ। যেখানে লেখা আছে, ‘যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তাভাবনা করে।’

তার স্ত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টুকটুক নামে। সেখানেও দুজনের নানা রঙের রঙিন দিনগুলোর সব ছবি শোভা পাচ্ছে, যা এখন দেখে প্রতিনিয়ত দগ্ধ হবেন নববধূ। টুকটুকের প্রোফাইলেও রয়েছে দুজনের ছবি।

গত ২১ সেপ্টেম্বর টুকটুকের হাতে রিং পরানোর ছবি পোস্ট করেছেন টুকটুক। গত ৭ জানুয়ারি সমুদ্র পাড়ের কোনো হোটেলের সুইমিংপুলে তোলা দুজনের একটি ছবি পোস্ট করেছেন টুকটুক।

ওই ছবির ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘লাভ অব মাই লাইফ’। ওয়ালে রয়েছে দুজনের হাস্যোজ্জ্বল একাধিক ছবি। আজ থেকে যা স্মৃতির পাতায় স্থান পাবে।

প্রসঙ্গত, টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরু করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।

দুদিনের টানা বর্ষণে রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে এবং গাছ চাপায় ১৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন সেনা সদস্যও রয়েছেন। জাগো নিউজ

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাহাড়ধস : নববধূকে রেখেই না ফেরার দেশে ক্যাপ্টেন তানভীর

আপডেট টাইম : ০৯:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিয়ে করেছেন এখনো এক বছর হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবিতে এখনও সতেজ। বলছি ক্যাপ্টেন তানভীর সালাম শান্ত’র কথা।

প্রতিটি ছবিতে হাতে হাত রেখে হাস্যোজ্জ্বল স্বামী-স্ত্রী। হয়তো কথা ছিল জীবনভর একসঙ্গে চলার। স্ত্রীর হাতের মেহেদির রঙ হয়তো এখনও মুছে যায়নি। কিন্তু বছর না পেরোতেই কথা রাখেননি তানভীর। নবপরিণীতাকে একা রেখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

গতকাল মঙ্গলবার পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে যান উদ্ধার অভিযানে। কিন্তু ফেরা হয়নি তার। মাটিচাপা পড়ে তারও মৃত্যু হয়।

পটুয়াখালী জেলার বাউফলের ছেলে তানভীর ২০০৯ সালে যোগদান করেন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে। ৬৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি

কোর্সের মাধ্যমে কমিশন লাভ করেন তিনি। পরে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় পদোন্নতি পান। বিয়ে করেন ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তানভীর ও তার স্ত্রীর ফেসবুক ওয়ালে বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি এখনও সজীব। তানভীরের প্রোফাইল ছবিও তার বিয়ের ছবি।

তার ফেসবুকের কাভার ফটোতে আছে পবিত্র কুরআনের সুরা হাশরের একটি আয়াতের অনুবাদ। যেখানে লেখা আছে, ‘যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তাভাবনা করে।’

তার স্ত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টুকটুক নামে। সেখানেও দুজনের নানা রঙের রঙিন দিনগুলোর সব ছবি শোভা পাচ্ছে, যা এখন দেখে প্রতিনিয়ত দগ্ধ হবেন নববধূ। টুকটুকের প্রোফাইলেও রয়েছে দুজনের ছবি।

গত ২১ সেপ্টেম্বর টুকটুকের হাতে রিং পরানোর ছবি পোস্ট করেছেন টুকটুক। গত ৭ জানুয়ারি সমুদ্র পাড়ের কোনো হোটেলের সুইমিংপুলে তোলা দুজনের একটি ছবি পোস্ট করেছেন টুকটুক।

ওই ছবির ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘লাভ অব মাই লাইফ’। ওয়ালে রয়েছে দুজনের হাস্যোজ্জ্বল একাধিক ছবি। আজ থেকে যা স্মৃতির পাতায় স্থান পাবে।

প্রসঙ্গত, টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরু করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।

দুদিনের টানা বর্ষণে রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে এবং গাছ চাপায় ১৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন সেনা সদস্যও রয়েছেন। জাগো নিউজ