চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। এর আগের দুই নির্বাচনে তিনি পরাজিত করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। তবে গত নির্বাচনে বিএনপি থেকে কোন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় তিনি শতভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে তার পাশাপাশি এ আসন থেকে মনোনোয়ন চান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ থেকে আরো কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী।
এ তালিকায় রয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বা তার স্ত্রী শেখ সুলতানা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটির সদস্য মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবদুল্লাহ-আল হারুনের মেয়ে লুবনা হারুন। কিন্তু অন্য কাউকে প্রতিপক্ষ মানতে এমপি ফজলে করিম চৌধুরী নারাজ। তবুও তরুণ নেতৃত্বকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, তাই তারা মনোনোয়ন পেতে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম – ৬ সংসদীয় আসন হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটি। এটি চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ২৮৩ নং আসন। চট্টগ্রাম-৬ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলা নিয়ে গঠিত।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-৬ আসনটিতে বিএনপির দূর্গকে হটিয়ে আওয়ামী লীগের আগমন ঘটাতে অনেক কাঠগড় পোহাতে হয় আওয়ামী লীগকে।
জানা যায়, এবিএম ফজলে করিম ও গিয়াস উদ্দিন কাদের (গিকা) চৌধুরী সম্পর্কে চাচাত ভাই। চট্টগ্রাম-৬ রাউজান আসনে ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত তিন দফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন তারা। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে গিয়াস কাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফজলে করিমকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন। তবে ২০০১ ও ২০০৮ নির্বাচনে ফজলে করিমের কাছে হার মানতে হয় তাকে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের (সাকা) ছোট ভাই হচ্ছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে বিশেষ প্রভাব ছিলো সাকা পরিবারের। আর এজন্যই এ আসনটি থেকে কয়েক দফায় সাংসদ নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন কাদের ও তার ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের।
সেই সময় আওয়ামী লীগের পক্ষে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন খান মনোনয়ন চাইলেও মনোনোয়ন পাননি। তাই দলে ও এলাকায় শক্ত অবস্থান এতোদিন ধরে আছেন ফজলে করিম চৌধুরী।
এদিকে আওয়ামী লীগে মনোনয়ন দৌড়ে তিনবারের নির্বাচিত সাংসদ ফজলে করিমের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনোয়ন প্রত্যাশী মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক দল থেকে মনোনয়ন পেতে নিজের মাঠ গোছাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি। বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে যোগ দিচ্ছেন এলাকায়।
এদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের অভিমত, অনুযোগ ও অভিযোগ এটাই, ’’পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হওয়ায় এলাকায় দাপুটে অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। এ কারণে তার ভিতরে অহংবোধ ‘তৈরি’ হয়েছে। তার কথার উপর রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে কোনো নেতা বা কর্মীর মতামতকে মূল্যায়ন করেন না এই এমপি। তিনি আওয়ামী লীগের আর কেউ এলাকা থেকে মনোনোয়ন প্রত্যাশী হবেন এটি মানতে রাজি না। নিজেও স্বীকার করেছেন সেটি।’’
আগামী নির্বাচনে তিনি দল থেকে মনোনোয়ন প্রত্যাশী কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ফজলে করিম চৌধুরী এমপি মুঠোফোনে দাম্ভিকতার সুরে বলেন, দল থেকে কে মনোনোযন পাবে, সেটি ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর দীর্ঘ এত বছর আমি রাউজানবাসীর উন্নয়নে কাজ করে গেছি। আমি এলাকাবাসীর কাছে ওয়াদা করেছিলাম, রাউজানকে সন্ত্রাসমুক্ত করব এবং অবহেলিত রাউজানের উন্নয়ন করব। আমি আমার প্রতিটি ওয়াদা রক্ষা করেছি। বর্তমান সরকার আমলে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে এলাকা লোডশেডিংমুক্ত করেছি। বর্তমান সরকারের আমলে সব মিলিয়ে আমি দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন কাজ করেছি।
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের অন্য কেউ মনোনোয়ন প্রত্যাশী হলে বিষয়টি কিভাবে নিবেন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার এলাকায় আমি ছাড়া আর যোগ্য কে? অনেকেই অনেকবার মনোনোয়ন পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলো, কিন্তু লাভ হয়নি।’ তবে তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হবেন বলে জানান যদি তার সাথে অন্য কোনো মনোনোয়ন প্রত্যাশীর কথা এ সংবাদে যুক্ত করা না হয়। এ বিষয়টি ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘বুঝতে হবে আমি ফজলে করিম চৌধুরী। আমার সাথে একই সংবাদে অন্যজনের মন্তব্য যাবে, এটি পছন্দ না।’
কিন্তু দলীয় সূত্রে জানা যায়, কিন্তু তার এ দাপুটে ও অহংকারী মনোভাবের অবস্থান নড়বড়ে হতে শুরু করেছে গত মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন থেকে। কারণ গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে দেবাশীষ পালিতকে মনোনোয়ন দেয় দল। কিন্তু ফজলে করিম চৌধুরী সে মনোনোয়নকে চ্যালেঞ্জ করে তার পছন্দের ৪ প্রার্থীকে মেয়র প্রার্থী করে দাঁড় করিয়ে দেন। কিন্তু এমপির সব চ্যালেঞ্জকে ছুঁড়ে ফেলে এলাকার মানুষের ভালোবাসা ও দলের অন্য নেতাকর্মীর সহযোগীতায় দেবাশীষ পালিত জয়লাভ করেন। দেবাশীষ পালিত উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
দেবাশীষ পালিত জানান, মেয়র হওয়ার পর ফজলে করিমের সব ক্রোধ গিয়ে পড়ে তার পক্ষের লোকদের উপর। পরবর্তী সময়ে তার সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর, হামলা, বিভিন্ন মামলায় জেল পর্যন্ত খাটিয়েছে ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
এ অভিযোগ শোনা গেছে এলাকাবাসীর আরো অনেকের মুখ থেকে। দেবাশীষ পালিতের বিরুদ্ধে মাঠে বিদ্রোহী মীর মুনসুর আলমকে সমর্থন দেন স্থানীয় এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। কিন্তু দলের পক্ষেই রায় দেয় জনগণ এবং বিজয়ী হন দেবাশীষ।
এছাড়াও এমপির বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ আরো অনেক বেশি। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনে রাউজান মেয়রকে বক্তৃতা না দিয়ে লিখিত বক্তব্য দিতে বলেন এমপি। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে কয়েকজন নেতা সেখানে বক্তৃতা দিতে পারেন মেয়র দেবাশীষ।
জানা যায়, রাউজান ৬ আসনে প্রায় ৯০ হাজার রয়েছে হিন্দু ভোট। আর এ ভোটারদের নিজের পক্ষে টানতে পারলেই সে প্রার্থীর জয়লাভ নিশ্চিত হয়ে যায়। জানা গেছে, আগে এতো সংখ্যক হিন্দু ভোটারকে সাকা চৌধুরীর লোকেরা ভোটকেন্দ্রে যেতে দিত না। ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করত। এভাবেই জিতে যেতো সাকা ও গিকা চৌধুরী।
গত পৌরসভা নির্বাচনে এলাকার হিন্দু ভোটাররা দেবাশীষ পালিতের হয়ে কাজ করে তাকে নির্বাচনে জয়লাভ করে। পৌরসভা নির্বাচনে দেবাশীষের সাথে এমপি এমন বিরূপ আচরণ করায় এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় অনেকটাই ক্ষুব্ধ। তাই মাঠ পর্যায়ের হিসেবে নিকেশে দাপুটে ফজলে করিমের অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে বলে জানিয়েছেন রাউজান থানা আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানান, ফজলে করিম এমপির দাপুটে পৌরসভার কাজ চালানো দায় হয়ে পড়েছে। দেবাশীষ পালিতকে কাজ করতে বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি করছেন এই এমপি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
একইরকম অবস্থা সৃষ্টি হয় ইউপি নির্বাচনেও। সেখানেও প্রার্থী নিয়ে এমপির সাথে আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরোধ তৈরী হয়।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম ইউপি নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, পৌরসভা নির্বাচনের মতো ইউপিতে মনোনয়ন বোর্ডে নেই এমপিরা। এখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬৫ সদস্যের কমিটি ও নয়টি ওয়ার্ডের ১৮ জন সভাপতি-সেক্রেটারির ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই হবে। সেই প্রার্থীকে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সমর্থন করে নাম পাঠাবেন কেন্দ্রে। তাই এ নির্বাচনে এমপিরা কোনো ভূমিকা রাখতে চাইলে তা করতে হবে কৌশলে।
কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগের সাথে এম এ সালামের কথার মিল পাওয়া যায়নি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাউজান থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন খানের ভাতিজা মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী কদলপুর ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনোয়ন পান। কিন্তু ফজলে করিম চৌধুরী এমপি লিংকনকে এলাকায় কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দেননি। পুলিশ দিয়ে এলাকাছাড়া করেছিলো লিংকনকে। এমপির পছন্দের স্বতন্ত্র পদে তছলিম উদ্দিনকে দাঁড় করিয়ে তাকে জয়লাভ করান ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
এদিকে আগামী নির্বাচনে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী মনোনোয়ন প্রত্যাশী হতে পারেন বলে এলাকাসূত্রে জানা গেছে। তবে তার পরিবর্তে তার স্ত্রী শেখ সুলতানাও মনোনোয়ন চাইতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবদুল্লাহ-আল হারুনের মেয়ে লুবনা হারুন।
এ বিষয়ে ওমর ফারুকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি একজন সংগঠক। সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকে আন্দোলন। আর সেই আন্দোলনে থাকতে হয় কর্মসূচি। সংগঠন শক্তিশালী হবে যখন কর্মসূচী থাকবে। তিনি কেবলি সংগঠক হয়েই কাজ করে গেছেন। যেতে চানও। তবে শেখ হাসিনা যদি তাকে নির্বাচন করতে বলেন, অবশ্যই প্রকৃত সংগঠক হয়ে ভোটের মাঠে লড়বেন বলে জানান তিনি।
তবে লুবনা হারুন নিজের অভিমত ব্যক্ত করে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি ভাবছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছুদিনের মধ্যেই নিব বলে জানান তিনি।
তবে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাউজানের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটির সদস্য মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনোয়ন প্রত্যাশী কেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। স্কুল ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। ওয়ান ইলেভেনে রাজনীতি করার জন্য দীর্ঘ ১৯ মাস কারাভোগ করতে হয়েছে তাকে।
রাউজানের গহিরার সন্তান রোটন আরো বলেন, দীর্ঘদিন সাকা, গিকা বাহিনীর নেতৃত্ব থেকে সন্ত্রাসী ও রক্তাক্ত জনপদ থেকে রাউজানকে মুক্ত করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাউজান থেকে নৌকা প্রতীকে যাকে মনোনোয়ন দিবেন তার হয়েই তিনি কাজ করবেন। তবে শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু তরুণ নেতৃত্বকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন, তার ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে চান, তাই তিনি মনোনোয়ন প্রত্যাশী।
১৯৭৮ সালে জন্ম নেয়া এই তরুণ নেতা সরকারী তিতুমির কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পান ২০০ সালের ৪ এপ্রিল ও ২০১১ সালের ১০ জুলাই দায়িত্ব থেকে বিদায় নেন। তার বাবার নাম আফসার উদ্দিন হায়দার চৌধুরী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি কন্ট্রোলার ছিলেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার জন্য প্রতিটি আসনই গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে রাউজান চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্র্ণ আসন। আমরা চাই, এ আসনেও দলের জয় নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাই করে যোগ্য লোককে মনোনয়ন দেওয়া হোক। এজন্য দলের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে রাউজান আসন থেকে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী দৈনিক আজাদী সম্পাদক অধ্যাপক মো. খালেদ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ভাসানি ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান বিএনপি নেতা নোমানকে পরাজিত করে পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন অধ্যাপক খালেদ। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ প্রার্থী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল্লাহ আল হারুনকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। সে সময় রাঙ্গুনিয়া আসন থেকেও তিনি নির্বাচিত হলে রাউজান আসনটি ছেড়ে দেন। এ আসনে উপনির্বাচন হলে সালাউদ্দিন কাদেরের ছোট ভাই তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা ও বর্তমানে বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিনকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন বিএনপি প্রার্থী জহির উদ্দিন খান। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে সালাউদ্দিন কাদের জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতিও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে সালাউদ্দিন কাদের জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু এ আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হন। ১৯৯৬ সালের ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খোন্দাকার।