ঢাকা ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রাগন চাষে সাফল্য: ২২ লাখ টাকার ফল বিক্রির লক্ষ্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০১৭
  • ৩৩৯ বার

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষে সাফল্য পেয়েছেন আশরাফ হোসেন স্বপন। এ বছর ( মে-নভেম্বর) মাস পর্যন্ত ৭ মাসে ২২ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে তার। জমি থেকেই ঢাকার ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক লাখ টাকার ড্রাগন ফল তিনি বিক্রি করেছেন। জৈব সার ব্যবহার করায় তার জমিতে ড্রাগন ফলের সাইজ ও কালার দুটিই ভালো হচ্ছে।

ড্রাগন চাষি স্বপন উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে। সরেজমিন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে স্বপনের সাথে কথা হয়।

তিনি জানান, ২০১৪-১৫ সালের দিকে তার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ৩ হাজার ড্রাগন চারা লাগান। চারাগুলো ময়মনসিংহ থেকে ১২০ টাকা দরে ক্রয় করেন। ২ বছরে তার এই ড্রাগন বাগানের পেছনে ৮-১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ বছর থেকে ড্রাগন গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। একটি ড্রাগন গাছে ২৫-৩০টি ফল এসেছে। ফলের সাইজও ভাল। ৩টিতে এক কেজি।

স্বপন জানান, ফুল আসার ৪৫ দিনের মাথায় ড্রাগন তোলা যায়। গত ১৫ মার্চ থেকে পাকা ড্রাগন ফল বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। ঢাকার ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে ৩৫০-৪০০ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদাও বেশ রয়েছে এ ফলের।

স্বপন আশা করছেন, তার ড্রাগন বাগান থেকে মে- নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ২২ লাখ টাকার ড্রাগন ফল সংগ্রহ করবে। তিনি বলেন, তার জমিতে তিনি রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। জৈব সার ব্যবহার করে ড্রাগন চাষ করছেন। তিনি ড্রাগন ফলের পাশাপাশি ড্রাগন গাছের চারাও উৎপাদন শুরু করেছেন। একটি চারা ৫০-৫৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তার চাষ থেকে এলাকার অনেক কৃষক তার কাছ থেকে এই চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

ড্রাগন ফলড্রাগন বাগানের পাশাপাশি এর আগে স্ট্রোবেরি চাষ করেও সাফল্য পেয়েছিলেন স্বপন। ড্রাগন বাগানের তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উন্নত জাতের শরিফা চারা লাগিয়েছেন। ৩শ’ শরিফা গাছ থেকে আগামী একবছর পর তিনি ফল আশা করছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল করিমা জানান, বাংলাদেশে অপ্রচলিত একটি ফল ড্রাগন। ক্যাকটাস গোত্রের এই ফলের গাছ দেখে সবাই একে সবুজ ক্যাকটাস বলেই মনে করেন। সাধারণত মধ্য আমেরিকায় এ ফল বেশি পাওয়া যায়। ড্রাগন ফল দেখতেও খুব আকর্ষণীয়। এর স্বাদ হালকা মিষ্টি। আমেরিকাসহ এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে।

তিনি জানান, ড্রাগন ফলে ক্যালোরি খুব কম থাকায় এ ফল ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য ভালো। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, আয়রন রয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটেসহ বড় বড় চেইন শপে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি অফিসার জাহিদুল করিম আরো জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার মাটি ড্রাগন ফলের জন্য বেশ উপযোগী। স্বপনকে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ড্রাগন চাষে সাফল্য: ২২ লাখ টাকার ফল বিক্রির লক্ষ্য

আপডেট টাইম : ০৯:৩০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০১৭

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষে সাফল্য পেয়েছেন আশরাফ হোসেন স্বপন। এ বছর ( মে-নভেম্বর) মাস পর্যন্ত ৭ মাসে ২২ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে তার। জমি থেকেই ঢাকার ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক লাখ টাকার ড্রাগন ফল তিনি বিক্রি করেছেন। জৈব সার ব্যবহার করায় তার জমিতে ড্রাগন ফলের সাইজ ও কালার দুটিই ভালো হচ্ছে।

ড্রাগন চাষি স্বপন উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে। সরেজমিন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে স্বপনের সাথে কথা হয়।

তিনি জানান, ২০১৪-১৫ সালের দিকে তার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ৩ হাজার ড্রাগন চারা লাগান। চারাগুলো ময়মনসিংহ থেকে ১২০ টাকা দরে ক্রয় করেন। ২ বছরে তার এই ড্রাগন বাগানের পেছনে ৮-১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ বছর থেকে ড্রাগন গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। একটি ড্রাগন গাছে ২৫-৩০টি ফল এসেছে। ফলের সাইজও ভাল। ৩টিতে এক কেজি।

স্বপন জানান, ফুল আসার ৪৫ দিনের মাথায় ড্রাগন তোলা যায়। গত ১৫ মার্চ থেকে পাকা ড্রাগন ফল বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। ঢাকার ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে ৩৫০-৪০০ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদাও বেশ রয়েছে এ ফলের।

স্বপন আশা করছেন, তার ড্রাগন বাগান থেকে মে- নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ২২ লাখ টাকার ড্রাগন ফল সংগ্রহ করবে। তিনি বলেন, তার জমিতে তিনি রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। জৈব সার ব্যবহার করে ড্রাগন চাষ করছেন। তিনি ড্রাগন ফলের পাশাপাশি ড্রাগন গাছের চারাও উৎপাদন শুরু করেছেন। একটি চারা ৫০-৫৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তার চাষ থেকে এলাকার অনেক কৃষক তার কাছ থেকে এই চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

ড্রাগন ফলড্রাগন বাগানের পাশাপাশি এর আগে স্ট্রোবেরি চাষ করেও সাফল্য পেয়েছিলেন স্বপন। ড্রাগন বাগানের তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উন্নত জাতের শরিফা চারা লাগিয়েছেন। ৩শ’ শরিফা গাছ থেকে আগামী একবছর পর তিনি ফল আশা করছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল করিমা জানান, বাংলাদেশে অপ্রচলিত একটি ফল ড্রাগন। ক্যাকটাস গোত্রের এই ফলের গাছ দেখে সবাই একে সবুজ ক্যাকটাস বলেই মনে করেন। সাধারণত মধ্য আমেরিকায় এ ফল বেশি পাওয়া যায়। ড্রাগন ফল দেখতেও খুব আকর্ষণীয়। এর স্বাদ হালকা মিষ্টি। আমেরিকাসহ এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে।

তিনি জানান, ড্রাগন ফলে ক্যালোরি খুব কম থাকায় এ ফল ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য ভালো। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, আয়রন রয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটেসহ বড় বড় চেইন শপে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি অফিসার জাহিদুল করিম আরো জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার মাটি ড্রাগন ফলের জন্য বেশ উপযোগী। স্বপনকে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।