ঢাকা ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা স্বস্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০১৭
  • ৩২৭ বার

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি মো. গোলাম রহমান বলেছেন, ‘আমরা স্বস্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই না। সমৃদ্ধির জন্য যদি ঘুম নষ্ট হয় তাহলে সেই সমৃদ্ধির প্রয়োজন নেই।’

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউটে আজ বৃহস্পতিবার নতুন ভ্যাট আইনে ভোক্তাদের স্বার্থ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো ধরনের আর্থিক সংস্কারের হাত দেয়নি জানিয়ে গোলাম রহমান বলেন, ‘২০১২ সালে প্রথম সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। আমরা উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তি চাই। আমরা চাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যেন বৃদ্ধি না পায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দ্রব্য মূল্যে বাড়বে। জনমনে শংকা রয়েছে বাজেটের প্রভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় ‍ও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। তাই জনগণের কথা চিন্তা করে বাজেটে সংশোধনী আনা দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এনবিআরসহ সরকারের মুখে শুনেছি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট থাকবে না। আমরা অব্যাহতির তালিকাও দেখেছি। কিন্তু আমরা ওই তালিকায় বেশকিছু অসঙ্গতি দেখেছি। ওই তালিকায় এমন অনেক পণ্য রয়েছে যা নিত্যপ্রয়োজনীয় তালিকায় পড়ে না, আবার অনেক নিত্যপ্রযোজনীয় পণ্যের পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো ওই তালিকায় নেই। ওই তালিকা তাই প্রশ্নবিদ্ধ।’

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে আশংকা প্রকাশ করে গোলাম রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি অনেক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা ভ্যাট সংগ্রহ করে সরকারের কোষাগারে জমা দেয় না। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে একদিনে ওই ব্যবসায়ীরা সৎ হবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের আশংকা, সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাস্তবায়ন হলে ওই টাকা কতটুকু সরকারি কোষাগারে জমা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মানবদেহে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যে উচ্চহারে কর বেশি আরোপ হোক। তবে বর্তমান বাজেট প্রস্তাবনায় সব তামাকের সমহারে কর বাসানো হয়নি। বিদ্যুৎ ও পানির মধ্যে পণ্যের মূল্য প্রতিবছর বৃদ্ধি পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চাই দেশে আয়কর দেওয়া করদাতার সংখ্যা অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ হোক।’

ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়ে গোলাম রহমান বলেন, ‘বর্তমানে এমনিতে ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসেবে ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ৫ থেকে ৬ শতাংশ। এরপর ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। অন্যদিকে ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টর কর্তৃক কোটি কোটি টাকা লু‍টপাট হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইনে সাধারণ জনগণকে ব্যাপক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এসব বার্তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা প্রকৃত অর্থে জনগণকে সুরক্ষা দিতে চাই। জনগণের কথা বিবেচনা করে নতুন আইনে সংযোজন ও পরিবর্ধন করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে।’

সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্যাবের উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম, এনবিআরের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেনসহ এনবিআর ও ক্যাব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আমরা স্বস্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই না

আপডেট টাইম : ০৯:২১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০১৭

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি মো. গোলাম রহমান বলেছেন, ‘আমরা স্বস্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই না। সমৃদ্ধির জন্য যদি ঘুম নষ্ট হয় তাহলে সেই সমৃদ্ধির প্রয়োজন নেই।’

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউটে আজ বৃহস্পতিবার নতুন ভ্যাট আইনে ভোক্তাদের স্বার্থ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো ধরনের আর্থিক সংস্কারের হাত দেয়নি জানিয়ে গোলাম রহমান বলেন, ‘২০১২ সালে প্রথম সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। আমরা উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তি চাই। আমরা চাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যেন বৃদ্ধি না পায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দ্রব্য মূল্যে বাড়বে। জনমনে শংকা রয়েছে বাজেটের প্রভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় ‍ও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। তাই জনগণের কথা চিন্তা করে বাজেটে সংশোধনী আনা দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এনবিআরসহ সরকারের মুখে শুনেছি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট থাকবে না। আমরা অব্যাহতির তালিকাও দেখেছি। কিন্তু আমরা ওই তালিকায় বেশকিছু অসঙ্গতি দেখেছি। ওই তালিকায় এমন অনেক পণ্য রয়েছে যা নিত্যপ্রয়োজনীয় তালিকায় পড়ে না, আবার অনেক নিত্যপ্রযোজনীয় পণ্যের পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো ওই তালিকায় নেই। ওই তালিকা তাই প্রশ্নবিদ্ধ।’

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে আশংকা প্রকাশ করে গোলাম রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি অনেক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা ভ্যাট সংগ্রহ করে সরকারের কোষাগারে জমা দেয় না। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে একদিনে ওই ব্যবসায়ীরা সৎ হবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের আশংকা, সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাস্তবায়ন হলে ওই টাকা কতটুকু সরকারি কোষাগারে জমা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মানবদেহে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যে উচ্চহারে কর বেশি আরোপ হোক। তবে বর্তমান বাজেট প্রস্তাবনায় সব তামাকের সমহারে কর বাসানো হয়নি। বিদ্যুৎ ও পানির মধ্যে পণ্যের মূল্য প্রতিবছর বৃদ্ধি পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চাই দেশে আয়কর দেওয়া করদাতার সংখ্যা অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ হোক।’

ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়ে গোলাম রহমান বলেন, ‘বর্তমানে এমনিতে ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসেবে ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ৫ থেকে ৬ শতাংশ। এরপর ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। অন্যদিকে ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টর কর্তৃক কোটি কোটি টাকা লু‍টপাট হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইনে সাধারণ জনগণকে ব্যাপক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এসব বার্তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা প্রকৃত অর্থে জনগণকে সুরক্ষা দিতে চাই। জনগণের কথা বিবেচনা করে নতুন আইনে সংযোজন ও পরিবর্ধন করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে।’

সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্যাবের উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম, এনবিআরের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেনসহ এনবিআর ও ক্যাব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।