ঢাকা ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

’চলতি বছর ৩ হাজার ২২২ হেক্টর কৃষি জমি বিলীন হবে’ চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির কারণেই হাওরে বন্যা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০১৭
  • ৬৩৮ বার

চলতি বছর দেশের তিনটি নদীর ভাঙনে ৩ হাজার ২২২ হেক্টর কৃষি ও সাধারণ জমি এবং ৫৮৩ হেক্টর বসতবাড়ির জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। যমুনা, পদ্মা ও গঙ্গা নদীর ভাঙনে ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ২৫টি মসজিদ-মন্দির হারিয়ে যেতে পারে। যমুনা নদীর ভাঙ্গন কবলিত হবে ২ হাজার ৮৩২ মিটার বেড়িবাধ।

বুধবার রাজধানীতে সিরডাপ মিলনায়তনে প্রকাশিত ‘পদ্মা, গঙ্গা ও যমুনা নদীর ভাঙন পূর্বাভাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়। সিইজিআইএস রিমোট সেন্সিং ইমেজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ পূর্বাভাস তৈরি করেছে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির দেয়া পূর্বাভাসও মিলেছিল।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, হাওরের বন্যা ও বিপর্যয় নিয়ে দেশের কোনো পানি বিশেষজ্ঞ এমনকি গনমাধ্যমও সঠিক তথ্য তুলে ধরেনি। তারা শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছেন। দুর্নীতি হয়নি, এমন কথাও আমি বলছি না। তবে হাওরে বন্যা হয়েছে অতিবৃষ্টির কারণে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে স্মরণকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। সেখানে সারা বছর যে বৃষ্টি হয় তার ২০ শতাংশ হয়েছে মাত্র ৯ দিনে। ওই বৃষ্টিই হাওরে বন্যার প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, হাওরের বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ছয় মিটার। বন্যার সময় পানি বয়ে গেছে সাত মিটার ওপর দিয়ে। ফলে অসময়ের এই বৃষ্টির কারণেই ফসলহানি হয়েছে। কৃষি ও পরিবেশের চিন্তা করেই ওই বাঁধগুলোর উচ্চতা কম বা ডুবোবাঁধ তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমে বেশির ভাগ পানি বিশেষজ্ঞকে বলতে শুনেছি, হাওরে বাঁধ নির্মাণ করতে শত কোটি টাকার লুটপাট হয়েছে। অথচ বাঁধ মেরামতে মাত্র ২০ কোটি টাকা ছাড় হয়েছিল।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় হলে সারা বিশ্ব তা জানে। বন্যা হলে সরকারগুলো নড়েচড়ে বসে। এগুলোর পূর্বাভাসও পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে নদীভাঙনের পূর্বাভাস এতদিন পাওয়া যায়নি। এই ভাঙনে তেমন জীবন হানি না হলেও বিপুল জমি ও ফসলহানি হয়। এর মাধ্যমে শুধু ভাঙনের শিকার ব্যক্তিই নয় স্থানীয় সমাজ এবং জাতীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ভাঙন রোধে বাঁধ তৈরি করা খুবই ব্যয়বহুল কার্যক্রম। দেশে প্রতি মিটার বাধ তৈরিতে খরচ হয় ১ লাখ টাকা। নদীভেদে এটি আরো বাড়ে। পদ্মাসেতু এলাকায় প্রতি মিটার বাধ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর কবীর, পরিচালক এ এম আমিনুল হক, সিইজিআইএস’র নির্বাহী পরিচালক মো. ওয়াজি উল্লাহ, উপনির্বাহী পরিচালক মমিনুল হক সরকার, পরিচালক মোস্তফা আলী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

’চলতি বছর ৩ হাজার ২২২ হেক্টর কৃষি জমি বিলীন হবে’ চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির কারণেই হাওরে বন্যা

আপডেট টাইম : ০৯:৩২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০১৭

চলতি বছর দেশের তিনটি নদীর ভাঙনে ৩ হাজার ২২২ হেক্টর কৃষি ও সাধারণ জমি এবং ৫৮৩ হেক্টর বসতবাড়ির জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। যমুনা, পদ্মা ও গঙ্গা নদীর ভাঙনে ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ২৫টি মসজিদ-মন্দির হারিয়ে যেতে পারে। যমুনা নদীর ভাঙ্গন কবলিত হবে ২ হাজার ৮৩২ মিটার বেড়িবাধ।

বুধবার রাজধানীতে সিরডাপ মিলনায়তনে প্রকাশিত ‘পদ্মা, গঙ্গা ও যমুনা নদীর ভাঙন পূর্বাভাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়। সিইজিআইএস রিমোট সেন্সিং ইমেজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ পূর্বাভাস তৈরি করেছে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির দেয়া পূর্বাভাসও মিলেছিল।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, হাওরের বন্যা ও বিপর্যয় নিয়ে দেশের কোনো পানি বিশেষজ্ঞ এমনকি গনমাধ্যমও সঠিক তথ্য তুলে ধরেনি। তারা শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছেন। দুর্নীতি হয়নি, এমন কথাও আমি বলছি না। তবে হাওরে বন্যা হয়েছে অতিবৃষ্টির কারণে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে স্মরণকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। সেখানে সারা বছর যে বৃষ্টি হয় তার ২০ শতাংশ হয়েছে মাত্র ৯ দিনে। ওই বৃষ্টিই হাওরে বন্যার প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, হাওরের বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ছয় মিটার। বন্যার সময় পানি বয়ে গেছে সাত মিটার ওপর দিয়ে। ফলে অসময়ের এই বৃষ্টির কারণেই ফসলহানি হয়েছে। কৃষি ও পরিবেশের চিন্তা করেই ওই বাঁধগুলোর উচ্চতা কম বা ডুবোবাঁধ তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমে বেশির ভাগ পানি বিশেষজ্ঞকে বলতে শুনেছি, হাওরে বাঁধ নির্মাণ করতে শত কোটি টাকার লুটপাট হয়েছে। অথচ বাঁধ মেরামতে মাত্র ২০ কোটি টাকা ছাড় হয়েছিল।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় হলে সারা বিশ্ব তা জানে। বন্যা হলে সরকারগুলো নড়েচড়ে বসে। এগুলোর পূর্বাভাসও পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে নদীভাঙনের পূর্বাভাস এতদিন পাওয়া যায়নি। এই ভাঙনে তেমন জীবন হানি না হলেও বিপুল জমি ও ফসলহানি হয়। এর মাধ্যমে শুধু ভাঙনের শিকার ব্যক্তিই নয় স্থানীয় সমাজ এবং জাতীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ভাঙন রোধে বাঁধ তৈরি করা খুবই ব্যয়বহুল কার্যক্রম। দেশে প্রতি মিটার বাধ তৈরিতে খরচ হয় ১ লাখ টাকা। নদীভেদে এটি আরো বাড়ে। পদ্মাসেতু এলাকায় প্রতি মিটার বাধ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর কবীর, পরিচালক এ এম আমিনুল হক, সিইজিআইএস’র নির্বাহী পরিচালক মো. ওয়াজি উল্লাহ, উপনির্বাহী পরিচালক মমিনুল হক সরকার, পরিচালক মোস্তফা আলী।