ঢাকা ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে রাজশাহীর আম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০১৭
  • ৩৮৫ বার

ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশে গত বছর ৩০ টন আম রফতানি করা হয়েছিল রাজশাহী থেকে। এবারও সেসব দেশে যাচ্ছে রাজশাহীর আম। তবে পরিমাণটা তিনগুণেরও বেশি, প্রায় ১০০ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র থেকে এমনটা জানা গেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকর্তাদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা রাজশাহীর বিষমুক্ত আমের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, গত বছর ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা রাজশাহীর ৩০ টন আম বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। এবার ১০০ টন রফতানি যোগ্য করতে ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। দেব দুলাল ঢালী বলেন, ২০১৫ সালে চীন থেকে আমদানি করা একটি বিশেষ জাতের ব্যাগ দিয়ে এ পদ্ধতিতে রাজশাহীতে পরীক্ষামূলক আম চাষ শুরু হয়। আমের বয়স যখন ৪০ থেকে ৪৫ দিন, তখন ফ্রুট ব্যাগিং করতে হয়। এরপর থেকে আমে কোনো ধরনের কিটনাশক স্প্রে করতে হয় না। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবদুল আলীম জানান, গত বছর ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশে রফতানি হয়েছে রাজশাহীর আম। দেশগুলো হল-ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, সুইডেন, ইংল্যান্ড, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায়। তিনি বলেন, গত বছর যখন রাজশাহীর বাজারে আমের কেজি ছিল ৬০ টাকা তখন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠানোর জন্য রফতানিকারকরা ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা আম রাজশাহী থেকে কিনেছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এ বছর এখনও যেহেতু আম বেচাকেনা শুরু হয়নি, ফলে এ বছর রফতানিযোগ্য আমের দাম ঠিক কত পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এটা বলা যায়, রাজশাহীর বাজারে যে দামে আম বিক্রি হবে, তার চেয়ে রফতানিযোগ্য আমে কমপক্ষে দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ বেশি দাম পাওয়া যাবে। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ জানান, তার ছেলে ড. সরফুদ্দিন গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে বাগানে এই পদ্ধতি নিয়ে আসে। গত বছর প্রথম দিকে বাগানে বসেই রফতানির জন্য আম তিনি বিক্রি করেছেন প্রথম দিকে প্রতি কেজি ৯০ টাকা, পরে ১২০ টাকা কেজি পর্যন্ত তিনি আমের দাম পেয়েছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক বাজারের চেয়ে রফতানির আম প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। ড. সরফুদ্দিন বলেন, ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করলে রোগবালাই না থাকায় ফলন অনেক বেশি হয়। এতে আম চাষে খরচও কম হয় বলে জানান তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, রাজশাহীতে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এ মৌসুমে ২ লাখ টনের বেশি আম উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর উত্পাদন ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার টন। রাজশাহী জেলায় আমের বাগান রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার আম এসেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৮০টি গাছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৫ মে থেকে প্রথম পর্যায়ে গোপালভোগ আম নামানো শুরু হবে। তবে ইতোমধ্যেই আগাম জাতের কিছু আম বাজারে উঠতে শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে রাজশাহীর আম

আপডেট টাইম : ০১:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০১৭

ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশে গত বছর ৩০ টন আম রফতানি করা হয়েছিল রাজশাহী থেকে। এবারও সেসব দেশে যাচ্ছে রাজশাহীর আম। তবে পরিমাণটা তিনগুণেরও বেশি, প্রায় ১০০ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র থেকে এমনটা জানা গেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকর্তাদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা রাজশাহীর বিষমুক্ত আমের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, গত বছর ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা রাজশাহীর ৩০ টন আম বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। এবার ১০০ টন রফতানি যোগ্য করতে ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। দেব দুলাল ঢালী বলেন, ২০১৫ সালে চীন থেকে আমদানি করা একটি বিশেষ জাতের ব্যাগ দিয়ে এ পদ্ধতিতে রাজশাহীতে পরীক্ষামূলক আম চাষ শুরু হয়। আমের বয়স যখন ৪০ থেকে ৪৫ দিন, তখন ফ্রুট ব্যাগিং করতে হয়। এরপর থেকে আমে কোনো ধরনের কিটনাশক স্প্রে করতে হয় না। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবদুল আলীম জানান, গত বছর ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশে রফতানি হয়েছে রাজশাহীর আম। দেশগুলো হল-ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, সুইডেন, ইংল্যান্ড, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায়। তিনি বলেন, গত বছর যখন রাজশাহীর বাজারে আমের কেজি ছিল ৬০ টাকা তখন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠানোর জন্য রফতানিকারকরা ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা আম রাজশাহী থেকে কিনেছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এ বছর এখনও যেহেতু আম বেচাকেনা শুরু হয়নি, ফলে এ বছর রফতানিযোগ্য আমের দাম ঠিক কত পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এটা বলা যায়, রাজশাহীর বাজারে যে দামে আম বিক্রি হবে, তার চেয়ে রফতানিযোগ্য আমে কমপক্ষে দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ বেশি দাম পাওয়া যাবে। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ জানান, তার ছেলে ড. সরফুদ্দিন গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে বাগানে এই পদ্ধতি নিয়ে আসে। গত বছর প্রথম দিকে বাগানে বসেই রফতানির জন্য আম তিনি বিক্রি করেছেন প্রথম দিকে প্রতি কেজি ৯০ টাকা, পরে ১২০ টাকা কেজি পর্যন্ত তিনি আমের দাম পেয়েছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক বাজারের চেয়ে রফতানির আম প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। ড. সরফুদ্দিন বলেন, ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করলে রোগবালাই না থাকায় ফলন অনেক বেশি হয়। এতে আম চাষে খরচও কম হয় বলে জানান তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, রাজশাহীতে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এ মৌসুমে ২ লাখ টনের বেশি আম উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর উত্পাদন ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার টন। রাজশাহী জেলায় আমের বাগান রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার আম এসেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৮০টি গাছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৫ মে থেকে প্রথম পর্যায়ে গোপালভোগ আম নামানো শুরু হবে। তবে ইতোমধ্যেই আগাম জাতের কিছু আম বাজারে উঠতে শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।