ঢাকা ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাবনায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৮:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০১৭
  • ৪৫০ বার

পাবনায় চলতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর নিকোব্লাস্ট রোগের প্রাদূর্ভাব এড়িয়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড়ে কোন কোন এলাকায় ধানের ক্ষতি হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বলে দাবী করেছে কৃষি বিভাগ।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে পাবনায় ৪৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে পাবনা সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৪৯৫ হেক্টর, আটঘড়িয়া উপজেলায় ৭ হাজার ১৪৫ হেক্টর, ঈশ্বরদী উপজেলায় ২ হাজার ২১০ হেক্টর, চাটমোহরে ৯ হাজার ৮১৫ হেক্টর, ভাঙ্গুড়ায় ৭ হাজার ২৫ হেক্টর, ফরিদপুরে ৭ হাজার ৫২৯ হেক্টর, বেড়ায় ৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর, সাঁথিয়ায় ৬ হাজার ৮৮০ হেক্টর ও সুজানগরে ৪ হাজার ৬১৫ হেক্টরসহ মোট ৫৮ হাজার ১৫৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে।

এছাড়াও চাটমোহর, ভাগুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার চলনবিল অঞ্চলে অতিবৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতায় কিছু ধান নষ্ট হলেও মোট উৎপাদন ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় এ তিন জাতের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ পর্যন্ত কর্তন হওয়া জমিতে হেক্টর প্রতি চাল উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী হওয়ায় মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

পাবনায় মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর সেচ নির্ভর বোরো আবাদে পানি সংকট হয় নি। তাই ফলনও ভাল। মাঠে মাঠে ধান কাটা আর মাড়াইয়ে তাই ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

সরেজমিনে পাবনার আতাইকুলা, দাপুনিয়া, নাজিরপুর, গয়েশপুর দোগাছি, সুজানগর, চাটমোহর, আটঘড়িয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর পর মাঠ ছেয়ে আছে সোনালী ধান। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ধান ক্ষেতে জমেছে থাকা কাদাপানি মাড়িয়েই কৃষক ধান কেটে আঁটি বাঁধছেন। মহিষের গাড়ি বোঝাই করে সে ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। এরপর মাড়াই মেশিনে ধান,খড় আলাদা করে রোদে শুকোচ্ছেন কৃষক কৃষাণীরা।

পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের কর্মব্যস্ত কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর একদিকে ছিল কালবৈশাখী ঝড়, শিলা, অতিবৃষ্টি অন্যদিকে নিকোব্লাস্ট আর বিএলবি রোগের আতংক। তাই চলতি বছর বোরো আবাদ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন চাষীরা। তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে ধান ঘরে ওঠায় স্বস্তি মিলেছে তাদের। নাজিরপুর গ্রামের কৃষক মোঃ সালাউদ্দিন জানান, আমরা কয়েক দফা শিলাবৃষ্টি আর কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে খুবই ভয়ে ছিলাম শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলতে পারব কিনা। তবে আল্লাহর রহমে খুবই ভাল ফলন পেয়েছি আমরা।

গয়েশপুর গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলনও বেশী দামও ভাল। গত বছর মণ প্রতি দাম পেয়েছি ৫০০-৬০০ টাকা। এ বছর প্রতি মণ ১০২০ টাকা দরে আমি নিজেই বিক্রি করেছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পাবনার উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, পাবনায় এ পর্যন্ত মোট আবাদকৃত ৪৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমির শতকরা ২৭ ভাগ ধান কর্তন হয়েছে । এতে আমাদের হেক্টর প্রতি চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩.৭৪ টন সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৪.১৩ টন। কাজেই জেলায় এবার বোরো উৎপাদন নিঃসন্দেহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাবনায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন

আপডেট টাইম : ১১:২৮:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০১৭

পাবনায় চলতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর নিকোব্লাস্ট রোগের প্রাদূর্ভাব এড়িয়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড়ে কোন কোন এলাকায় ধানের ক্ষতি হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বলে দাবী করেছে কৃষি বিভাগ।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে পাবনায় ৪৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে পাবনা সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৪৯৫ হেক্টর, আটঘড়িয়া উপজেলায় ৭ হাজার ১৪৫ হেক্টর, ঈশ্বরদী উপজেলায় ২ হাজার ২১০ হেক্টর, চাটমোহরে ৯ হাজার ৮১৫ হেক্টর, ভাঙ্গুড়ায় ৭ হাজার ২৫ হেক্টর, ফরিদপুরে ৭ হাজার ৫২৯ হেক্টর, বেড়ায় ৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর, সাঁথিয়ায় ৬ হাজার ৮৮০ হেক্টর ও সুজানগরে ৪ হাজার ৬১৫ হেক্টরসহ মোট ৫৮ হাজার ১৫৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে।

এছাড়াও চাটমোহর, ভাগুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার চলনবিল অঞ্চলে অতিবৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতায় কিছু ধান নষ্ট হলেও মোট উৎপাদন ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় এ তিন জাতের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ পর্যন্ত কর্তন হওয়া জমিতে হেক্টর প্রতি চাল উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী হওয়ায় মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

পাবনায় মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর সেচ নির্ভর বোরো আবাদে পানি সংকট হয় নি। তাই ফলনও ভাল। মাঠে মাঠে ধান কাটা আর মাড়াইয়ে তাই ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

সরেজমিনে পাবনার আতাইকুলা, দাপুনিয়া, নাজিরপুর, গয়েশপুর দোগাছি, সুজানগর, চাটমোহর, আটঘড়িয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর পর মাঠ ছেয়ে আছে সোনালী ধান। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ধান ক্ষেতে জমেছে থাকা কাদাপানি মাড়িয়েই কৃষক ধান কেটে আঁটি বাঁধছেন। মহিষের গাড়ি বোঝাই করে সে ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। এরপর মাড়াই মেশিনে ধান,খড় আলাদা করে রোদে শুকোচ্ছেন কৃষক কৃষাণীরা।

পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের কর্মব্যস্ত কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর একদিকে ছিল কালবৈশাখী ঝড়, শিলা, অতিবৃষ্টি অন্যদিকে নিকোব্লাস্ট আর বিএলবি রোগের আতংক। তাই চলতি বছর বোরো আবাদ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন চাষীরা। তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে ধান ঘরে ওঠায় স্বস্তি মিলেছে তাদের। নাজিরপুর গ্রামের কৃষক মোঃ সালাউদ্দিন জানান, আমরা কয়েক দফা শিলাবৃষ্টি আর কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে খুবই ভয়ে ছিলাম শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলতে পারব কিনা। তবে আল্লাহর রহমে খুবই ভাল ফলন পেয়েছি আমরা।

গয়েশপুর গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলনও বেশী দামও ভাল। গত বছর মণ প্রতি দাম পেয়েছি ৫০০-৬০০ টাকা। এ বছর প্রতি মণ ১০২০ টাকা দরে আমি নিজেই বিক্রি করেছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পাবনার উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, পাবনায় এ পর্যন্ত মোট আবাদকৃত ৪৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমির শতকরা ২৭ ভাগ ধান কর্তন হয়েছে । এতে আমাদের হেক্টর প্রতি চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩.৭৪ টন সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৪.১৩ টন। কাজেই জেলায় এবার বোরো উৎপাদন নিঃসন্দেহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে।