ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবেশ বান্ধব উচ্চফলনশীল জাতের ভুট্টা চাষে কৃষক লাভবান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩৪৬ বার

মনিরামপুরে ধান-পাট চাষে অব্যাহত লোকসানের কারণে কৃষকরা এবার ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। তুলনামূলক কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তারা এ ফসলের আবাদ করছেন। এছাড়া সেচ-সার কম লাগে এবং বাতাস থেকে অধিক কার্বন শোষণ করে বলে ভুট্টার চাষ পরিবেশের জন্যও বেশ উপযোগী। উপজেলা কৃষি অফিসের দাবি, কৃষকের স্বার্থ ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে ভুট্টা চাষে তাদের উৎসাহিত ও সাহায্য-সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মণিরামপুরে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলার দেবীদাসপুর, বাকোশপোল, পাতন, জুড়ানপুর, সাহাপুরসহ অনেক এলাকায় এখন ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। পাতন গ্রামের ভুট্টা চাষী আসাদুল বলেন, আমি এবার দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছি ৬৫ মণ। ৭শ টাকা মণ দরে ৪৫ হাজার ৫শ টাকা বিক্রি করেছি। দেড় বিঘা জমিতে আমার খরচ বাদে লাভ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। বাকোশপোল গ্রামের কৃষক প্রতিনিধি আব্দুল বারী জানান, বছর দুই আগেও এ অঞ্চলের কৃষকরা মোচা থেকে ভুট্টা হাত দিয়ে ছাড়াতে বেশ সমস্যায় ছিল। কিন্তু আমরা সবাই মিলে হলার মেশিন কিনে ভুট্টা ছাড়াতে পারায় এখন সে সমস্যা কেটে গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, চাষাবাদে এখন আমাদের পরিবেশের কথা চিন্তা করতে হবে পাশাপাশি কৃষকের লাভের বিষয়ও দেখতে হবে। তিনি বলেন, বোরো আবাদে এক কেজি ধান উৎপাদন করতে ৩ হাজার ৩’শ লিটার পানি লাগে। এতে আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর বিরাট চাপ পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানিতেও লবনাক্ততা চলে আসবে। এ জন্যে আমাদের নতুন নতুন পরিবেশবান্ধব ফসলের আবাদ করতে হবে। যাতে সেচ কম লাগে এবং কৃষক কম খরচে অধিক লাভবান হতে পারেন। তিনি কৃষকদের পরিবেশ বান্ধব ভুট্টা চাষের পরামর্শ দেন। কারণ ভুট্টা গাছ বাতাস থেকে অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং এতে কম সেচ লাগে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, মণিরামপুরে উচ্চফলনশীল সুপার সাইন, প্যাসেফিক জাতের ভুট্টার চাষ হয়েছে। এর ফলনও ভাল। রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং অন্যান্য খরচও কম। এ জন্যে এ ফসল চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পরিবেশ বান্ধব উচ্চফলনশীল জাতের ভুট্টা চাষে কৃষক লাভবান

আপডেট টাইম : ১১:৩৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭

মনিরামপুরে ধান-পাট চাষে অব্যাহত লোকসানের কারণে কৃষকরা এবার ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। তুলনামূলক কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তারা এ ফসলের আবাদ করছেন। এছাড়া সেচ-সার কম লাগে এবং বাতাস থেকে অধিক কার্বন শোষণ করে বলে ভুট্টার চাষ পরিবেশের জন্যও বেশ উপযোগী। উপজেলা কৃষি অফিসের দাবি, কৃষকের স্বার্থ ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে ভুট্টা চাষে তাদের উৎসাহিত ও সাহায্য-সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মণিরামপুরে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলার দেবীদাসপুর, বাকোশপোল, পাতন, জুড়ানপুর, সাহাপুরসহ অনেক এলাকায় এখন ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। পাতন গ্রামের ভুট্টা চাষী আসাদুল বলেন, আমি এবার দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছি ৬৫ মণ। ৭শ টাকা মণ দরে ৪৫ হাজার ৫শ টাকা বিক্রি করেছি। দেড় বিঘা জমিতে আমার খরচ বাদে লাভ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। বাকোশপোল গ্রামের কৃষক প্রতিনিধি আব্দুল বারী জানান, বছর দুই আগেও এ অঞ্চলের কৃষকরা মোচা থেকে ভুট্টা হাত দিয়ে ছাড়াতে বেশ সমস্যায় ছিল। কিন্তু আমরা সবাই মিলে হলার মেশিন কিনে ভুট্টা ছাড়াতে পারায় এখন সে সমস্যা কেটে গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, চাষাবাদে এখন আমাদের পরিবেশের কথা চিন্তা করতে হবে পাশাপাশি কৃষকের লাভের বিষয়ও দেখতে হবে। তিনি বলেন, বোরো আবাদে এক কেজি ধান উৎপাদন করতে ৩ হাজার ৩’শ লিটার পানি লাগে। এতে আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর বিরাট চাপ পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানিতেও লবনাক্ততা চলে আসবে। এ জন্যে আমাদের নতুন নতুন পরিবেশবান্ধব ফসলের আবাদ করতে হবে। যাতে সেচ কম লাগে এবং কৃষক কম খরচে অধিক লাভবান হতে পারেন। তিনি কৃষকদের পরিবেশ বান্ধব ভুট্টা চাষের পরামর্শ দেন। কারণ ভুট্টা গাছ বাতাস থেকে অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং এতে কম সেচ লাগে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, মণিরামপুরে উচ্চফলনশীল সুপার সাইন, প্যাসেফিক জাতের ভুট্টার চাষ হয়েছে। এর ফলনও ভাল। রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং অন্যান্য খরচও কম। এ জন্যে এ ফসল চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।